বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৭

হযরত ইউসুফ (আঃ) এর জীবনী

হযরত ইউসুফ (আঃ) এর জীবনী

আজ শুক্রবার পবিত্র জুমাবার আজকের বিষয়হযরত ইউসুফ (আঃ) এর জীবনী’ শীর্ষবিন্দু পাঠকদের জন্য এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন ইমাম মাওলানা নুরুর রহমান ‘ইসলাম থেকে’, বিভাগ প্রধান, শীর্ষবিন্দু নিউজ

হযরত ইউসুফ (আঃ) (ইংরেজি: Joseph অথবা Yosef, হিব্রু: יוֹסֵף, আধুনিক Yosef তিবেরিয়ান Yôsēp̄; আরবি: يوسف, Yusuf) ইহুদি, খ্রিস্ট, এবং ইসলাম ধর্মে স্বীকৃত একজন পয়গম্বর। কোরআন এবং হিব্রু বাইবেলের বর্ণনা অণুসারে, তিনি হযরত ইয়াকুব (আঃ) এর বারো ছেলের ১১তম ছেলে। তিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতে জানতেন। ইউসুফ নামটি মুসলিম জাতি এবং মধ্যপ্রাচ্যর মধ্যে সাধারণ নামগুলোর একটি।

হযরত ইউসুফ (আঃ) পিতার নাম হযরত ইয়াকুব (আঃ) আর মাতার নাম রাহীল। হিব্রু বাইবেল এবং কোরআনের বিভিন্ন স্থানে ইউসুফ (আঃ) নাম উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু শুধু কোরআনের সূরা ইউসুফে তার ঘটনা সম্পূর্ণ ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ইউসুফের ঈর্শান্বিত ভাইরা তাকে একটি কাফেলার দলের কাছে কম মূল্যে বিক্রি করে দেয়, পরবর্তিতে তিনি মিশরের বাদশাহর পরে দ্বিতীয় হ্মমতাশালী ব্যক্তি হন।

পরিবার
ইয়াকুরের বারপুত্রের মধ্যে প্রথম দশ জন জ্যেষ্টপুত্র, তার প্রথমা স্ত্রী “লাইয়্যা বিনতে লাইয়্যানের” গর্ভে জন্মলাভ করে। তাঁর মৃত্যুর পর ইয়াকুব “লাইয়্যার” ভাগিনী “রাহীলকে” বিবাহ করেন। রাহীলের গর্ভে দু-পুত্র ইউসুফ এবং বেনজামিন জন্মলাভ করে। তার ছোট ছেলের জন্মের পরে তিনিও মৃত্যুমুখে পতিত হন। হিব্রু বাইবেল অণুসারে তার বার ছেলের নাম হলোঃ রেউবেন বা ইয়াহুদা, সিমোন, লেভি, জুদাহ, ডান, নাফতালি, গাড, আশের, ইসশাচার, জেবুলুন, ইউসুফ এবং বেনজামিন বা বেনইয়ামিন।

ইউসুফের স্বপ্ন
ইউসুফ ছোট সময় একদিন স্বপ্নে দেখলেন যে, একাদশ নক্ষত্র, সূর্য ও চন্দ্র তার প্রতি অবনত অবস্থায় রয়েছে। পরের দিন ইউসুফ তার পিতাকে তার এই স্বপ্নের কথা বললেন। তার স্বপ্নের বাখ্যা হচ্ছে যে, এগারোটি নহ্মত্রের অর্থ হচ্ছে ইউসুফের এগারো ভাই, সূর্যের অর্থ পিতা এবং চন্দ্রের অর্থ মাতা। তিনি স্বপ্নের বর্ণনা শুনে বুঝতে পারলেন এবং ইউসুফের ভাইদের কাছে তার এই স্বপ্ন বৃত্তান্ত না করার জন্য ইউসুফকে বললেন। কারণ, স্বপ্নের তাৎপর্য অণুধাবন করে ভাইরা ইউসুফের প্রতি ঈর্শান্বিত হয়ে তার ক্ষতি করতে পারে।

বৈমাত্রেয় ভাইরা
ইয়াকুব ছোট হিসেবে ইউসুফ ও বেনইয়ামিনকে খুব স্নেহ করতেন, এটা বৈমাত্রেয় ভাইদের ভালো লাগতো না। তারা আস্তে আস্তে ইউসুফের প্রতি ইর্ষাপরায়ণ হয়ে ওঠে। তারা নিজেদের মধ্যে বলতে লাগলোঃ আমাদের তুলনায় আমাদের পিতা ইউসুফ ও তার অণুজ বেনিয়ামিনকে অধিক ভালবাসেন। অথচ আমরা দশ জন তাদের থেকে বড় হওয়ার কারণে বাড়ির সব কাজকর্ম করতে সহ্মম। তাই আমাদের পিতার উচিত, এ বিষয় অণুধাবন করা এবং আমাদেরকে অধিক মহব্বত করা। কিন্তু তিনি প্রকাশ্যে অবিচার করে যাচ্ছেন। তাই তোমরা হয় ইউসুফকে হত্যা কর, না হয় এমন দূরদেশে নির্বাসিত কর, যেখান থেকে সে আর ফিরে আসতে না পারে। কেউ মত প্রকাশ করল যে, ইউসুফকে হত্যা করা হোক। কেউ বললঃ তাকে কোন অন্ধকূপের গভীরে নিহ্মেপ করা হোক – যাতে মাঝখান থেকে এ কন্টক দূর হয়ে যায় এবং তখন আমাদের পিতার সমগ্র মনোযোগ আমাদের প্রতি হয়ে যাবে। হত্যা বা কূপে নিহ্মেপ করার পরে পরবর্তীকালে মাফ চেয়ে আমরা ভালো লোক হয়ে যাবে।

ইউসুফকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে তার বৈমাত্রেয় ভাইদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। একজন বললো, ইউসুফকে হত্যা করো না। যদি কিছু করতেই হয় তবে, কূপের গভীরে এমন জায়গায় নিহ্মেপ কর, যেখানে সে জীবিত থাকে এবং পথিক যখন কূপে আসে, তখন তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এভাবে একদিকে তোমাদের উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়ে যাবে এবং অপরদিকে তকে নিয়ে তোমাদেরকে কোন দূরদেশে যেতে হবে না কোন কাফেলা আসবে, তারা স্বয়ং তাকে সাথে করে দূর-দূরান্তে পৌঁছে দেবে। এ অভিমত প্রকাশকারী ছিল তাদের বড় ভাই “ইয়াহুদা” কিংবা রুবীল (রেউবেন)। একদিন ইউসুফের ভাইরা তার পিতা ইয়াকুব বললঃ আপনি ইউসুফ সম্পর্কে আমাদের প্রতি আস্তা রাখেন না, অথচ আমরা তার পুরোপুরি হিতাকাঙ্খী। আগামীকাল আপনি তাকে আমাদের সাথে ভ্রমণে পাঠিয়ে দিন, যাতে সে-ও স্বাধীনভাবে পানাহার ও খেলাধুলা করতে পারে। আমরা সবাই তার পুরোপুরি দেখাশোনা করব। তখন ইয়াকুব বললেনঃ তাকে প্রেরণ করা আমি দু’কারণে পছন্দ করি না।

প্রথমতঃ এ নয়নের মণি, দ্বিতীয়তঃ তোমাদের অসাবধানতার কারণে তাকে বাঘে খেয়ে ফেলতে পারে। ভাইরা পিতার কথা শুনে বললঃ আপনার এর জন্য ভয় পাবেন না। আমাদের দশ জনের শক্তিশালী দল তার দেখাশোনা করবে। আমরা সবাই থাকা সত্ত্বেও যদি বাঘেই তাকে খেয়ে ফেলে, তাহলে আমাদের শক্তিশালী দল নিষ্ফল হয়ে যাবে। তাহলে আমাদের দ্বারা কোন কাজের আশা করা যেতে পারে? তিনি একথা প্রকাশ করলেন না যে, আমি স্বয়ং তোমাদের পহ্ম থেকেই আশাঙ্কা করি। তিনি অণুমতি দিয়ে দিলেন। কিন্তু ভাইদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়ে নিলেন, যাতে ইউসুফের কোনরূপ কষ্ট না হয়। ভাইরা পিতার সামনে ইউসুফকে কাঁধে তুলে নিল এবং পালাক্রমে সবাই উঠাতে লাগল। কিছুদূর পর্যন্ত ইয়াকুবও তাদেরকে বিদায় দেয়ার জন্য গেলেন। তারা যখন ইয়াকু্বের দৃষ্টির আড়ালে চলে গেল, তখন ইউসুফ যে ভাইয়ের কাঁধে ছিলেন, সে তাকে মাটিতে ফেলে দিল। এক পর্যায়ে তার ভাইরা পূর্ব পরিকল্পনা অণুযায়ী ইউসুফকে কূপের গভীরে নিহ্মেপ করতে সবাই ঐকমত্যে পৌঁছল।

যখন ওরা তাঁকে কূপে নিহ্মেপ করতে লাগল, তখন তিনি কূপের প্রচীর জড়িয়ে ধরলেন। ভাইয়েরা তার জামা খুলে তার দু’হাত বেঁধে দিল। তখন ইউসুফ পুনরায় তাদের কাছে দয়া ভিহ্মা চাইলেন। তখন তারা তাকে বললঃ যে এগারটি নক্ষত্র তোমার সামনে অবনত দেখেছ, তাদেরকে ডাক। তারাই তোমার সাহায্য করবে। অতঃপর একটি বালতিতে রেখে তাকে কূপে নামাতে লাগলো। মাঝপথে যেতেই উপর থেকে রশি কেটে দিল। পানিতে পড়ার কারণে তিনি কোন রূপ আঘাত পেলোনা। তিনি কূপের ভিতর নিকটেই একখন্ড প্রস্তর দেখলেন। তিনি তার উপর গিয়ে বসলেন। ইউসুফ তিন দিন পর্যন্ত কূপে অবস্থান করলেন। তার ভাই ইয়াহুদা প্রত্যহ গোপনে তাঁর জন্য কিছু খাদ্য আনত এবং বালতির সাহায্যে তাঁর কাছে পৌঁছে দিত।

সন্ধ্যাবেলায় ইউসুফের ভাইরা কাদঁতে কাদঁতে পিতার নিকট গেল। ইয়াকুব জিজ্ঞেস করলেনঃ ব্যাপার কি? তোমাদের ছাগলপালের উপর কেউ আক্রমণ করেনি তো? ইউসুফ কোথায়? তখন ভাইয়েরা বললঃ আমরা দৌড় প্রতিযোগিতা খেলছিলাম এবং ইউসুফকে আসবারপত্রের কাছে রেখে গিয়েছিলাম। ইতিমধ্যে বাঘ এসে ইউসুফকে খেয়ে ফেলেছে। আমরা সত্য বলছি কিন্তু আপনি তো আমাদের কথা বিশ্বাস করবেন না। ইউসুফের ভাইরা তার জামায় কৃত্রিম রক্ত লাগিয়ে এনেছিল, যাতে পিতার মনে বিশ্বাস জন্মাতে পারে যে, বাঘই তাকে খেয়ে ফেলেছে। কিন্তু তাদের মিথ্যা ফাঁস করে দেয়ার জন্য তাদেরকে একটি জরুরী বিষয় ভুলিয়ে দিয়েছিল। তারা যদি রক্ত লাগানোর সাথে সাথে জামাটিও ছিন্ন-বিছিন্ন করে দিত, তবে ইউসুফকে বাঘে খাওয়ার কথাটা বিশ্বাসযোগ্য হতে পারত। এভাবে ইয়াকুবের কাছে তাদের জালিয়াতি ফাঁস হয়ে গেল। তিনি বললেনঃ ইউসুফকে বাঘে খায়নি; ববং তোমরা মিথ্যা কথা বলছো।

কাফেলা
এ কাফেলা সিরিয়া থেকে মিশর যাচ্ছিল। তারা পানির সংগ্রহ করার জন্য কূপে গেলেন। কাফেলার নাম ছিল “মালেক ইবনে দো’বর”। তিনি এই কূপে পৌঁছলেন এবং বালতি নিহ্মেপ করলেন। ইউসুফ তখন বালতির রশি শক্ত করে ধরলেন। পানির পরিবর্তে বালতির সাথে ইউসুফ উঠে আসলেন। কাফেলার লোকের তাঁকে বিক্রয় করার সিদ্ধান্ত করলেন। কাফেলার লোকের তাঁকে মিশর নিয়ে যাওয়ার পর বিক্রয়ের কথা ঘোষণা করতেই ক্রেতারা প্রতিযোগিতামূলকভাবে দাম বলতে লাগল। শেষ পর্যন্ত ইউসুফের ওজনের সমান স্বর্ণ, সমপরিমাণ মৃগণাভি এবং সমপরিমাণ রেশমী বস্ত্র দাম সাব্যস্ত হয়ে গেল। আবার কোথাও বলা হয়েছে, ইউসুফকে তার ভাইরা ইসমাঈলীদের এক কাফেলার কাছে ২০ রৌপ্য মুদ্রার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয় এবং তাকে তারা মিশরে নিয়ে যায়। যে ব্যক্তি ইউসুফকে ক্রয় করেছিলেন, তিনি ছিলেন মিশরের অর্থমন্ত্রী অথবা ফেরাউনের পাহারাদার। তখন মিশরের ফেরাউনের ছিলেন আমালেকা জাতির জনৈক ব্যক্তি “রাইয়ান ইবনে ওসায়দ”। তিনি পরবর্তীকালে ইউসুফের ধর্ম গ্রহণ করেন। ক্রেতা আযীযে মিশরের (কিতফীর) স্ত্রীর নাম ছিল “রাঈল” কিংবা “যুলায়খা”। আযীযে-মিশর তার স্ত্রীকে নির্দেশ দিলেনঃ ইউসুফকে বসবাসের ভালো জায়গা দাও-ক্রীতদাসের মত রেখো না এবং তার প্রয়োজনাদির সুবন্দোবস্ত কর।

যৌবন
ইউসুফ যখন পূর্ণ শক্তি ও যৌবনে পদার্পণ করলেন, তখন প্রজ্ঞা ও বুৎপত্তি হল। তখন ইউসুফ আযীযে-মিশরের বাসায় থাকতো। ইউসুফের আকর্ষণীয় চেহারা এবং তার নম্র আচরণ ক্রমেই যুলায়খা মুগ্ধ হয়ে উঠতে লাগলো। যুলায়খা ইউসুফের প্রকৃতি প্রেমাসক্ত হয়ে পড়ল এবং তাঁর সাথে কুবাসনা চরিতার্থ করার জন্যে তাঁকে ফুসলাতে লাগল। একদিন সে এক কামরায় আটক করে তার মনের ইচ্ছা ব্যক্ত করলেন। কিন্তু ইউসুফ দৃঢ়তার সাথে তা প্রত্যাখ্যান করে। ইউসুফ যখন বাইরে যাওয়ার জন্য দরজার দিকে গেলেন তখন যুলায়খা তাঁর জামা ধরে বাইরে যেতে বাধা দিল। ফলে তার জামা পেছন দিক থেকে ছিড়ে গেল। ইউসুফ দরজার বাইরে চলে গেলেন এবং তার পিছনে যুলায়খাও গেল। উভয় দরজার বাইরে এসে আযীযে-মিশরের সামনে দেখতে পেল।

তার স্ত্রী চমকে উঠল এবং ইউসুফ কিছু বলার আগেই যুলায়খা ইউসুফের প্রতি দোষ আরোপ করলো যে, ইউসুফ বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে তাই তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হোক বা অন্য কোন কঠিন শাস্তি দেয়া হোক। ইউসুফ নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বললেন, যুলায়খা মিথ্যা বলছে, সেই অনেক দিন যাবত আমার সাথে কুবাসনা চরিতার্থ করার জন্যে আমাকে ফুসলাতে ছিল। কিন্তু আমি কখনই তাকে প্রশ্রয় দেইনি। আযীযে-মিশরের পহ্মে কে সত্য বলছে তা বুঝা কঠিন হয়ে পড়ল। ইউসুফের ছেড়া জামা দেখ সে বলল, যদি ইউসুফের জামা পিছনের দিকে ছেড়ে থাকে তাহলে সে নিশ্চয়ই পালাবার চেষ্টা করেছে। তাহলে ইউসুফ সত্য বলছে আর তুমি মিথ্যা বলছো। আর যদি ইউসুফের জামা সামনের দিকে ছেড়ে থাকে তাহলে ইউসুফ মিথ্যা বলছে আর তুমি সত্য বলছো। যখন দেখল যে, ইউসুফের জামা পিছনের দিকই ছেড়া, সে তখন নিশ্চিত হয় যে, যুলায়খা মিথ্যা বলছে।

আযীযে-মিশরের ইউসুফকে এই ঘটনা কাউকে না বলার জন্যে ইউসুফকে অণুরোধ করলেন। কিন্তু ঘটনাটি সবাই জেনে গেল। সাধারণ মানুষ যুলায়খাকেই এ ব্যাপারে অপরাধী মনে করতে থাকলো এবং লোকমুখে যুলায়খার সমালোচনা নগরব্যাপী ছড়িয়ে পড়লো। যুলায়খা যখন মিসরের নারীদের সমালোচনা শুনলো তখন সে তাদেরকে এক ভোজসভার জন্য আমন্ত্রণ করলো। যখন তার সেখানে উপস্থিত হল, তাদের সামনে বিভিন্ন প্রকার খাদ্য ও ফল উপস্থিত করা হল। ফল কাটার জন্য প্রত্যেকের কাছে একটি চুরিও ছিল। মহিলারা যখন চুরি দিয়ে ফল কেটে খাচ্ছিলেন তখন ইউসুফকে তাদের সামনে উপস্থিত করা হল। ইউসুফের সৌন্দর্য দেখে নিজেদের অজান্তেই সবাই ফলের পরিবর্তে নিজেদের হাত কেটে ফেলল। তখন যুলায়খা তাদেরকে বলল, দেখ এই সে যার জন্য তোমরা আমার সমালোচনা করেছ। কাজেই আশা করি এরপর থেকে আর আমার নিন্দা ও সমালোচনা করা হবে না। সে এটাও বলল যে, ইউসুফ যেহেতু আমার কথা অবমাননা করেছে এজন্য তাকে অবশ্যই কারাভোগ করতে হবে। যুলায়খার প্ররোচনায় আযীযে-মিশরের তাকে কারাগারে পাঠালেন।

কারাগার
ইউসুফ যখন কারাগারে প্রবেশ করলেন তখন তার সাথে আরও দু’জন কয়েদিও কারাগারে প্রবেশ করল। তাদের একজন বাদশাহকে মদ্যপান করাত এবং অপরজন বাবুর্চি ছিল। তারা উভয়েই বাদশাহর খাদ্যে বিষ মিশ্রিত করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। একদিন তারা বললঃ আমরা আপনার কাছে আমাদের স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে চাই। তাদের একজন যে বাদশাহকে মদ্যপান করাত সে বললঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আঙ্গুর থেকে শরাব বের করছি। এবং দ্বিতীয় জন যে বাদশাহর বাবুর্চি ছিল সে বললঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমার মাথায় রুটিভর্তি একটি ঝুড়ি রয়েছে। তা থেকে পাখিরা ঠুকরে ঠুকরে আহার করছে। ইউসুফ তাদের স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিলেন যে, তোমাদের একজন মুক্তি পাবে এবং চাকুরীতে পুনর্বহাল হবে। অপর জন অপরাধ প্রমাণিত হবে এবং তাকে শূলে চড়ানো হবে। পাখিরা তার মাথার মগজ ঠুকরে খাবে।

যে ব্যক্তি মুক্তি পাবে বলে ইউসুফের ধারণা ছিল তাকে বললেনঃ যখন তুমি মুক্তি পাবে এবং বাদশাহর চাকুরীতে পুনর্বহাল হবে, তখন বাদশাহর কাছে আমার বিষয়ে আলোচনা করো। কিন্তু কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ঐ ব্যক্তি ইউসুফের কথা ভুলে গেল৷ ফলে ইউসুফকে সাত বছর কারাগারে থাকতে হলো৷

ইউসুফের মুক্তি
একদিন বাদশাহ বললো, আমি সাতটি মোটাতাজা গাভী দেখলাম। এগুলোকেই অন্য সাতটি শীর্ণ গাভী খেয়ে যাচ্ছে। এবং আরও দেখলাম সাতটি গমের সবুজ শীষ ও সাতটি শুষ্ক শীষ। এ স্বপ্নের ব্যাখ্যার জন্য রাজ্যের জ্ঞানী ব্যাখ্যাতা ও অতীন্দ্রিয়-বাদীদেরকে একত্রিত করে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করলেন। কিন্তু কেউ স্বপ্নটির ব্যাখ্যা দিতে পারলো না। তাই সবাই উত্তর দিল, এটা কল্পনাপ্রসূত স্বপ্ন। আমরা এরূপ স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানি না। সঠিক স্বপ্ন হলে ব্যাখ্যা দিতে পারতাম।

তখন মুক্তিপ্রাপ্ত সেই কয়েদির ইউসুফের কথা মনে পড়ে গেল। সে অগ্রসর হয়ে বললঃ আমি এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলতে পারব। তবে আমাকে কারাগার বদ্ধ ইউসুফের কাছে যেতে হবে। সে এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতে পারবে। বাদশাহ তাকে কারাগারে তাঁর সাথে সাহ্মাতের অণুমতি দিলেন। সে ব্যক্তি কারাগারে গিয়ে ইউসুফের কাছে বাদশাহর স্বপ্নের ব্যাখ্যা করার জন্য অণুরোধ করলো। ইউসুফ বললঃ সাত বছর ভাল ফলন হবে, এরপর সাত বছর দুর্ভিহ্ম হবে। ইউসুফ আরও বললেন, দুর্ভিহ্মের বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলে এক বছর খুব বৃষ্টিপাত হবে এবং প্রচুর ফসল উৎপন্ন হবে। তিনি পরামর্শ দিলেন যে, প্রথম সাত বছর যে অতিরিক্ত শস্য উৎপন্ন হবে, তা গমের শীষের মধ্যেই রাখতে হবে, যাতে পুরানো হওয়ার পর গমে পোকা না লাগে। এ ব্যক্তি স্বপ্নের ব্যাখ্যা নিয়ে ফিরে আসে এবং বাদশাহকে তা অভিহিত করেন। বাদশাহ আদেশ দিলেন যে, ইউসুফকে কারাগার থেকে বাইরে নিয়ে এসো। বাদশাহর দূত এ বার্তা নিয়ে কারাগারে পৌছল। তখন ইউসুফ বললেন, বাদশাহকে জিজ্ঞাসা কর তার মতে ঐ নারীরা কেমন, যারা হাত কেটে ফেলেছিল? তিনি আমাকে এ জন্য দোষী বা সন্দেহ করে কিনা? বাদশাহ যখন ইউসুফের ঘটনা তদন্ত করার জন্য নারীদের জিজ্ঞাসা করলেন, তখন তারা বাস্তব ঘটনা স্বীকার করলো। বাদশাহ তখন ইউসুফকে তার উপদেষ্টা করে নিলেন।তখন ইউসুফ বাদশাহর কাছে দেশের উৎপন্ন ফসলসহ দেশীয় সম্পদ রহ্মণাবেহ্মণ করার দায়িত্ব তার কাছে সোপর্দ করার অণুরোধ করলেন। এক বছর অতীবাহিত হওয়ার পর শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়ই নয়; বরং যাবতীয় সরকারী দায়িত্বও তাঁকে সোপর্দ করে দেয়া হলো। এই সময় তিনি আযীযে-মিশরের স্ত্রী যুলায়খাকে বিয়ে করেন।

দুর্ভিক্ষ
ইউসুফ (আঃ) এর হাতে মিসরের শাসনভার দেওয়ার পর স্বপ্নের ব্যাখ্যা অণুযায়ী প্রথম সাত বছর সমগ্র দেশে সুখ-শান্তি ও কল্যাণ নিয়ে আসে। এই সময় অনেক ফসল উৎপন্ন হয় এবং তা সঞ্চিত করে রাখা হয়। সাত বছর অতিক্রম হওয়ার পরে ভয়াবহ দুর্ভিহ্ম দেখা দেয়। ইউসুফ প্রথম বছরে দেশের মজুদকৃত শস্য খুব সাবধানে সংরহ্মিত করলেন। মিসরের অধিবাসীদের কাছে তাদের প্রয়োজন পরিমাণে খাদ্যশস্য পূর্বে সঞ্চিত করানো হলো। যখন দুর্ভিহ্ম ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ল তখন চুতর্দিক থেকে লোকজন মিশরে আগমন করতে লাগল। ইউসুফ এক ব্যক্তিকে এক উট-বোঝাই খাদ্যশস্য দিতেন; এর বেশি দিতেন না।

হযরত ইয়াকুব বসবাস করতেন কেনান শহরে, প্যালেস্টাইনের একটি অংশ। এখানে ইব্রাহিম, ইসহাক, ইয়াকুব ও ইউসুফের সমাধি অবস্থিত। এ এলাকাটি দুর্ভিহ্ম থেকে মুক্তি পেল না। ফলে ইয়াকুবের পরিবারেও খাদ্যশস্যের অভাব দেখা দিল। তারা জানতে পারলো যে, মিশরের বাদশাহ অল্প মূল্যের বিনিময়ে খাদ্যশস্য বিক্রি করছে। ইয়াকুব গম সংগ্রহ করার জন্য তার ছেলেদেরকে মিশরে পাঠালেন। তারা মিশরে পৌঁছার পর রাজ কোষাগারে গেলেন, কিন্তু তারা ইউসুফকে চিনতে পারলো না। কিন্তু ইউসুফ তাদেরকে চিনে ফেলল। এই সময় ইউসুফের বয়স ছিল চল্লিশ। ইউসুফের দশ ভাই দরবারে পৌঁছালে তিনি এমনভাবে প্রশ্ন করলেন যাতে তারা তাকে চিতে না পারে। ইউসুফের ভাইরা যখন গমের জন্য আবেদন করেন তখন তারা তাদের বৈমাত্রেয় ভাইয়ের জন্যও বরাদ্দ চাইলেন। তখন ইউসুফ বললেন, সে নিজে কেন আসে নি? তারা বললেন, আমাদের বাবা একজন বৃদ্ধ মানুষ। তাঁকে দেখাশোনার জন্য আমরা তাকে রেখে এসেছি। ইউসুফ বললেন, এবার আমি আপনাদের পিতা ও ভাইদের জন্য পুর্ণমাত্রায় খাদ্য দিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু এরপরে আবার যখন আসবেন তখন অবশ্যই আপনাদের বৈমাত্রেয় ভাইকে সাথে করে নিয়ে আসতে হবে। আর তা না হলে আপনাদের কারো জন্যই খাদ্যশস্য দেওয়া হবে না। তারা পণ্যের যে মূল্য পরিশোধ করেছিল তাও তিনি গোপনে ফেরৎ দিয়ে দিলেন। যাতে পরে তাদের বৈমাত্রেয় ভাইকে সাথে করে নিয়ে আসে। তারা মিশর থেকে খাদ্যশস্য নিয়ে বাসায় গেলেন এবং পিতা কাছে মিশরের অবস্থা বর্ণনা করেন। তারা বললঃ বেনইয়ামনকে সাথে করে না গেলে এরপর আর মিশর থেকে খাদ্য আনা যাবে না। তারা মালপত্র খুলার পর তারা দেখল তাদের পরিশোধকৃত মূল্য ফেরত দেওয়া হয়েছে। তারা তাদের পিতাকে বলল, বেনইয়ামনকে আমাদের সাথে যেতে দিন যাতে আমরা খাদ্যশস্য পেতে পারি। আমরা তার রক্ষণাবেক্ষণ করবো। তাদের পিতা তাদের নিকট থেকে প্রতিশ্রুতি নিলেন যেন তারা বেনইয়ামনকে নিরাপদে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। তারা যখন ইউসুফের কাছে পৌঁছল তখন তিনি তাদের প্রতি দু’জনকে একটি করে থাকার জন্য কহ্ম দিলেন। ফলে বেনইয়ামন একা পরে যায়। ইউসুফ তাকে তার সাথে অবস্থান করতে বললেন। অবস্থান কালে ইউসুফ তার ভাইয়ের কাছ তার পরিচয় প্রকাশ করলেন। ইউসুফের ভাইদের যাত্রার দিন বেনইয়ামনের খাদ্যশস্য যে উটের পিটে দেওয়া হয়, তাতে একটি পাত্র গোপনে রেখে দেয়া হল।

তারা যখন যাত্রা শুরু করে তখন রাজ কর্মচারীর একজন বলল, ঐ কাফেলার মধ্যে অণুসন্ধান কর। তারা ঘটনা জানতে চাইলে বলে আমাদের একটি পাত্র হারিয়ে গিয়েছে। তারা বলল, আমরা চুরি করিনি। যদি আমাদের কেউ চুরি করে থাকি তাহলে তাকে দাস হিসেবে আপনাদের কাছে রেখে দিবেন। তারা সবার মালপত্র অণুসন্ধান করলো পরে যখন বেনইয়ামনের মালপত্র অণুসন্ধান করলো তাতে তারা চুরি হয়ে যাওয়া পাত্রটি খুজে পেল। তখন ইউসুফের ভাইরা তার পহ্মে কথা না বলে বলতে লাগল, তার বড় ভাই ইউসুফও চোর ছিল। তারা বেনইয়ামিনের মুক্তির ব্যাপারে অনেক চেষ্টা করে নিরাশ হয়, ফলে তারা যখন নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে মনস্থির করলো, তখন তাদের জ্যেষ্ঠ ভাই বাড়ি ফিরে যেতে রাজি হলেন না। সে বলল, ইউসুফের ঘটনায় আমরা পিতাকে যথেষ্ট আঘাত দিয়েছি। আমি মিশরে থেকে সে পর্যন্ত যাব না যে পর্যন্ত না পিতা আমাকে যেতে না বলেন। তোমরা বাড়ি ফিরে যাও। গিয়ে বল, বেনইয়ামিন চুরির অপরাধে আটক হয়েছে। পিতা যদি বিশ্বাস করতে না চায় তাহলে অন্যান্য সহযাত্রীদের কাছে জিজ্ঞাসা করতে বল এবং এটাও বল আমাদের বড় ভাই বেনইয়ামিনকে মুক্ত করার জন্য মিশরেই রয়ে গেছে। ইউসুফের বৈমাত্রেয় ভাইরা শেষ পর্যন্ত বেনইয়ামিন ও বড় ভাই ইয়াহুদাকে মিশরে রেখেই দেশে ফিরে গেল। তারা তার পিতাকে বেনইয়ামিনের সম্পর্কে বললেন কিন্তু ইয়াকুব তা বিশ্বাস করলেন না। ইয়াকুব ইউসুফের জন্য কাঁদতে কাঁদতে তার চোখ সাদা হয়ে গিয়েছিল এবং দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। ইয়াকুব পুত্রদেরকে নির্দেশ দিলেন যে, তোমরা পুনরায় মিশরে যাও এবং সেখানে ইউসুফকে অণুসন্ধান কর। পাশাপাশি বেনইয়ামিনের মুক্তির জন্য চেষ্টা কর। এরপর তাদেরকে নিয়ে তোমরা আমার কাছে ফিরে এসো। ইয়াকুব পুত্রদের সাথে একটি পত্র লিখে দিলেন বাদশাহকে দেওয়ার জন্য।

তৃতীয়বার যখন তারা মিশরে গেল, তখন তারা অত্যন্ত অণুনয়-বিনয় করে ইউসুফকে বলল, আমরা দুর্ভিক্ষের কারণে ভীষনভাবে অভাব গ্রস্ত হয়ে পড়েছি। ফলে খাদ্য কেনার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ সংগ্রহ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। তারা আবদার করলো, প্রথমবার যেমন তাদের পূর্ণ অর্থ ফেরৎ দেয়া হয়েছিল এবার যেন অণুগ্রহ করে অর্ধেক মূল্য মাফ করে দেয়া হয়। তখন তারা ইউসুফকে হাতে পত্রটি দিয়ে বলল, আমাদের পিতা আপনাকে এই পত্রটি দিয়েছে। আর আমাদের ভাই বেনইয়ামিনকে আমাদের সাথে ফিরে যাওয়ার অণুমতি দিন। তিনি বললেন, তোমাদের কি মনে আছে যে, অজ্ঞতা ও অপরিনামদর্শীতার কারণে তোমরা তোমাদের ভাই ইউসুফ ও তার সহোদরের সাথে কি আচরণ করেছো? এ কথা শুনে ভাইরা চমকে উঠলো। তারা জিজ্ঞাসা করলো তাহলে কি তুমিই ইউসুফ। তিনি বললেন হ্যাঁ আর এ আমার ভাই বেনইয়ামিন। তখন তারা লজ্জিত হলো। এরপর তারা পিতার অবস্থা সম্পর্কে খুলে বললো। পিতা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন এটা শোনার পর ইউসুফ তার নিজের একটি জামা দিয়ে বললেন, এটা পিতার চোখের উপর রাখলে তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন। এরপর পরিবারের সকলকে নিয়ে আসার জন্য তিনি ভাইদেরকে পাঠালেন। ইউসুফের ভাইরা যখন তার পরিধানের জামা নিয়ে মিশর ত্যাগ করলো, তখন সিরিয়ার কেনানে বসে ইয়াকুব পরিবারের লোকজনকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলেন, তোমরা যদি আমাকে অপ্রকৃতিস্থ মনে না কর তাহলে আমি নিশ্চিত করে বলবো যে, আমি ইউসুফের ঘ্রাণ পাচ্ছি। পরিবারের লোকজন বলল, ইউসুফের মৃত্যুর এত বছর পর তার বেঁচে থাকার আশা করা বা তার ঘ্রাণ অণুভব করা স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়। যখন তারা বাড়িতে ফিরে এসে ইউসুফের জামাটি তাদের বাবার চেখের উপর রাখলো সাথে সাথে তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেলেন। ইউসুফ যখন জানতে পারলেন তার পরিবার মিসরের কাছাঁকাছি পৌঁছে গেছেন তখন তিনি তাদেরকে নিয়ে আসার জন্য শহরের বাইরে অপেক্ষা করতে লাগলেন। কাফেলা পৌঁছামাত্রই তিনি পিতাকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গণ করলেন। ইউসুফ তার পরিবার নিয়ে মিশরে বসবাস করতে শুরু করলেন।

মৃত্যু
ইউসুফ (আঃ) ১১০ বছর জীবিত ছিলেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি ইসরাইলীদের শপথ করিয়ে বলেন, যখন তারা মিশর ত্যাগ করবে তখন তার হাড় তাদের সাথে নিয়ে যেতে পারে। তার মৃত্যুর পর তার মৃত দেহ মিশরের একটি কফিনে সংরক্ষণ করা হয়। ইসরাইলীরা তাদের কর্তৃক শপথ মনে রেখে ছিল, যখন তারা মিশর ত্যাগ করে মুসা সাথে তখন তারা ইউসুফের হাড় তাদের সাথে ইসরায়েলে নিয়ে যায়। তার হাড় সেচেমে কবর দেওয়া হয়েছে, এই জায়গাটি ইয়াকুব দিনাহ্ ছেলের কাছ থেকে কিনে ছিলেন।

তথ্যসূত্র:
↑ JewishEncyclopedia.com – JOSEPH
↑ মারেফুল কোরআন আর্কাইভকৃত ১৮ ডিসেম্বর ২০১০ ওয়েব্যাক মেশিনে., হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ শাফী’ (রহঃ), অণুবাদঃ মাওলানা মুহিউদ্দন খান, সূরা ইউসু্‌ফ, পৃষ্ঠা- ৬৫৪।
↑ Tribe of Israel
↑ মারেফুল কোরআন, সূরা ইউসুফ, পৃষ্ঠা- ৬৫৫।
↑ Genesis 37:18-22[অকার্যকর সংযোগ]
↑ সূরা ইউসুফ, আয়াতঃ ১১-১২।
↑ ক খ মারেফুল কোরআন, সূরা ইউসুফ, পৃষ্ঠা- ৬৫৮।
↑ সূরা ইউসুফ, আয়াতঃ ১৭
↑ সূরা ইউসুফ, আয়াতঃ ১৮
↑ Genesis 37:29-35[অকার্যকর সংযোগ]
↑ মারেফুল কোরআন, সূরা ইউসুফ, পৃষ্ঠা- ৬৫৯-৬৬০।
↑ Genesis 37:25-28[অকার্যকর সংযোগ]
↑ Genesis 37:36[অকার্যকর সংযোগ]
↑ মারেফুল কোরআন, সূরা ইউসুফ, পৃষ্ঠা- ৬৬১।
↑ মারেফুল কোরআন, সূরা ইউসুফ, পৃষ্ঠা- ৬৬৪।
↑ সূরা ইউসুফ, আয়াতঃ ৩৪
↑ Genesis 39:7-20[অকার্যকর সংযোগ]
↑ Genesis 40:1-4[অকার্যকর সংযোগ]
↑ ক খ মারেফুল কোরআন, সূরা ইউসুফ, পৃষ্ঠা- ৬৬৭।
↑ সূরা ইউসুফ, আয়াতঃ ৩৬
↑ মারেফুল কোরআন, সূরা ইউসুফ, পৃষ্ঠা- ৬৬৯।
↑ সূরা ইউসুফ, আয়াতঃ ৫০-৫৪
↑ মারেফুল কোরআন, সূরা ইউসুফ, পৃষ্ঠা- ৬৭৩।
↑ Genesis 50:22-26[অকার্যকর সংযোগ]
↑ Exodus 13:19[অকার্যকর সংযোগ]

লেখক: ইমাম খতিবমসজিদুল উম্মাহ লুটন, সেক্রেটারিশরীয়া কাউন্সিল ব্যাডফোর্ড মিডল্যন্ড ইউকে। সত্যায়নকারী চেয়ারম্যাননিকাহনামা সার্টিফিকেট ইউকে। প্রিন্সিপালআর রাহমান একাডেমি ইউকে, পরিচালকআররাহমান এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকে




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025