লন্ডন ভিত্তিক চ্যারিট্যাবল অর্গানাইজেশন, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ ইউকে (এফওবি), যা ১৯৮১ সাল থেকে বাংলাদেশ এবং এর বাইরে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নয়নে কাজ করে আসছে। সম্প্রতি অর্গানাইজেশনটি তাদের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির পরিচয় এবং ভবিষ্যতের প্রকল্পগুলির উন্মোচন করেছে।
গত ২রা সেপ্টেম্বর লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির পরিচিতি প্রদান করে এবং তাদের বিভিন্ন পরিকল্পিত প্রকল্প উন্মোচন করে। এই অনুষ্ঠানটি কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ, অর্গানাইজেশনের সদস্য, সাংবাদিক, এবং মিডিয়ার উল্লেখযোগ্য মনোযোগ আকর্ষণ করে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সলিসিটর মোঃ ইমতিয়াজ হোসেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন সংস্থাটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব সৈয়দ আরিফ হোসেন কাজী।
নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি গত ২৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে এফওবি একটি নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচন করে, যারা আগামী দুই বছর সংগঠনকে নেতৃত্ব দেবে। নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যরা হলেন: সভাপতি- ডাঃ মোঃ জিয়াউল হক, সহ-সভাপতি- ডাঃ আমির আলী, সৈয়দ আরিফ হোসেন কাজী, সৈয়দ হামিদুল হক, মিস খাদিজা নাসিম মিলি, সাধারণ সম্পাদক- ডাঃ মোহাম্মদ আজিজ, যুগ্ম সচিব- সলিসিটর মোঃ ইমতিয়াজ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ- মোঃ নুরুল ইসলাম, সদস্য সচিব- মোহাম্মদ আলাউদ্দিন সোহেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- ডাঃ এন আখতার পলিন, সামাজিক সম্পাদক- নাসরীন আজিজ, মিডিয়া সেক্রেটারি- এস বেগম আক্তার।
সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মোহাম্মদ আজিজ তার বক্তব্যে বলেন, কমিটিতে বিভিন্ন পেশাদার ব্যাকগ্রাউন্ডের বিশিষ্ট সদস্যদের একটি শক্তিশালী কাউন্সিলও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যারা এফওবি এর মিশনকে এগিয়ে নিতে তাদের দক্ষতার অবদান রাখবে। উক্ত কাউন্সিল সদস্যরা হলেন- ডাঃ এ.টি.এম. মান্নান, কাউন্সিলার পারভেজ আহমেদ, ডাঃ এস এইচ জায়গিরদার, অ্যাডভোকেট আলী আকবর কাদের, ডাঃ হামিদুল হক, মতিউর রহমান, ডাঃ মুরাদ মতিন, ডাঃ আবু সাঈদ খান, মোঃ ওবায়দুল্লাহ, ডাঃ ফারুকুল ইসলাম, ডাঃ শম্পা দেওয়ান, নাজমা খোন্দকার।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- পূর্ববর্তী কমিটির প্রাক্তন সভাপতি, জনাব মাহবুব ইজদালী খান, সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশের প্রধান প্রকল্প সমন্বয়কারী, ডাঃ এম আব্দুল আউয়াল এবং সাবেক সভাপতি, ডাঃ আব্দুল মজিদ। পূর্ববর্তী কমিটির নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে নতূন কমিটিকে সর্বাত্তক সহযোগীতার আশ্বাস প্রদান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে, এফওবি এর নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি, ডাঃ মোঃ জিয়াউল হক, বেশ কয়েকটি মূল উদ্যোগের রূপরেখা তুলে ধরেন যা নতুন কমিটি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সম্পাদন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এর মধ্যে উল্লেখযো হলো-
১. বিশেষায়িত ব্রেস্ট ক্যান্সার হাসপাতাল: এফওবি বাংলাদেশে একটি বিশেষায়িত স্তন ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এই হাসপাতালটি স্তন ক্যান্সারের রোগীদের জন্য ব্যাপক যত্ন এবং সহায়তা প্রদান করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
২. মোবাইল ব্রেস্ট ক্যান্সার ডিটেকশন ইউনিট: এফওবি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে তাদের একটি মোবাইল ব্রেস্ট ক্যান্সার ডিটেকশন ইউনিট মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে, যা সারা বাংলাদেশে ভ্রমণ করে স্ক্রীনিং পরিষেবা সরবরাহ করবে।
৩. বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও ত্রাণ: এফওবির আরো আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে সাম্প্রতিক বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসন সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
৪. দরিদ্র জনসংখ্যার জন্য সহায়তা: এতিম, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং দরিদ্র শিশুদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
৫. শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি: সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য শিক্ষাগত অ্যাক্সেস এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে কার্যক্রম শুরু হবে।
৬. আর্থিক সহায়তা এবং ক্ষুদ্রঋণ: উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক সহায়তা ও ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করা হবে।
সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশের প্রধান প্রকল্প সমন্বয়কারী, ডাঃ এম আব্দুল আউয়াল তার বক্তব্যে বার্ষিক তহবিল সংগ্রহের জন্যে নৈশভোজের ঘোষণা দেন যা ১৯ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে Ilford, UK-এর ক্রিস্টাল ব্যাঙ্কেটিং হলে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে নৈশভোজে কমিউনিটির সকলের উপস্থিতি কামনা করেন!
অনুস্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনাব মাহবুব ইজদালী খান, জনাব সৈয়দ আরিফ হোসেন কাজী, Cllr. পারভেজ আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ জনাব মোঃ নুরুল ইসলাম, তারা বলেন এফওবি দীর্ঘ ৪৩ বছর মানুষের আশা ও সমর্থনের আলোকবর্তিকা হয়ে আছে। এটি মানুষের জন্য টেকসই উন্নয়ন এবং ইতিবাচক পরিবর্তন তৈরি করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটে নবনির্বাচিত সভাপতি ডাঃ মোঃ জিয়াউল হক এবং সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মোহাম্মদ আজিজের বক্তব্যের মাধ্যমে, যারা উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে এবং এর বাইরে স্থায়ী প্রভাব ফেলতে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তারা অনুস্ঠানের শেষের দিকে একটি প্রশ্নোত্তর অধিবেশনের মাধ্যমে সংস্থার কৌশলগত দিক সম্পর্কে আরও অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেন।
Leave a Reply