মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ০২:২০

এবার জানুয়ারিতে শিশুদের জন্য নতুন বই নয়

এবার জানুয়ারিতে শিশুদের জন্য নতুন বই নয়

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি আছে মাত্র ৫১ দিন। ১ জানুয়ারি সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌছাতে হলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় বই ছাপা ও বাঁধাইয়ের কাজ শেষ করতে হবে। বাকি সময় যাবে স্কুলে বই পৌঁছাতে। কিন্তু বই ছাপার কাজ এখনো অনেক বাকি।

বিনামূল্যে নতুন বই যারা ছাপবে, সেই প্রেসমালিকরাই বলছেন কোনোভাবেই জানুয়ারিতে বই দেওয়া যাবে না, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লেগে যাবে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের লেগে যাবে জুন পর্যন্ত। ফলে টানা ১০ বছর ধরে যেভাবে বছরের শুরুর দিন বই দেওয়া হয় এবার সেটা সম্ভব হবে না।

কারণ হিসাবে তারা বলছেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) দরপত্রসহ অন্যান্য প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব করেছেন, পুনঃদরপত্রের মাধ্যমে সময়ক্ষেপণ করেছেন। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) ১ কোটি ৪ লাখ এবং এর আগের দিন ১ কোটি ১১ লাখ বই ছাপার জন্য প্রেসমালিকদের সঙ্গে চুক্তি হয়। অর্থাৎ এসব বই এখনো ছাপার কাজ শুরু হয়নি।

এছাড়া অধিকাংশ বইয়ের ছাপার জন্য গত সপ্তাহে চুক্তি হয় প্রেসমালিকদের সঙ্গে। ফলে বই ছাপা হয়েছে খুব কম সংখ্যকই। প্রেসমালিকরা বলছেন, এত কম সময়ে এত পরিমাণ বই ছাপা সম্ভব হবে না। প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে মোট ৪ কোটি ১৭ লাখ ২৬ হাজার ৮৫৬ শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে মোট বই বিতরণ করা হবে ৩৪ কোটি ৭০ লাখ ১৬ হাজার ২৭৭টি বই। এর মধ্যে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বই ছাপা হচ্ছে ভারতে।

আর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই ছাপা হচ্ছে বাংলাদেশে। যার কাজ চলছে পুরোদমে। তবে বই যথাসময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রেস মালিকরা। তবে মাধ্যমিক স্তরের বই নিয়েই যত বিপত্তি। প্রেস মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই প্রেসমালিকদের সঙ্গে এনসিটিবির বেশি চুক্তি হয়েছে।

এরপর টেন্ডারের শর্তানুসারে ৭০ দিন সময় পাবে। সে অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। অথচ ১ জানুয়ারি বই দিতে হলে ডিসেম্বরের মধ্যে বই ছেপে স্কুলে পৌঁছানো উচিত ছিল। কিন্তু এনসিটিবির সিদ্ধান্তহীনতা এই দুরবস্থা তৈরি হয়েছে।

একাধিক প্রেসমালিকরা বলছেন, টেন্ডারের শর্তানুসারে মুদ্রণকারীদের বই স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দিতে হবে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। ফলে ১ জানুয়ারি ‘বই উৎসবে’র দিনে সব শ্রেণির সব শিক্ষার্থী নতুন বই হাতে পাবে না। দরপত্রের বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতা, পুনঃদরপত্র ইত্যাদির কারণে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার এই প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হয়েছে। এ কারণে বই ছাপাতেও দেড়ি হচ্ছে।

বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, যে প্রক্রিয়ায় এগুচ্ছে তাতে জানুয়ারিতে কোনোভাবেই বই দেওয়া সম্ভব হবে না। ছাপার জন্য ৭০ দিন ছাড়াও জরিমানাসহ আরও ২৮ দিন সময় পাবে প্রেসমালিকরা। আইন অনুযায়ীই এ সুযোগ রয়েছে। ফলে বই ছাপা সর্বোচ্চ মার্চে গিয়ে ঠেকবে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা ইত্তেফাককে বলেন, আশা করছি যথাসময়ে বই পৌঁছে যাবে। প্রেসমালিকদের বুঝিয়ে শুনিয়ে কাজগুলো আদায় করার কথা জানান তিনি। আগামী ডিসেম্বরে এনসিটিবির এই শীর্ষ কর্মকর্তা অবসরে যাবেন।

এনসিটিবির এক কর্মকর্তা জানান, বিলম্বের কারণের জন্য প্রেস মালিকরাই দায়ী। প্রেসমালিকদের সিন্ডিকেটর কারণে পুনঃদরপত্র আহবান করা হয়েছে। যারা এবার ১ জানুয়ারির আগে বই দেয়া হবে আগামী বছরের দরপত্রের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি মূল্যায়ন করে কাজ দেয়া হবে। তবে এ অভিযোগটি উড়িয়ে দিয়েছেন প্রেসমালিকরা।

প্রাক প্রাথমিকের বই নিয়ে আরও সংকট: তথ্য অনুযায়ী, প্রাক প্রাথমিকের আমার বই মুদ্রণের জন্য এবার আটটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য (প্যারামিটার) নির্ধারণ করা হয়। এগুলোর মধ্যে ‘গ্লাস’ (চকমক বা ঝিলিক দেওয়ার ক্ষমতা) ৪০ জিইউ নির্ধারণ করা হয়। গত দশ বছর ধরে এই শর্ত ছিল না। কেননা, এই স্তরের বইটি ছাপানো হয় ‘হোয়াইট গ্লোসি প্রিন্টিং পেপারে’। এর পুরত্ব ৮০ শতাংশ, উজ্জ্বলতা ৮৫ শতাংশ, উড-ফ্রি পাল্পসহ ৭টি শর্ত আরোপ করা হয়। সাধারণত আর্ট পেপার বা আর্ট কার্ডে গ্লোস শর্ত থাকে।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025