ঘরের মধ্যে দৌড়ে বেড়াচ্ছে দু’বছরের ছোট্ট রনি। আর বিছানায় শুয়ে ভাইয়ের দিকে ঠায় তাকিয়ে ‘যমজ’ বোন সিয়েনা। দু’জনের বয়সের তফাৎ মাত্র ২০৮ দিন। এত বেশি ব্যবধানের যমজ ভাইবোন কিংবা এতো কম সময়ের ব্যবধানে পর পর দুই সন্তানের জন্মÑ দুটি ক্ষেত্রেই অবাক হয়ে গিয়েছেন চিকিৎসকরা। যেহেতু নয় মাসেরও কম ব্যবধানে রনি এবং সিয়েনার জন্ম, তাই ডাক্তারি পরিভাষায় এদের বলা হয় ‘ট্যানডেম টুইন’। মাতৃত্বের এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতার কথা নিজের মুখেই জানিয়েছেন স্যাডিই। তিনি বলেছেন, বছর দুই ধরে সন্তান চাইছিলেন তিনি এবং তার সঙ্গী পল ডেনিস। এমনই এক সময়ে স্যাডি জানতে পারেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা।
২০১১ সালের আগস্ট মাসে প্রথম সন্তান রনির জন্ম দেন তিনি। ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফেরার ঠিক ছয় সপ্তাহের মাথায় ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন স্যাডি। কৌতূহলবশত বাড়িতেই ‘প্রেগন্যান্সি টেস্ট’ করে জানতে পারেন ফের অন্তঃসত্ত্বা তিনি। এতো অল্প সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হওয়া সম্ভব কিনা জানতে স্যাডি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। হতবাক চিকিৎসকও জানান, স্যাডি অন্তঃসত্ত্বা। পৃথিবীতে এমন ঘটনা বিরল এবং সম্ভবত প্রথমÑ একথাও স্যাডি ও পলকে জানান ওই চিকিৎসক। প্রথমে একটু ভয় পেয়ে গেলেও পরে বেশ খুশিই হন তারা। রনির সঙ্গে খেলা করতে করতেই দু’জনে অপেক্ষা করতে থাকেন দ্বিতীয় অতিথির। তবে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের।
২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের একদিন সকালে হঠাৎ প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয় স্যাডির। তার ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই জন্ম হয় সিয়েনার। ‘প্রিম্যাচিওর’ সিয়েনাকে নিয়ে প্রচণ্ড চিন্তায় ছিলেন স্যাডি। আলাদা কাঁচের ঘরে রেখে চলছিল সিয়েনার চিকিৎসা। পলের কথায়, ‘সিয়েনা এতো ছোট হয়েছিল যে আমাদের হাতেও দেয়া হয়নি ওকে। নিঃশ্বাস নিতে, খাওয়া দাওয়া করতেও কষ্ট হতো ওর। জন্মের তিনদিন পরে ওর মস্তিষ্কের ভিতর রক্তক্ষরণও শুরু হয়েছিল।’ অবশেষে প্রায় সাড়ে তিন মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর বাবা-মায়ের হাত ধরে সুস্থ হয়ে হ্যাম্পশায়ারে অ্যান্ডোভারের বাড়িতে ফেরে সিয়েনা। রনি তখন সদ্য হামাগুড়ি দিতে শুরু করেছে। আর সিয়েনাকে নিয়ম মেনে খাওয়াতে হচ্ছে ওষুধ।
হাসতে হাসতে স্যাডি বললেন, ওই সময়টা সত্যিই খুব কষ্টের মধ্যে ছিলাম। আমি আর পল রীতিমতো নাকানিচোবানি খেয়েছি। পালা করে বাচ্চাদের ন্যাপি বদলানোর কাজ করতাম। কখন যে সকাল হতো আর কখন রাত, টেরই পেতাম না। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
Leave a Reply