১০ জন প্রত্যাহার, পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক শিশুকে কেন্দ্র করে তোলপাড়। বিমানবন্দরের ১৪ স্তরের নিরাপত্তা ডিঙিয়ে পাসপোর্ট, টিকিট, বোর্ডিং পাশ ছাড়া বিমানে শিশু ওঠার ঘটনায় ১০ জনকে বিমানবন্দর থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান।
সোমবার রাত আনুমানিক ৪টা ১০ মিনিটের দিকে জুনায়েদ হোসেন মোল্লা নামে এক শিশু ভিসা ও পাসপোর্ট ছাড়াই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কুয়েত এয়ারওয়েজের এক ফ্লাইটে উঠে। এ ঘটনায় কুয়েত এয়ারওয়েজের কেইউ-২৮৪ ফ্লাইটটি প্রায় আধা ঘণ্টা দেরিতে ঢাকা ত্যাগ করে। বিমানটিতে ৩৩০ জন প্যাসেঞ্জার ছিলেন।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে বিমানবন্দরের ডিউটি সিকিউরিটি অফিসার (ডিএসও) খুরশিদা খাতুন বিমানবন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর শিশুটির অভিভাবকদের জিম্মায় দেওয়া হয়।
বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ফ্লাইটটি যখন উড্ডয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছিল সে সময় ১০-১২ বছরের একটি ছেলে শিশু প্লেনের ভেতরে করিডোরে হাঁটাচলা করছিল। কেবিন ক্রু শিশুটিকে সিটে বসার পরামর্শ দেন। তখন শিশুটি একটি সিটে বসে পড়ে। একপর্যায়ে শিশুটি যেই সিটে বসেছিল পাশের সিটের যাত্রী শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে বসতে বলে।
কিন্তু শিশুটি তার বাবা-মায়ের বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারেনি। পাশের সিটের যাত্রী বিষয়টি কেবিন ক্রুর নজরে আনলে কেবিন ক্রু তাকে বাবা-মার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। তবে শিশুটি উত্তর দিতে পারেনি। একপর্যায়ে কেবিন ক্রুরা হেড কাউন্ট করেন (যাত্রী সংখ্যা গণনা করা)। তখন একজন যাত্রী বেশি পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক মিয়া বলেন, এই শিশুটির নাম জোনায়েদ মোল্লা (১০)। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে। ঘটনার পর তার গ্রামের বাড়ি খবর পাঠানো হয়েছিল। পরে গতকালই তার চাচা মো. ইউসুফ মোল্লা থানায় আসেন। তার জিম্মায় শিশুটিকে দেওয়া হয়েছে।
ওসি জানান, জোনায়েদ মোল্লার বাবার নাম ইমরান মোল্লা। পেশায় কৃষক। তার বাবা-মার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়েছে। এখন কেউ শিশুটির খোঁজ-খবর রাখেন না। তাই চাচার জিম্মায়ই তাকে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পাসপোর্ট, ভিসা, বোর্ডিং পাস ছাড়া একটি শিশু কীভাবে প্লেনে ওঠে এ ঘটনায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, বিমানবন্দরে কর্মরত প্রত্যেক কর্মী ডিউটি পাস ব্যবহার করে চলাফেরা করেন। বাকি যারা যাত্রী তারা পাসপোর্ট এবং বোর্ডিং পাস দিয়ে চলাফেরা করেন।
এছাড়া বিমানবন্দরে ঢুকে ইমিগ্রেশনসহ ৮-১০টি ধাপ পেরিয়ে প্লেনে উঠতে হয়। কিন্তু কোনো ধাপেই শিশুটিকে আটকানো হয়নি।
এমন ঘটনায় বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১০ জনকে প্রত্যাহার করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
Leave a Reply