মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২২

দেশে দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন

দেশে দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন

শীর্ষবিন্দু আর্ন্তজাতিক নিউজ / ৬৪
প্রকাশ কাল: বুধবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৪

ঈদুল ফিতরের ছুটির মধ্য দিয়ে শেষ হয় পবিত্র রমজান মাস। বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে বুধবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হচ্ছে পারিবারিক পুনর্মিলন, নতুন পোশাক পরিধান, মিষ্টান্ন খেয়ে ও ঈদের নামাজ পড়ার মধ্য দিয়ে।

ঈদ উপলক্ষে মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতারা।

বুধবার ঈদুল ফিতর উদযাপন হচ্ছে সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কুয়েত, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াসহ অনেক দেশে। বাংলাদেশ ও ভারতে বৃহস্পতিবার ঈদ উদযাপন করা হবে।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় দেশটির প্রায় তিন-চতুর্থাংশ মানুষ নিজেদের বাড়ি ফিরেছেন। স্থানীয়ভাবে এই বাড়ি ফেরাকে ‘মুডিক’ বলা হয়। এই বাড়ি ফেরায় সবসময় মানুষের মধ্যে আনন্দ থাকে।

জাকার্তায় বসবাস করা দেশটির সরকারি কর্মী রিধো আলফিয়ান দক্ষিণাঞ্চলীয় সুমাত্রা দ্বীপের লুম্পুং প্রদেশে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, মুডিক শুধু আমাদের কাছে বার্ষিক রীতি বা ঐতিহ্য নয়। এটি হলো পুনর্মিলনের সঠিক সময়। এ যেন বাড়ি থেকে প্রায় এক বছর দূরে থাকায় যে শক্তি ক্ষয় হয়েছে তা পুনরায় তা সঞ্চয় করা।

ঈদুল ফিতরের ছুটি শুরুর আগে বাজার ও মার্কেটগুলোতে নতুন পোশাক, জুতো, বিস্কুট ও মিষ্টি কিনতে মানুষেরা ভিড় করেছেন। বড় বড় শহর থেকে মানুষ প্রিয়জনদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গ্রামে ফিরেছেন। ফ্লাইটগুলোতে ছিল টিকিটের সংকট। উদ্বিগ্ন আত্মীয়রা উপহারের বাক্স নিয়ে বাস ও ট্রেন স্টেশনগুলোতে দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়েছেন।

সৌদি আরবে ঈদুল ফিতর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। দিবসটি উদযাপনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির বৃহত্তম দুই শহর মক্কা ও মদিনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বড় দুটি জামাত। মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ ও মদিনার মসজিদে নববীতে জামাতগুলো অনুষ্ঠিত হয়।

ঈদ উপলক্ষে দেশটির রীতি অনুযায়ী বাড়িতে বাড়িতে খাবার ও উপহার দেওয়া হচ্ছে। সৌদিবাসী ও বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিমকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন শহরে ঈদের নামাজ শেষেশুরু হয়ে গেছে উৎসব। সবাই কোলাকুলি ও ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট বিশের মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

পাকিস্তানে মসজিদ ও বাজারগুলোতে এক লাখের পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করেছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবারও বাজার সদাই করেছেন দেশটির মানুষেরা। নারীরা নিজেদের ও সন্তানদের জন্য কিনেছেন চুড়ি, অলঙ্কার ও পোশাক।

ইন্দোনেশিয়ার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বলেছে, চলতি বছর ঈদের ছুটিতে বাণিজ্যের পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে পাইকারি, ট্রানজিট ও পর্যটন খাত।

দুই সন্তানের মা অরিনি দেওয়ির কাছে ঈদের দিন হলো রমজানের অর্থনৈতিক চাপ থেকে জয়। তিনি বলেন, খাবারের মূল্যবৃদ্ধির পরও ঈদের ছুটি উদযাপন করতে পেরে আমি খুশি।

জাকার্তা বাসিন্দাদের মধ্যে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জুসুফ কাল্লা আল আজহার মসজিদের প্রাঙ্গণে ঈদের নামাজ পড়েছেন। তিনি বলেছেন, আসুন ঈদুল ফিতরকে অনেক কষ্ট থেকে বিজয়ের দিন হিসেবে উদযাপন করি।

অবশ্যই পবিত্র রমজান মাসে অনেক সামাজিক সমস্যা ছিল। কিন্তু আমরা ঈমান ও তাকওয়া দিয়ে তা কাটিয়ে উঠতে পারি। ঈদের আগের রাতে জাকার্তার বাসিন্দারা ‘তাকবিরান’ হিসেবে উদযাপন করেন।

উদযাপনের অংশ হিসেবে তারা রাস্তায় আতশবাজি পোড়ান। শহুরে বাসিন্দারা গ্রামে চলে যাওয়াতে বেশিরভাগ রাস্তাই তখন ফাঁকা থাকে।

বুধবার সকালে মসজিদ ও ঈদগাহে ঈদের নামাজে যোগ দিয়েছেন মুসলিমরা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম জাকার্তার ইসতিকলাল গ্র্যান্ড মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নেমেছিল।

ইমামরা তাদের খুতবায় ছয় মাসের যুদ্ধে দুর্ভোগে থাকা গাজার মুসলিমদের জন্য প্রার্থনা করেছেন।

ইন্দোনেশিয়ার মসজিদ কাউন্সিলের উপদেষ্টা বোর্ডের চেয়ার জিমলি আশিদ্দিকি বলেছেন, মুসলিম ও অমুসলিমদের মানবিক সংহতি দেখানোর এটিই সময়, কারণ গাজার সংঘাত কোনও ধর্মীয় যুদ্ধ নয়, বরং একটি মানবিক সমস্যা।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

All rights reserved © shirshobindu.com 2024