বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:১৪

যুক্তরাজ্যে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের বিভীষিকাময় জীবনযাপন

যুক্তরাজ্যে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের বিভীষিকাময় জীবনযাপন

শীর্ষবিন্দু নিউজ, লন্ডন / ১৬৪
প্রকাশ কাল: সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০২৩

কোন রকম স্কলারশিপ ছাড়া যারা যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছেন তাদের গুনতে হচ্ছে কাড়ি কাড়ি টাকা। এমন বেশ কয়েকজন বিদেশি শিক্ষার্থীর গল্প তুলে ধরা হয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।

দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার অসংখ্য শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান যুক্তরাজ্য, কানাডা বা যুক্তরাষ্ট্রে। যশ-খ্যাতি ও শিক্ষার মান ভালো হওয়ায় লন্ডনে পড়তে যান অনেক শিক্ষানবিশ।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ শতভাগ স্কলারশিপ পেয়ে সেখানে পড়তে যান। তবে অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষাব্যয় ব্যতীত আর কোনো সুবিধা পান না। আবাসনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় নিজের খরচে বন্দোবস্ত করতে হয়। আর

সেই খরচ মেটাতে খণ্ডকালীন চাকরিকে বেছে নেন বেশিরভাগ শিক্ষার্থী। কিছু শিক্ষার্থীর সম্পূর্ণ খরচ বহন করে তার পরিবার। তবে উচ্চবিত্ত পরিবার না হলে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় এসব ব্যয় মেটাতে। আবাসন ব্যয় মেটাতে গিয়ে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের।

এমনই কয়েকজনের সাথে আরাপকালে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে লন্ডনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়তে যাওয়ার পর তাদের অনেকের কোনো থাকার জায়গা ছিল না। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসনের ব্যয় ছিল আকাশচুম্বী।

এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে কম খরচে দুই রুমের একটি ফ্ল্যাটে ২০ জনের সঙ্গে বসবাস শুরু করেন তারা।

জানা যায়, এমন পরিবেশে থাকতে হবে তারা কখনো ভাবিনি। প্রথম কয়েক মাস তারা তাদের পরিবারের সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বলতে পারেন নি। কারণ তারা কেমন পরিবেশে থাকেন, তা তাদের দেখাতে চাননি।

তারা জানান, বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য লন্ডনে বাস করা খুবই ব্যয়বহুল। স্বপ্নপূরণের জন্য পরিবারের জমানো টাকা খরচ করছেন তারা।

ভারতের রাশাভ কৌশিক নামের এক শিক্ষার্থী জানান, তিন বন্ধু মিলে একটি ছোট ফ্ল্যাটে থাকেন তারা। এর জন্য গুনতে হয় ১৬ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড।

এ বিষয়ে এক শিক্ষার্থী বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক বেশি ফি নিতে পারে। এজন্য দিন দিন বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো থাকার জায়গার অভাব। তাদের এ সমস্যাকে পুঁজি করে তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বাসা ভাড়া নেওয়া হয়।

এমনকি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ও পে-ইন স্লিপও দেওয়া হয় না তাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সংকট থাকা সত্ত্বেও কেন এত শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হয়।

এর ব্যাখ্যায় যুক্তরাজ্যের শিক্ষা বিভাগের মুখপাত্র বলেছেন, আন্তর্জাতিকভাবে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য ভালো। তবে আবাসন ব্যয় কমাতে আমরা বেসরকারি আবাসন সরবরাহকারীদের সঙ্গে আলোচনা করব।

ইউনিভার্সিটিস ইউকে (যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যাগুলোর একটি সম্মিলিত জোট) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বর্তমানে যুক্তরাজ্যজুড়েই আবাসন ব্যয় বেড়েছে। আবাসন সংকটে পড়তে না চাইলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের উচিত হবে এ দেশে আসার আগেই আবাসনের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা।

তবে এমন আবাসিক সংকট থাকার পরও নতুন শিক্ষার্থী ভর্তিতে লাগাম টানছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বরং উল্টো চিত্র ধরা পড়েছে।

সম্প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়েছে দেশটিতে। হায়ার এডুকেশন স্ট্যাটিস্টিকস এজেন্সির (এইচইএসএ) তথ্যমতে, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে লন্ডনে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল এক লাখ ১৩ হাজার। এ সংখ্যা ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭৯ হাজারে।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2023