সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ১২:৩২

‘বোরকা মধ্যযুগীয় পোশাক‘ তীর্যক এই মন্তব্যে বিতর্কে ব্রিটিশ সংস্কৃতিমন্ত্রী

‘বোরকা মধ্যযুগীয় পোশাক‘ তীর্যক এই মন্তব্যে বিতর্কে ব্রিটিশ সংস্কৃতিমন্ত্রী

শীর্ষবিন্দু নিউজ, লন্ডন / ৪১৮
প্রকাশ কাল: শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ব্রিটেনে ৩০ লাখেরও বেশি মুসলিমের বসবাস। তবে এখানে খুবই সামান্য কিছু মানুষকে বোরকা পরতে দেখা যায়। তবে এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক জরিপ নেই।

ইউরোপের অনেক দেশেই বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপরেও প্রায়ই দেখা যায় জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হচ্ছে ধর্মীয় এ পোশাকটি। অনেক বিখ্যাত ব্যাক্তিকেই এ নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়।

এবার দেশটির নতুন সংস্কৃতি মন্ত্রী নাদিন ডরিস ইসলামোফোবিয়ায় ভুগছেন বলে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ইসলামবিদ্বেষের অভিযোগ আনা হয়েছে। মুসলিম নারীদের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি ও বোরকাকে মধ্যযুগীয় পোশাক হিসেবে তুলে ধরার পর তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হলো।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি একাধিক টুইট করেছেন যেগুলো পরে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এছাড়া স্কাই নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারেও তিনি বোরকাকে মধ্যযুগীয় পোশাক বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। তার সেসব মন্তব্যে ইসলাফোবিয়ার আঁচ রয়েছে বলে এখন নতুন করে অভিযোগ করছেন নেটিজেনরা।

আল-জাজিরার খবরে জানানো হয়েছে, এ সপ্তাহে ব্রিটেনের মন্ত্রীসভায় বড় ধরণের পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে নারী মন্ত্রীরা বেশ কিছু নতুন পদ পেয়েছেন। এরমধ্যে ৬৪ বছরের নাদিন ডরিসও রয়েছেন যাকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মতো তারও নানা ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য করার ইতিহাস রয়েছে।

২০১৮ সালে জনসন এক সংবাদপত্রে লিখেছিলেন, বোরকা হচ্ছে নিপীড়নের প্রতিক। যেই নারীরা বোরকা পরেন তাদেরকে ব্যাংক ডাকাত ও চিঠির বাক্সের মতো লাগে বলেও ভর্তসনা করেন জনসন। এই লেখাটি নিয়েও মন্তব্য করেছিলেন ডরিস। স্কাই নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বরিস জনসন যে কলামটি লিখেছিলেন তা আমাকে হতাশ করেছে কারণ তিনি সেখানে বোরকার মতো মধ্যযুগীয় পোশাক নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানাননি। বোরকা নারীর সৌন্দর্য্য ও আঘাতের চিহ্নকে ঢেকে রাখে।

ডরিস আরও বলেন, নারীরা কী পরবেন তা বেছে নেয়ার অধিকার তাদের আছে। কিন্তু অনেক নারীই সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত। এমনকি তারা কাকে বিয়ে করবেন তাও নিজেরা নির্ধারণ করতে পারেন না। এছাড়া ডরিসকে বিভিন্ন সময়ে ডানপন্থি আদর্শ প্রচার করতে দেখা গেছে। অনলাইনেও সরব ব্রিটিশ এই মন্ত্রী। তিনি একাধিকবার জানিয়েছেন, একটি উদার সমাজে বোরকার মতো ‘মধ্যযুগীয়’ পোশাকের কোনো স্থান নেই বলেই বিশ্বাস করেন তিনি। কোনো প্রগতিশীল রাষ্ট্রই বোরকাকে মেনে নেবে না বলে টুইটারে লিখেছিলেন ডরিস।

সম্প্রতি স্কাই নিউজকে ব্রিটিশ সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, নারীরা কী পরবে তা পছন্দের অনুমতি দেওয়া উচিত। অনেক মুসলিম নারীর এই সুযোগ নেই। আমি যেমন বলেছি, মুসলিম নারীদের অনেকেই নিজের পছন্দে বিয়ে পর্যন্ত করতে পারে না।

নারীর যৌনাঙ্গ বিকৃতি (এফজিএম)-এর ইঙ্গিত দিয়ে তিনি আরও বলেন, তাদের অনেকেই নিজেদের যৌনাঙ্গ পর্যন্ত রাখার অনুমতি পায় না। ইসলাম ও খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের এই প্রবণতা ছিল। কিন্তু এখন অল্প কয়েকটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এই চর্চা করে।

আলিশা খালিক নামের এক টুইটার ব্যবহারকারীর চ্যালেঞ্জের পর ডোরিস বলেন, ব্রিটেনে মুসলিম নারীরা বোরকা পরে। তারা বিচ্ছিন্ন এবং নিপীড়িত। বোরকা একটি মধ্যযুগীয় পোশাক এবং এখন মুক্ত সমাজে এর স্থান নেই। কোনও প্রগতিশীল দেশের এটি মেনে নেওয়া উচিত না। খালিক নামের সাংবাদিক জানান, ডোরিসের মন্তব্য সত্যিকার অর্থে হতাশাজনক হলেও অবাক হওয়ার মতো না।

তার কথায়, আমাদের বরিস জনসন রয়েছেন যিনি ইসলামবিদ্বেষী মন্তব্য করেন। এখন ডোরিস আছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে। আমরা ইসলামবিদ্বেষকে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে বৈধতা দিচ্ছি। ফলে এখন এটি স্বাভাবিকতায় পরিণত হয়েছে। খালিক আরও বলেন, এটি বিপজ্জনক কারণ ডোরিস বোরকা নিষিদ্ধের কথা বলছেন। এটি সত্যিই উদ্বেগজনক যে, সরকারের একজন সিনিয়র ব্যক্তি নির্দেশ দিতে সংখ্যালঘু নারীদের পোশাক পছন্দের বিষয়ে।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মন্ত্রিসভায় রদবদলের অংশ হিসেবে নতুন সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান ৬৪ বছর বয়সী নাদিন ডোরিস। জনসনের মতোই বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য পরিচিত তিনি।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2022