গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৫৯ রানে হারের পরেই টলোমলো হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্বপ্ন। গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর আরও জটিল হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের সুপার এইটে যাওয়ার হিসেবনিকেশ। আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে কাজটা অনেক কঠিন জানার পরও লড়াকু মনোভাব নিয়েই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। দুর্দান্ত ব্যাটিং করে বাংলাদেশ শিবিরে আশার সঞ্চারও করেছিলেন সাকিব-তামিম-মুশফিকরা।
কিন্তু শেষরক্ষা হলো না। বোলিং ব্যর্থতায় আট উইকেটের হার নিয়েই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হলো বাংলাদেশকে। আর আট উইকেটের এই জয় দিয়ে সুপার এইটে চলে গেল পাকিস্তান। জয়ের জন্য ১৭৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আট বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় হাফিজ বাহিনী।
বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ১৭৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ঝড়ো সূচনা করেছিল পাকিস্তান। উদ্বোধনী জুটিতেই ১২৪ রানের জুটি গড়ে পাকিস্তানকে ভালো ভিত্তি গড়ে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ হাফিজ ও ইমরান নাজির। ১৪তম ওভারে এই দুইজনকেই সাজঘরে পাঠিয়েছিলেন আবুল হাসান। কিন্তু এরপর আর কোন সফলতার দেখা পায়নি বাংলাদেশী বোলাররা। বাকি কাজটা নির্বিঘ্নেই সেরে ফেলেছেন নাসির জামশেদ ও কামরান আকমল। ৩৬ বলে ৭২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন ইমরান নাজির। পাকিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ হাফিজের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৫ রান। তবে এক রানে নাজিরের ক্যাচটি আবুল হোসেন না ফেললে হয়তো ফল একটু অন্য রকম হতে পারত।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পরপর ছয়টি ম্যাচে হারল মুসফিক বাহিনী। আর পাল্লেকেলেতে এত রানের তাড়া করে জয়টাও আজই প্রথম।
সুপার এইটে যাওয়ার টিকিট পেতে হলে আজকের ম্যাচে জয়ের কোন বিকল্প ছিল না মুশফিক বাহিনীর। কিন্তু পারলো না টাইগার রা। বাঁচা-মরার এই লড়াইয়ে দারুণভাবে জ্বলে উঠে সাকিব আল হাসানের ব্যাট। সাকিব আজ খেলেছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁর ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। ৫৩ বলে ৮৪ রানের চমত্কার এই ইনিংসটি খেলার পথে ১১টি চার ও দুইটি ছয় মেরেছেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। সাকিবের ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
পাল্লেকেল্লে স্টেডিয়ামে শুরুতেই টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ঝড়ো ব্যাটিং করে প্রথম তিন ওভারেই ৩০ রান করেছিলেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ আশরাফুল ও তামিম ইকবাল। চতুর্থ ওভারে সোহেল তানভিরের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন আশরাফুল। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১৪ রান। এরপরেও রানের চাকা বেশ চমত্কারভাবে ঘুরিয়ে যাচ্ছিলেন তামিম ও সাকিব আল হাসান। পরবর্তী তিন ওভারে তারা যোগ করেছিলেন আরও ৩০ রান। কিন্তু ষষ্ঠ ওভারে দুর্ভাগ্যবশত রান আউটের ফাঁদে পড়ে বিদায় নিতে হয় তামিম ইকবালকে। ১২ বলে ২৪ রান করে ফিরেছেন তামিম। তৃতীয় উইকেটে ৬৮ রানের জুটি গড়ে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন সাকিব ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ১৫তম ওভারে এই জুটি ভেঙ্গে পাকিস্তান শিবিরে স্বস্তি ফিরিয়েছেন ইয়াসির আরাফাত। ২৫ রান করে ফিরে গেছেন মুশফিক। পরের ওভারে মাহমুদুল্লাহও ফিরেছেন শহীদ আফ্রিদির শিকারে পরিণত হয়ে। পঞ্চম উইকেটে নাসির হোসেনকে সঙ্গী করে স্কোরবোর্ডে আরও ৩৭ রান যোগ করেন সাকিব। ৫৪ বলে ৮৪ রানের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসটি খেলে শেষ ওভারে আউট হয়েছেন এই অলরাউন্ডার।
Leave a Reply