আজ শুক্রবার। পবিত্র জুমাবার। আজকের বিষয় ‘সূরা আত-তাকভীর (আরাবী : التكوير) ’। শীর্ষবিন্দু পাঠকদের জন্য এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন ‘ইসলাম বিভাগ প্রধান’ ইমাম মাওলানা নুরুর রহমান।
সূরা আত-তাকভীর (আরাবী : التكوير) মুসলমানের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরানের ৮১ তম সুরা , এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ২৯; এর রুকু তথা অনুচ্ছেদ ১ টি। সূরা আত-তাকভীর মককায় অবতীর্ণ হয়েছে।
নামকরণ
সূরার প্রথম বাক্যের ( আরবী التكوير) শব্দটি থেকে নামকরণ করা হয়েছে। তাকভীর ( আরবী التكوير) হচ্ছে মূল শব্দ। তা থেকে অতীত কালের কর্তৃবাচ্য অর্থে কুওভিরাত (আরবী التكوير) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এর মানে হচ্ছে , গুটিয়ে ফেলা হয়েছে। এই নামকরণের অর্থ হচ্ছে , এটি সেই সূরা যার মধ্যে গুটিয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছে।
নাযিলের সময় –কাল
বিষয়বস্তু ও বর্ণনাভংগী থেকে পরিস্কারভাবে জানা যায় , এটি মক্কা মু’আযযমার প্রথম যুগের নাযিল হওয়া সূরাগুলোর অন্তরভুক্ত।
বিষয়বস্তু ও মুল বক্তব্য
এর বিষয়বস্তু হচ্ছে দু’টি: আখেরাত ও রিসালাত। প্রথম ছ’টি আয়াতে কিয়ামতের প্রথম পর্বের উল্লেখ করা হয়েছে।
বলা হয়েছে: যখন সূর্য আলোহীন হয়ে পড়বে। তারকারা স্থানচ্যুত হয়ে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত হবে। পাহাড়গুলো পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে উৎপাদিত হয়ে শূন্যে উড়তে থাকবে। মানুষ তাদের সবচেয়ে প্রিয় জিনিসের কথা ভুলে যাবে। বনের পশুরা আতংকিত ও দিশেহারা হয়ে সব এক জায়গায় জড়ো হয়ে যাবে। সমুদ্র স্ফীত হবে ও জ্বলে উঠবে।
পরবর্তী সাতটি আয়াতে কিয়ামতের দ্বিতীয় পর্বের উল্লেখ করে বলা হয়েছে: যখন রূহগুলোকে আবার নতুন করে শরীরের সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হবে। আমলনামা খুলে দেয়া হবে। অপরাধের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আকাশের সমস্ত পরদা সরে যাবে। জান্নাত–জাহান্নাম ইত্যাদি সব জিনিসই চোখের সামনে সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে।
আখেরাতের এই ধরনের একটি পুরোপুরি ছবি আঁকার পর একথা বলে মানুষকে চিন্তা করার জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে যে, সে সময় প্রত্যেক ব্যক্তি কি পাথেয় সংগ্রহ করে এনেছে তা সে নিজেই জানতে পারবে।
এরপর রিসালাত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে এ ক্ষেত্রে মক্কাবাসীদেরকে বলা হয়েছে, মুহাম্ম্দ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের সামনে যা কিছু পেশ করছেন সেগুলো কোন পাগলের প্রলাপ নয়। কোন শয়তানের ওয়াসওয়াসা ও বিভ্রান্তিও নয়।
বরং সেগুলো আল্লাহর প্রেরিত একজন উন্নত মর্যাদা সম্পন্ন বুযর্গ ও বিশ্বস্ত বাণীবাহকের বিবৃতি, যাঁকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উন্মুক্ত আকাশের দিগন্তে দিনের উজ্জ্বল আলোয় নিজের চোখে দেখেছেন। এই শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তোমরা কোন দিকে চলে যাচ্ছো।
Leave a Reply