সিলেট নগরীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চাকা ঘুরলেই দিতে হয় ১০০ টাকা। আর রিকশা ভাড়া নির্ধারণ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ নগরবাসী। ভাড়া নেয়ে প্রায়ই চালক ও যাত্রীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা লেগতে দেখা যায়।
সিএনজি অটোরিকশার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নাগরিক জীবনকে দূর্বিষহ করে তুলছে। সিটি করপোরেশন থেকে নগরে রিকশার ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হলেও সিএনজি চালিত অটোরিকশার ভাড়া নির্ধারণ না করায় কোন রুটে ভাড়া কত হবে সেটি স্থানীয় শ্রমিক সংগঠনগুলোই নির্ধারণ করছে।
মহানগরের কুমারগাও বাসস্ট্যান্ড থেকে অম্বরখানা এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া কিছুদিন আগেও জনপ্রতি ছিলো সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ টাকা, এখন সেখানে দিতে হয় ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা। যাত্রীর তুলনায় পর্যাপ্ত সিএনজি অটোরিকশার থাকলেও কুমারগাও বাসস্ট্যন্ডের অটোরিকশা চালকদের সিন্ডিকেটের কারণে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয় যাত্রীদের।
এমন অবস্থা পুরো সিলেট নগরের। সিলেটে গত তিন বছরে ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বে চালকদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন দুইজন। এর মধ্যে চলতি বছরের ১ মার্চ নগরীর বন্দর বাজার রাজাজিসি হাই স্কুলের সামনে বেশি ভাড়ার প্রতিবাদ করায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের হামলায় আমিরুল ইসলাম নামে এক যুবক নিহত হন।
এর আগে ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি নগরীর কোর্টপয়েন্ট এলাকায় অতিরিক্ত ভাড়ার প্রতিবাদ করায় পরিবহন শ্রমিকদের হামলায় অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তা মওদুদ আহমেদ খুন হন। দুটি মামলা আদালতে বিচারাধীন। এই ভয়ে এখন আর কেউ প্রতিবাদ করারও সাহস পান না। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই যেতে হয় যাত্রীদের।
এর ফলে বিপাকে পরছেন সাধারণ যাত্রীরা। বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে প্রায়ই, সময় ভেদে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। সিটি করপোরেশন থেকে নগরীর রিকশার ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তা মানছেন না রিকশাচালকরা। আর সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া নির্ধারণ করে স্থানীয় শ্রমিক সংগঠনগুলো।
তাছাড়া তিনজন যাত্রী নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হয় পাঁচজন যাত্রী। বন্দর বাজার থেকে টিলাগড় একজনের ভাড়া ১৫ টাকা হলেও সময়ভেদে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা। বিশেষ করে রাতের বেলা এক প্রকার জিম্মি করেই আদায় করা হচ্ছে এই বাড়তি ভাড়া ।
একজন ভুক্তভোগী জানান, অটোরিকশার চালকেরা ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করে। নগরের বন্দরবাজার থেকে টিলাগড় সিএনজি অটোরিকশার জনপ্রতি ভাড়া ১৫ টাকা হলেও মিরাবাজার আসলেও সমপরিমাণ টাকা দিতে হয়। অনেক সময় আরো বেশি দিয়ে আসতে হয়। এগুলো দেখার কেউ নেই। সিলেটে টাউন বাস না থাকায় আমরা বিপাকে পড়েছি।
সিএনজিচালিত একজন অটোরিকশা চালক বলেন, মালিকের জমা ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই ভাড়া বেশি নিতে হচ্ছে।
সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি মো. জাকারিয়া বলেন, সিএনজি ভাড়া আসনে সরকার ধারা নির্ধারণ করা হয় না, ২০১৫ সালের গেজেট অনুযায়ী সিএনজি মালিক সমিতি ভাড়া নির্ধারণ করে থাকে। বাড়তি ভাড়া নেয়ার বিষয়ে অভিযোগ আসলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
Leave a Reply