ইউরোপে বাড়ির দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। বিশেষ করে জার্মানি এবং ব্রিটেনে এমন হারে কমেছে যা অনেক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অথচ কম দামেও বাড়ি কিনছে খুব কম মানুষ। ইইউ-র দেওয়া পরিসংখ্যানেই রয়েছে এমন তথ্য।
গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ইউরোপের প্রায় সব দেশে বাড়ির দাম শুধু বেড়েছে। ২০১৫ সালের পর থেকে সাত বছর একবারও বৃদ্ধির এই ধারায় ছেদ পড়েনি। এমনকি করোনা মহামারির সময়েও বাড়ির ক্রেতা কমেনি, দামও কমেনি।
কিন্তু ২০২২ সাল থেকে শুরু হয়েছে উল্টো ধারা। সে বছর জার্মানিতে বাড়ির দাম কমেছে ৬.৮ শতাংশ, বাড়ির মূল্যের রেকর্ড প্রকাশ শুরুর পর থেকে যা সর্বোচ্চ।
এই হারে বাড়ির দাম কমার জন্য মূলত তিনটি বিষয়কে দায়ী মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা- মূদ্রাস্ফীতি, সুদের হার বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি।
এই তিন ‘সমস্যা’ একসঙ্গে জনজীবনে নেমে আসার আগ পর্যন্ত ইউরোপে বাড়ির দাম সব সময়ই বেড়েছে। ২০১৫ সালের মার্চ থেকে ২০২২-এর জুন পর্যন্ত বাড়িঘরের দাম সব মিলিয়ে মোট ৪৩ শতাংশ দাম বেড়েছে।
ইইউ-র সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনা মহামারির সময়, অর্থাৎ ২০২০ এবং ২০২১ সালে আগের পাঁচ বছরের চেয়েও বেশি দ্রুত বেড়েছে বাড়ির দাম। ২০২২ সালে হঠাৎ করেই বাড়ির দাম কমতে থাকে।
গত সপ্তাহে ইইউ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে বলা হয়েছে, টানা ৩০ ‘কোয়ার্টার’ দাম বৃদ্ধির পর ২০২২ সালের জুলাই মাসে বাড়িমূল্যে যে ভাটার টান লেগেছিল ডিসেম্বর পর্যন্ত তা একবারের জন্যও থামেনি।
বাড়ির দাম কমলেও বিক্রি বাড়ছে না। কারণ, মূদ্রাস্ফীতি এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। তাই বাড়ি কেনার সাধ থাকলেও সাধ্য হচ্ছে না। যারা কিনতে চাইছেন, ব্যাংকে সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় তারাও পিছিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থায় নতুন বাড়ি নির্মাণও কমছে।
ব্রিটেনেও দ্রুত কমছে বাড়ির দাম। সেখানে ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে বাড়ির দাম ২.৬ শতাংশ কমেছে। ২০১১ সালের পর এই প্রথম বাড়ির দাম দ্রুত এতটা কমলো। সেখানে মূদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, সুদের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি বন্ধকী সুদের হারও বেড়েছে।
Leave a Reply