যুক্তরাজ্যে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের সদস্য হয়ে হোম অফিসে এসাইলাম আবেদন করা অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে।
গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বর্তমানে এই সময়ে বাংলাদেশি ‘ল’ ফার্মগুলোতে এর প্রতিচ্ছবি লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিটি ফার্মেই বেড়েছে ক্লায়েন্টের সংখ্যা।
ধারণা করা হচ্ছে, গত দুই সপ্তাহে হোম অফিসে প্রায় দুই হাজারের মত নতুন ক্লেইম হয়েছে যারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থক দাবি করেছেন। আবেদন কারীরা বলছেন, আওয়ামী লীগ করার কারণে বাংলাদেশে তাদের জীবন হুমকির মুখে।
তবে অনেক বাংলাদেশি আইনজীবী বলছেন, এখন যারা আওয়ামী লীগের হয়ে এসাইলাম আশ্রয়ের জন্য দরখাস্ত করছেন তাদের কেউই ৫ই আগস্টের পর আসেনি। সবাই এসেছেন পূর্বের বিভিন্ন মেয়াদে, এদের মধ্যে বেশিরভাগই স্টুডেন্ট ও কেয়ার ওয়ার্কার হিসেবে।
আবেদনকারীর বেশিরভাগই হোম অফিস কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন, তাদেরকে হোম অফিস বিশ্বাস করেনি তবে এদের কেউ কেউ ইমিগ্রেশন আদালতে আপিল করে কৃতকার্য হয়েছেন যার সংখ্যা খুবই কম।
বর্তমানে আওয়ামী লীগের হয়ে ক্লেইম করা অধিকাংশই বাংলাদেশে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে ‘ল’ ফার্ম সূত্রগুলো বলছে।
যুক্তরাজ্যে প্রাকটিসরত একজন আইনজীবী জানান, বর্তমানে এসাইলাম আবেদন করতে আসা বেশিরভাগ আবেদনকারী তাঁদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন, এ রকম অন্যান্য ফার্মগুলোতেও একই খবর পাওয়া যাচ্ছে।
তবে গত দুই সপ্তাহে আওয়ামী লীগের হয়ে কতজন বাংলাদেশি এসাইলাম আবেদন করেছেন এর প্রকৃত হিসাব হোম অফিসে তথ্য অনুসারে জানা যাবে। হোম অফিসে থেকে এ বিষয়ে মোট হিসাবের তথ্য পেতে আরো তিন মাস সময় লাগতে পারে।
গত দুই তিন বছর ধরে বিএনপির হয়ে আবেদন করা অমীমাংসিত এসাইলাম আবেদনগুলোর কি হবে?
এ বিষয়ে এই আইনজীবী বলেন, যেহেতু বিএনপির হয়ে এসাইলাম করা ব্যক্তিদের মূল ভয় বা শত্রু ছিল আওয়ামী লীগ সরকার সেহেতু আওয়ামী লীগ এখন সরকারে নেই তাই অমীমাংসিত বা পেন্ডিং এপ্লিকেশনগুলোর সিদ্ধান্ত পজেটিভ আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
এ ক্ষেত্রে বিএনপির হয়ে করা এসাইলাম দরখাস্তকারীদের বাংলাদেশে আর কারো দ্বারা জীবননাশের আশঙ্কা, ভয় বা অন্য কোন শত্রু আছে কিনা খুঁজতে হবে, এরকম কারণ ও প্রমাণ বের করতে পারলে পেন্ডিং এপ্লিকেশন গুলোতে পজেটিভ রেজাল্ট আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, স্টুডেন্ট ও কেয়ার ওয়ার্কার হিসেবে আসা বড় একটি অংশ ৫ই আগস্টের পূর্বে এসাইলাম ক্লেইম করেছেন এদের প্রায় সবাই বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থক হয়ে এসাইলাম ক্লেইম করেছেন।
বিএনপির হয়ে ক্লেইম করা শতকরা ৮০% বাংলাদেশে কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না বলে বলে হোম অফিসের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়েছে।
Leave a Reply