বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০৬:৫৬

সূরা নূহ (আরবী: سورة نوح)

সূরা নূহ (আরবী: سورة نوح)

আজ শুক্রবার পবিত্র জুমাবার আজকের বিষয় ‘সূরা নূহ (আরাবী: سورة نوح)শীর্ষবিন্দু পাঠকদের জন্য এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেনইসলাম বিভাগ প্রধান ইমাম মাওলানা নুরুর রহমান

সূরা নূহ (আরাবী : سورة نوح‎) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরানের ৭১ তম সুরা এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ২৮ এবং রুকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ২।

সূরা নূহ মককায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরাটিতে ইসলামের নবী নুহ ও তার সম্প্রদায়ের কথা বর্ণিত আছে। দ্রুত তথ্য শ্রেণী, নামের অর্থ …

নামকরণ
‘নূহ’ এ সূরার নাম। এর বিষয়বস্তুর শিরোনামও ‘নূহ’। কারণ এতে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত হযরত ‘নূহ’ আলাইহিস সালামের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।
নাযিল হওয়ার সময় ও স্থান

এটি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মক্কী জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে নাযিল হওয়া সূরাসমূহের অন্যতম।

তবে এর বিষয়বস্তুর আভ্যন্তরীণ সাক্ষ্য থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, যে সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাওয়াত ও তাবলীগের বিরুদ্ধে মক্কার কাফেরদের শত্রুতামূলক আচরণ বেশ তীব্রতা লাভ করেছিল তখন এ সূরাটি নাযিল হয়েছিল।

বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য
এতে হযরত নূহ আলাইহি সলামের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। তবে তা কেবল কাহিনী বর্ণনার উদ্দেশ্যে করা হয়নি।

বরং এর উদ্দেশ্য মক্কার কাফেরদের এ মর্মে সাবধান করা যে, হযরত নূহ আলাইহিস সালামের সাথে তার কওম যে আচরণ করেছিল তোমরাও হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সে একই আচরণ করছো।

তোমরা যদি এ আচরণ থেকে বিরত না হও তাহলে তোমাদের ও সে একই পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে যার সম্মুখীন হয়েছিল ঐ সব লোকেরা। গোটা সূরার মধ্যে একথাটি ষ্পষ্ট ভাষায় কোথাও বলা হয়নি।

কিন্তু যে অবস্থা ও পরিস্থিতিতে মক্কীবাসীদের এ কাহিনী শুনানো হয়েছে তার পটভূমিতে এ বিষয়টি আপনা থেকেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

যে সময় আল্লাহ তা’আলা হযরত নূহ আলাইহি সালামকে রিসালাতের পদ মর্যাদায় অভিসিক্ত করেছিলেন সে সময় তার ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন প্রথম আয়াতে তা বলা হয়েছে।

তিনি তাঁর দাওয়াত কিভাবে শুরু করেছিলেন এবং স্বজাতির মানুষের সামনে কি বক্তব্য পেশ করেছিলেন।

২ থেকে ৪ পর্যন্ত আয়াতে তা সংক্ষিপ্তকারে বলা হয়েছে, এরপর দীর্ঘকাল পর্যন্ত দীনের দাওয়াত ও তাবলীগের জন্য অবর্ণনীয় দুঃখ -কষ্ট বরণ করার পর তার যে বর্ণনা হযরত নূহ আলাইহি সালাম আল্লাহর দারবারে পেশ করেছিলেন ৫ থেকে ২০ আয়াতে তা বর্ণনা করা হয়েছে।

তিনি তাঁর জাতিকে সত্য পথে আনার জন্য কিভাবে চেষ্টা-সাধনা করেছেন আর তার জাতির লোকেরা কি রকম হঠকারীতার মাধ্যমে তার বিরোধীতা করেছে এ পর্যায়ে তিনি তার সবই তাঁর প্রভূর সামনে পেশ করেছেন।

এরপর ২১ থেকে ২৪ আয়াতে হযরত নূহ আলাইহিস সালামের শেষ আবেদনের বিষয়, উল্লেখ করা হয়েছে। এতে তিনি মহান আল্লাহর কাছে এ মর্মে আবেদন করেছেন যে, এ জাতি আমার দাওয়াত চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

এরা তাদের নেতাদের হাতে নিজেদের লাগাম তুলে দিয়েছে এবং বিরাট ও ব্যাপক ষড়যন্ত্র-জাল বিস্তার করেছে। এখন তাদের থেকে হিদায়াত গ্রহণ করার শুভবুদ্ধি ও যোগ্যতা ছিনিয়ে নেয়ার সময় এসে গেছে। হযরত নূহ আলাইহিস সালামের পক্ষ থেকে এটা কোন প্রকার অধৈর্যের বর্হিপ্রকাশ ছিল না।

বরং শত শত বছর ধরে ধৈর্যের চরম পরীক্ষার মত পরিবেশ -পরিস্থিতির মধ্যে দীনের তাবলীগের দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়ার পর যে সময় তিনি তাঁর কওমের ব্যাপারে পুরোপুরি নিরাশ হয়ে গেলেন কেবল তখনই তিনি এ সিদ্ধান্তে পৌছলেন যে, এখন এ জাতির সত্য ও ন্যায়ের পথে আসার আর কোন সম্ভাবনাই নেই।

তার এ সিদ্ধান্ত ছিল হুবুহু আল্লাহ তা’আলার ফায়সালার অনুরূপ। তা-ই এর পরবর্তী ২৫ আয়াতেই বলা হয়েছে। এ জাতির কৃতকর্মের কারণে তাদের ওপর আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে আযাব নাযিল হলো।

আযাব নাযিল হওয়ার ঠিক পূর্ব মূহূর্তে হযরত নূহ আলাইহস সালাম আল্লাহ তা’আলার কাছে যে দোয়া করেছিলেন শেষ আয়াতটিতে তা উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে তিনি নিজের ও ঈমানদারদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং নিজ কওমের কাফেরদের জন্য এ মর্মে আল্লাহর কাছে আবেদন করছেন যেন তাদের কাউকেই পৃথিবীর বুকে বসবাস করার জন্য জীবিত রাখা না হয়।

কারণ, তাদের মধ্যে এখন আর কোন কল্যাণই অবশিষ্ট নেই। তাই তাদের ঔরসে এখন যারাই জন্মলাভ করেবে তারাই কাফের এবং পাপী হিসেবেই বেড়ে উঠবে।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025