গ্রাহকের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে গ্রাহককে মাত্র ৫০ টাকা দৈনিক কিস্তিতে টেলিভিশন কেনার সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম ব্র্যান্ড মিনিস্টার।
আর্থিক অসচ্ছলতা ও জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যয়বৃদ্ধির কারণে প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস সময়মতো কিনতে পারেন না অনেকেই। শখ ও ঘরের প্রয়োজনীয় কিছু কেনার জন্য অপেক্ষার পালা যেন শেষই হতে চায় না। কত শত পরিকল্পনা থাকে তা কেনার।
এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে কিস্তির (ইনস্টলমেন্ট) সুবিধা একটা ইতিবাচক দিক। কিস্তিতে পণ্য কেনার মাধ্যমে মানুষ এখন সহজে ও সময়মতো তার প্রয়োজন মেটাতে পারে।
কিন্তু এই উন্নত প্রযুক্তির টিভির দাম বেশি হওয়ায় অনেকের কাছেই একসঙ্গে এত টাকা দিয়ে তা কেনা কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্রেতারা এখন কিস্তিতে মিনিস্টার ব্র্যান্ডের যেকোনও মডেলের টিভি কিনতে পারবেন। সঙ্গে থাকছে বিক্রয়োত্তর সেবা।
মিনিস্টার ছাড়াও সনি-স্মার্ট দিচ্ছে শূন্য শতাংশ সুদে ইএমআই সুবিধা। এ জন্য দেশি-বিদেশি ১০টিরও বেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ রয়েছে সনি-স্মার্ট। সনি-স্মার্টের সারা দেশে বিস্তৃত শোরুম এবং অনুমোদিত বিক্রয়কেন্দ্র ছাড়াও ঘরে বসে ওয়েবসাইট থেকে টেলিভিশন কিনতে পারবেন।
সনি-স্মার্ট শো-রুম থেকে কেনা যেকোনও টিভিতে রয়েছে দুই বছরের প্যানেল ও পার্টস ওয়ারেন্টি এবং পাঁচ বছরের বিক্রয়োত্তর সেবার নিশ্চয়তা। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্র্যান্ড ওয়ালটনও মাসিক কিস্তিতে যেকোনও মডেলের টেলিভিশন কেনার সুযোগ করে দিয়েছে।
ওয়ালটন থেকে কিস্তি-সুবিধায় পণ্য কিনতে প্রয়োজন হবে বেশ কয়েকটি জিনিস। এ ক্ষেত্রে গ্যারান্টার হিসেবে সরকারি চাকরিজীবী অথবা আর্থিকভাবে সচ্ছল বা সমাজে প্রতিষ্ঠিত দুজন ব্যক্তির প্রমাণপত্র প্রয়োজন হবে।
ক্রেতা ও তাদের (দুজন ব্যক্তি) এক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নিয়ে কাছের ওয়ালটন শোরুমে গিয়ে যোগাযোগ করলে কিস্তিতে ওয়ালটনের যেকোনও মডেলের টিভি কেনা যাবে।
বাটারফ্লাইয়েও রয়েছে কিস্তিতে পণ্য কেনার সুবিধা। ১৫ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট, শূন্য শতাংশ ইন্টারেস্টে ১৮০ দিনের (ছয় মাস) এবং ১৮ মাস পর্যন্ত রয়েছে কিস্তি-সুবিধা। এখানে ক্রেডিট কার্ড ছাড়াই কিস্তির সুবিধা দেওয়া হয়। হাউস অব বাটারফ্লাই থেকে কিস্তিতে পণ্য কেনার সময় একটি ফরম দেওয়া হবে এবং ফরমটির প্রয়োজনীয় সব তথ্য পূরণ করতে হবে।
ওয়ালটনের মতো এখানেও কিস্তিতে টিভি কিনতে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং আত্মীয় নন, এমন দুজন ব্যক্তি, যারা গ্যারান্টার অথবা নিশ্চয়তা প্রদানকারী হবেন, গ্রাহকের অবর্তমানে বকেয়া পরিশোধ করতে ইচ্ছুক, তাদের নাম ও ঠিকানা দিতে হবে।
কিস্তিতে কেনাকাটা অনেকের জীবনযাপনেই স্বস্তি এনে দিয়েছে। তেমনই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন অনেকেই। এমন একজন গৃহিণী জানান, টেলিভিশন যে কিস্তিতে কেনা যায়, এমন কিছু আগে জানা ছিল না। অনলাইনে মিনিস্টারের এমন সুবিধার বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করি। তারপর মাসিক কিস্তিতে মিনিস্টারের একটা টেলিভিশন কিনি।
কিস্তিতে টেলিভিশন কেনার কারণ সম্পর্কে এই গৃহিণী বলেন, স্বামীর স্বল্প বেতনে দুই সন্তান নিয়ে মোটামুটি জীবনযাপন করছি। দীর্ঘদিন ধরে কোনোরকমে বাসায় পুরনো মডেলের একটা রঙিন টিভি চলছে। নতুন টিভি কিনতে একসঙ্গে অনেক টাকা লাগবে। তাই নিজের ও দুই সন্তানের আবদারেও নতুন টিভি কেনার কথা চিন্তা করিনি।
শুধু কিস্তির সুবিধার্থেই এই টিভি কেনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এই গৃহিণী জানান, অনলাইনে দেখে যতটুকু জেনেছি এর সার্ভিসিং ব্যবস্থা বেশ ভালো। তা ছাড়া বজ্র প্রতিরক্ষামূলক হওয়ার কারণে বৃষ্টির সময়ও নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায় মিনিস্টারের এই স্মার্ট টেলিভিশন। এ জন্য ভেবেচিন্তে এই টিভি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
কিস্তির সুবিধাভোগী বেসরকারি স্কুলের স্টাফ আফতাব হোসেন জানান, বাসায় ১৩ বছর আগে কেনা একটি টিভি আছে। কিন্তু ছেলেমেয়ের আবদার একটা নতুন এলইডি টিভি কেনার। কিন্তু একসঙ্গে এত টাকা দিয়ে কেনা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। পরে কিস্তিতে ওয়ালটন থেকে একটা বড় টিভি কিনি। কিস্তি-সুবিধা না থাকলে হয়তো সন্তানদের ইচ্ছাটা পূরণ করা সহজ হতো না।
কিস্তিতে সহজে টিভি কেনার এই প্রক্রিয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। সমাজে এমন অনেকেই লাখ লাখ মধ্যবিত্ত পরিবার আছে, যাদের অনেক কিছু করার স্বপ্ন আছে কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থ নেই। তাদের জন্য এই কিস্তি সুবিধা স্বপ্নপূরণের সারথি হবে।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে প্রতিবছর প্রায় ১৮ লাখ টেলিভিশন বিক্রি হয়। ২০২৩ সালের এক জরিপ বলছে, দেশে টিভির বাজারের আকার প্রায় ৫০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। প্রতিবছর এই বাজারের আকার ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে।
Leave a Reply