সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার পর পুলিশ সদস্যদের ওপর নাগরিকদের আস্থা একপ্রকার তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।
পুলিশের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়েছেন অনেক মানুষ। এর কারণ অবশ্য পুলিশ নিজেরাই। যার ফলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে পুলিশ বিভাগকে।
জনগণের আস্থা ফেরাতে তাই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে প্রায় ৬০০ পুলিশ কর্মকর্তাকে। শুধু তাই নয় বরখাস্তকৃত এসব কর্মকর্তাদের পুনরায় চাকরিতে ফিরে আসাও নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ বিভাগ।
পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতে এমন চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে।
মঙ্গলবার কলেজ অব পুলিশিংয়ের প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায় চলতি বছরের ৩২ মার্চ পর্যন্ত ৫৯৩ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুতি এবং নিষিদ্ধ করার শাস্তি দেওয়া হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি।
ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের ৪৩টি পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা এই শাস্তির আওতায় এসেছেন বলে জানা যায়।
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের মধ্যে ৭৪ জনের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তা ও অসদাচরণ এবং ১৮ জনের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনের সামগ্রী রাখার অভিযোগ উঠেছিল।
পুলিশ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করার সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলো ছিল অসততা এবং বৈষম্যমূলক আচরণ, পুলিশের কাছে অসততার ১২৫টি এবং বৈষম্যমূলক আচরণের ৭১টি অভিযোগ ছিল।
কলেজ অব পুলিশিংয়ের অপারেশনাল স্ট্যান্ডার্ডের পরিচালক সহকারী চিফ কনস্টেবল টম হার্ডিং জানান, বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের আচরণ অত্যন্ত হতাশাজনক ছিল।
তবে বরখাস্তের এসব ঘটনার মাধ্যমে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের দ্রুত শনাক্তকরণ, তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিষ্পত্তি করা এবং ভবিষ্যতে এসব কর্মকর্তাদের পুলিশের ভূমিকা পালন থেকে প্রতিরোধ করার জন্য পুলিশ বিভাগের কার্যকর ও শক্তিশালী পদ্ধতি রয়েছে।
পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, বরখাস্তের এসব ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যেসব কর্মকর্তা ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের পুলিশ বাহিনীর মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয় তাদের জন্য লুকিয়ে থাকার কোনো জায়গা নেই।
২০২১ সালে লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্মকর্তা ওয়েন কুজেনস দ্বারা ৩৩ বছর বয়সী মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ সারাহ এভারার্ডকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন পুলিশ বিভাগের প্রধানরা জনগণের আস্থা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন।
সে সময় থেকেই পুলিশে বরখাস্তের ঘটনা বাড়তে থাকে। গত বছর আরেক মেট্রোপলিটন পুলিশ অফিসার ডেভিড ক্যারিককে ১২ জন নারীর বিরুদ্ধে ডজনখানেক ধর্ষণ ও যৌন অপরাধের জন্য ন্যূনতম ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
Leave a Reply