বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করছে যুক্তরাজ্য। লাল তালিকা থেকে বাংলাদেশের নাম তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটেন। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক ঘোষণায় যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, রেড লিস্ট থেকে বাংলাদেশকে এম্বার লিস্টে দেওয়া হচ্ছে।
আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে এটি কার্যকর হবে। এর আগে কেউ যদি বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে সফর করে তবে রেড লিস্ট অনুযায়ী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এর আগে, করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশ থেকে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো যুক্তরাজ্য। এ কারণে প্রায় ৭ হাজার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক বাংলাদেশে আটকা পড়ে আছেন। রেড লিস্ট থেকে নাম প্রত্যাহার হওয়ায় এখন পূর্ণ ডোজ টিকা নেওয়া থাকলেও ব্রিটিশ ট্রাভেলাররা দেশটিতে ঢুকতে পারবেন। উপসর্গ না থাকলে তাদের ব্রিটেন যাওয়ার আগে ৩ দিনের মধ্যে করোনার পরীক্ষাও করাতে হবে না।
গত ৬ সেপ্টেম্বর দ্বিপাক্ষিক ভার্চুয়াল বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ব্রিটেনের রেড লিস্ট থেকে বাংলাদেশের নাম সরিয়ে নিতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ডমিনিক রাবকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এর দু’দিনের মাথায় অনুষ্ঠিত স্ট্র্যাটেজিক ডায়ালগেও এ নিয়ে আলোচনা হয় এবং নাম প্রত্যাহারের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করে বাংলাদেশ।
যুক্তরাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, ২২ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশকে নতুন তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে। তবে ব্রিটেন, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ড ভ্রমণের আগে অবশ্যই জেনে নিতে হবে, কী কী নিয়ম মানতে হবে। আগামী ২২শে সেপ্টেম্বর লন্ডনের স্থানীয় সময় ভোর চারটা (বাংলাদেশ সময় সকাল ৯ টা) থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
ব্রিটিশ ফরেন এন্ড কমনওয়েলথ অফিসের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। ব্রিটিশ ফরেন এন্ড কমনওয়েলথ অফিসকে হ্যাশট্যাগ দিয়ে তিনি এক টুইটবার্তায় লেখেন, বাংলাদেশিরা ২২শে সেপ্টেম্বর থেকে ব্রিটেনে প্রবেশ করলে তাদের ১০ দিন হোটেল কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না।
তথ্য বিশ্লেষক ও ভ্রমণ বিশেষজ্ঞ টিম হোয়াইট বলেছেন- রেড লিস্ট থেকে বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, তুরস্ক, কেনিয়া, ওমান, মিশর বাদ পড়েছে। সংক্রমণের হার কমে আসায় অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা (রেড লিস্ট) থেকে বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলোর নাম সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটেন।
উল্লেখ্য, রেডলিস্টে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশে আটকে পড়া ব্রিটিশ নাগরিকদের ব্রিটেনে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ১০ দিনের হোটেল কোয়ারেন্টিন করতে হতো। এজন্য তাদেরকে ২২শ’ ৮৫ পাউন্ড গুনতে হতো। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লন্ডনের হাইকমিশনের তৎপরতা আর কমিউনিটির মানুষের দাবির মুখে এ ভোগান্তির অবসান হতে যাচ্ছে।
Leave a Reply