ইংল্যান্ডে তিন লাখের বেশি শিশুকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে বিছানা শেয়ার করতে হয়।
ব্রিটেন ভিত্তিক ন্যাশনাল হাউজিং ফেডারেশন ১৯ এপ্রিল বুধবার নতুন এমন একটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে।
গবেষণার উদ্দেশ্যে করা জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণ করে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ২০ লাখ শিশু অল্প জায়গায় গাদাগাদি করে বসবাস করে, ঘরের মধ্যে যাদের সামান্য বা কোনো নিজস্ব জায়গা নেই।
তবে সাদা পরিবারের তুলনায় জাতিগত সংখ্যালঘু পরিবারগুলোর গাদাগাদি করে বসবাসের সম্ভাবনা তিনগুণ বেশি।
ন্যাশনাল হাউজিং ফেডারেশনের জরিপে অংশ নেয়া গাদাগাদি করে বসবাস করা এক চতুর্থাংশেরও বেশি অভিভাবক জানিয়েছেন, তাদেরকে নিয়মিত বসার ঘরে, বাথরুম, হলওয়ে বা রান্নাঘরে ঘুমাতে হয়।
জীবনের নানা ডামাডোলের মাঝে কিছুটা শান্তির পরশ। শিশু ডেনি রীড পিয়ানোতে মিউজিক বাজাতে পছন্দ করে। তাঁর মা পাশে বসে উপভোগ করেন।
কিন্তু তাদের জীবন মিউজিকের মতো এতো প্রশান্তির নয়। ডেনী রীডের এই নয় বছর বয়সে কয়েকবার তাদের বাসা বদল করতে হয়েছে। লন্ডনের নিউহাম কাউন্সিলের ছোট্ট একটা ফ্ল্যাটে বসবাস করেন মা-মেয়ে।
জোয়ানা বিবিসি’র প্রতিবেদকে তাঁর ফ্ল্যাট ঘুরিয়ে দেখান। ঘর থেকে অফিসের কাজ করেন জোয়ানা। ছোট এই ফ্ল্যাটের মাসে তিনি ভাড়া দেন ৮৬০ পাউন্ড।
ফ্ল্যাটে জায়গা এতোটাই কম যে ডেনিকে ফ্লোরে বসে স্কুলের হোমওয়ার্ক করতে হয়। আবাসিক এই ভবনে জায়গা খুব কম হওয়ার কারণে ৫৬টি পরিবারকে কমিউনাল ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করতে হয়।
কেইটলীন ও তাঁর মেয়ে আমিরার সমস্যা হয় গোসল করা নিয়ে। ফ্ল্যাটে বাথটাব নেই। এই ভবনটি তৈরি করা হয়েছে সিঙ্গেল মানুষের জন্য। কিন্তু গাদাগাদি করে এসব ফ্ল্যাটে পরিবারের বসবাস হাউজিং সমস্যার ব্যাপকতা প্রমাণ করে।
ব্রিমস্টোন হাউস থেকে মাত্র ১০ মিনিটের হাঁটা দূরত্বে অবস্থিত কার্পেন্টার্স এস্টেট। ইংল্যান্ডের অকার্যকর আবাসন ব্যবস্থার এটি একটি জ্বলন্ত উদাহরণ।
কার্পেন্টার্স এস্টেট পুনর্গঠনের পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছিল, এক দশকেরও বেশি আগে, ২০০৩ সালে। তখন বাসিন্দাদের শত শত কাউন্সিল ফ্ল্যাট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এখনও এই এস্টেটের উপর বড় তিনটি টাওয়ার ব্লক জরাজীর্ণ এবং কার্যত খালি পড়ে আছে। জানালাগুলো ভেঙে পড়ছে, চারপাশে শ্যাওলা জন্মেছে।
কিন্তু বছরের পর বছর ধরে রিজেনারেশনের পরিকল্পনা কেবল পেছানো হচ্ছে। নিউহ্যাম কাউন্সিল জানিয়েছে, পর্যায়ক্রমে পরবর্তী দুই দশকে দুই হাজারের বেশি বাড়ি তৈরি করা হবে।
কাউন্সিল আরও বলেছে, হোমলেসদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে আগামী তিন বছরে তাঁরা ৫ শ টি ঘর অধিগ্রহণ করবে।
Leave a Reply