বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:২৭

ভারতে হিন্দুদের চাপে বাড়ি ছাড়ছেন মুসলিম দম্পতি

ভারতে হিন্দুদের চাপে বাড়ি ছাড়ছেন মুসলিম দম্পতি

ভারতের উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদ শহরের একটি অভিজাত এলাকায় নতুন বাড়ি কিনেছিলেন এক মুসলিম চিকিৎসক দম্পতি।

কিন্তু স্থানীয় হিন্দু প্রতিবেশীরা তাদেরকে ওই বাড়িতে উঠতে দেননি। প্রতিবেশীদের দাবি, এলাকাটি হিন্দু অধ্যুষিত হওয়ায় অন্য সম্প্রদায়ের কাউকে সেখানে থাকতে দিতে চান না তারা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিবাদের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

ভিডিওতে মেঘা অরোরা নামে একজন প্রতিবেশীকে বলতে শোনা যায়, আমাদের মন্দিরের সামনে মুসলিম পরিবারকে থাকতে দেয়া যায় না। এটি আমাদের নারীদের জন্যও একটি নিরাপত্তার প্রশ্ন।

ওই বাড়িটির আগের মালিক ড. অশোক বাজাজ জানিয়েছেন, সমঝোতার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুসলিম দম্পতি ওই বাড়িটি এখন একটি হিন্দু পরিবারের কাছে পুনরায় বিক্রি করবেন।

তবে ড. অশোক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই ঘটনায় বোঝা যায়, আমাদের শহরের পরিবেশও বদলে যাচ্ছে। আমি কখনোই এমনটা আশা করিনি।

ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও নীতিশাস্ত্রের অধ্যাপক তানভীর আইজাজ বিবিসিকে বলেছেন, ধর্মীয় মেরুকরণ এখন গ্রাম থেকে শহরেও শেকড় গাড়ছে। এটি সম্পূর্ণ সংবিধানবিরোধী এবং একটি মানুষের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।

বিষয়টি সামনে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই নিন্দা করেছেন। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য জন ব্রিটাস এক্সে দেয়া এক পোস্টে বলেছেন, আমরা সবসময় ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য’ নিয়ে গর্ব করি। কিন্তু এমন ঘটনার জন্য আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত।

প্রসঙ্গত, ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা, বিশেষত মুসলিমরা বহু বছর ধরে বৈষম্যের শিকার। বিজেপি শাসনামলে এ ধরনের ঘটনা আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ মানবাধিকার সংস্থাগুলোর।

মোরাদাবাদের এই ঘটনাটি কেবল একটি বাড়ি বিক্রি নয়, বরং ভারতে বাড়তে থাকা ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ, যা সংবিধানের মৌলিক মূল্যবোধকেও চ্যালেঞ্জ করে।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024