গত জুলাইতে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সাংসদ জেরেমি করবিন এবং আরও চার ফিলিস্তিনপন্থি সংসদ সদস্য আরও প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) প্রতিনিধি পরিষদ হাউজ অব কমন্সে স্বাধীন জোট নামে একটি সংসদীয় দল গঠন করেছেন।
পাঁচ সদস্য নিয়ে পার্লামেন্টের এই দলটির যাত্রা শুরু হলেও নতুন সাংসদরাও এতে যুক্ত হতে পারবেন। গত জুলাইয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে ভোট দেওয়ায় অন্য ছয় লেবার পার্টির এমপির সঙ্গে আপসানা বেগমও লেবার পার্টি থেকে বরখাস্ত হন।
করবিনের রাজনৈতিক ঘনিষ্ট অনুসারী এবং আপসানা বেগম ও জারাহ সুলতানা জেরেমি করবিনের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন এমন আলোচনা চলছিল।
ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে সবচেয়ে সোচ্চার লেবার পার্টির এমপিদের মধ্যে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি এমপি আপসানার নাম রয়েছে। দলীয় নীতির বাইরে গিয়ে বাকী তিন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপির তুলনায় তিনি বারবার ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের পক্ষে সরাসরি কথা বলেছেন।
তবে সব আলোচনাকে পেছনে ফেলে শেষ পর্যন্ত জেরেমির সঙ্গে যোগ না দিয়ে আপাতত স্বতন্ত্র হিসেবে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আপসানা। পরবর্তীতে আবারও দলে ফেরার আশায় থাকাকেই আপাতত বিবেচনা করেছেন তিনি।
করবিনের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সাবেক লেবার নেতা আইলিংটন নর্থ, শকট অ্যাডাম (যিনি লেস্টার দক্ষিণে জোনাথন অ্যাশওয়ার্থকে পরাজিত করেছিলেন), আইয়ুব খান (বার্মিংহাম পেরি বার), আদনান হুসেন (ব্ল্যাকবার্ন), ও ইকবাল মোহাম্মদ (ডেসবারি এবং ব্যাটলি)। একটি যৌথ বিবৃতিতে পাঁচ এই সাংসদ তাদের সঙ্গে অন্যদেরও যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা পার্লামেন্টে আশাজনক প্রস্তাব রাখার জন্য আমাদের ভোটারদের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছিলাম। তারা ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়। আমরা একটি সত্যিকার বিকল্পের আহ্বান জানাচ্ছি। যত বেশি সাংসদ এই নীতিগুলোর পক্ষে দাঁড়াতে প্রস্তুত, ততই ভালো। আমাদের দরজা সব সময় অন্য সেসব সংসদ সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত যারা আরও সাম্য ও শান্তিপূর্ণ বিশ্বে বিশ্বাসী।
টাওয়ার হ্যামলেটসের সাবেক কাউন্সিলর, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আদি বাসিন্দা মরহুম মনির উদ্দীন আহমেদের কন্যা আপসানার লেবার পার্টির হাত ধরেই রাজনীতিতে উত্থান এবং ২০১৯ সালে প্রথমবার মনোনয়ন পান সাবেক দলীয় শীর্ষনেতা বামপন্থি জেরেমি করবিনের হাত ধরে।
দলের তৎকালীন শীর্ষ নেতার সরাসরি আনুকুল্য পাওয়ায় ইর্ষাজনিত কারণে নিজ সংসদীয় আসনে লেবার পার্টির বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একটি বড় অংশের প্রকাশ্য বিরোধিতার মুখোমুখি হন। জেরেমি স্যার কিয়ার ষ্টারমার দলের শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হবার পর, পুরনো শীর্ষ নেতার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা বিপাকে পড়েন আপসানা।
উল্লেখ্য, ব্রিটেনের রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী বা বিরোধীদলীয় নেতা না হলেও জেরেমি করবিন নামটি সাধারণ মানুষের কাছে এক বিশ্বস্ত রাজনীতিবিদের সমার্থক প্রায়।
Leave a Reply