আজ শুক্রবার। পবিত্র জুমাবার। আজকের বিষয় ‘সূরা আয্-যুমার ’। শীর্ষবিন্দু পাঠকদের জন্য এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন ‘ইসলাম বিভাগ প্রধান’ ইমাম মাওলানা নুরুর রহমান।
সূরা আয্-যুমার (আরাবী سورة الزمر) (দল) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআনের ৩৯তম সুরা। এই সূরাটি মককায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৭৫ টি।
অন্যান্য কয়েকটি মক্কী সূরার ন্যায় এরও বিষয়বস্তু আল্লাহপাক ও মৃত্যুর পর মানুষের পুুনরুত্থান।
আল্লাহ’র একত্ব ও সর্বশ্রেষ্ঠতা এবং তার প্রতি আনুগত্যের গুরুত্ব ও ব্যতিক্রমের পরিণিতি এই সূরায় ব্যাখ্যায়িত। দল শব্দটি দিয়ে জান্নাতবাসী ও জাহান্নামবাসী- মানুষের এই দুটি দলের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
নাযিলের হওয়ার সময় কাল
এ সূরা যে হাবশায় হিজরত করার পূর্বে নাযিল হয়েছিল , সে ব্যাপারে ১০ নম্বর আয়াত থেকে স্পষ্ট ইংগিত পাওয়া যায়। কোন কোন রেওয়ায়াতে একথা সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, হযরত জাফর ইবনে আবী তালেব ও তার সংগী সাথীগণ হাবশায় হিজরতের সংকল্প করলে তাদের সম্পর্কে এ আয়াত নাযিল হয়েছিল (রূহুল মায়ানী, ২৩ তম খণ্ড , পৃষ্ঠা , ২২৬)
বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য
হাবশায় হিজরতের কিছু পূর্বে মক্কার পরিবেশ ছিল জুলুম – নির্যাতন এবং শত্রুতা ও বিরোধিতায় ভরা। ঠিক এ পরিবেশে এ গোটা সূরাটিকে একটি অত্যন্ত মনোজ্ঞ ও মর্মস্পর্শী বক্তৃতারূপে পেশ করা হয়েছে। এটা একটা নসীহত।
এতে মাঝে মধ্যে ঈমানদারদের সম্বোধন করা হলেও বেশীরভাগ কুরাইশ গোত্রের কাফেরদের সম্বোধন করা হয়েছে এবং হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাওয়াতের উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হয়েছে।
আর সে উদ্দেশ্যটি হচ্ছে, মানুষ যেন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর দাসত্ব গ্রহণ করে এবং তার আল্লাহপ্রীতিকে অন্য কারো দাসত্ব ও আনুগত্য দ্বারা কলুষিত না করে।
এ মৌলিক নীতিকে বারবার বিভিন্ন ভঙ্গিতে উপস্থাপন করে অত্যন্ত জোরালো পন্থায় তাওহীদের সত্যতা এবং তা মেনে চলার উত্তম ফলাফল আর শিরকের ভ্রান্তি ও তা আঁকড়ে ধরে থাকার মন্দ ফলাফল অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
তাছাড়া মানুষকে ভ্রান্ত আচরণ পরিত্যাগ করে আল্লাহর রহমতের দিকে ফিরে আসার জন্য আহবান জানানো হয়েছে।
এ প্রসংগে ঈমানদারদেরকে পথনির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, যদি আল্লাহর দাসত্বের জন্য একটি জায়গা সংকীর্ণ হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে তাঁর এ পৃথিবী অনেক প্রশস্ত। নিজের দীনকে রক্ষা করার জন্য অন্য কোথাও চলে যাও। আল্লাহ তোমাদের ধৈর্যের পুরস্কার দান করবেন।
অন্যদিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলা হয়েছে যে, কাফেরদের জুলুম- নির্যাতন একদিন না একদিন তোমাদেরকে এ পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারবে।
এমন দুরাশা কাফেরদের মন থেকে দূর করে দাও এবং পরিস্কারভাবে বলে দাও যে, আমার পথ রোধ করার জন্য তোমরা যা কিছু করতে চাও করো , আমি আমার কাজ চালিয়েই যেতে থাকবো।
Leave a Reply