শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:৫৯

মিডিয়া হতে পারে কল্যাণের কেন্দ্র

মিডিয়া হতে পারে কল্যাণের কেন্দ্র

হাসনাইন হাফিজ: মিডিয়া সমাজের দর্পণ। মানুষের শান্তি, সচেতনতা ও স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজন মিডিয়ার আশ্রয়। মানুষের সুখ-দুঃখ, উন্নতি-অবনতি অনেক কিছুই আজ মিডিয়ানির্ভর। মিডিয়ার মাধ্যমে কুসংস্কার, কুশিক্ষা, বন্ধ করে নৈতিক মূল্যবোধ সংরক্ষণের মাধ্যমে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য বিকশিত করাও সম্ভব। যদিও একশ্রেণীর অসাধু, সাম্প্রদায়িক ও ধর্মবিদ্বেষী গোষ্ঠী নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থের লক্ষ্যে অশ্লীলতা ও ধর্মবিকৃতির মাধ্যমে সামাজিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতাকে অস্থির করে তুলছে। অনেক মুসলমানও নিজেদের স্বকীয়তা ভুলে গিয়ে পশ্চিমাদের জীবনবোধ, দর্শন ও সভ্যতা-সংস্কৃতি সমাজের মানুষের ওপর জবরদস্তিমূলকভাবে চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

বেশিরভাগ চ্যানেল নিজস্ব সংস্কৃতির স্বকীয়তা, আদর্শ, মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যকে বিনষ্ট করে দিয়ে ধর্মবিদ্বেষী, অশ্লীল আধিপত্য সারাবিশ্বে প্রতিষ্ঠা করার অপপ্রয়াস লক্ষণীয়। বিশ্বের প্রতিটি জনপদ আজকের বৈষম্যের বিশ্বায়ন ও আগ্রাসনের এক কঠিন বাস্তবতা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছে। বিদেশি শক্তির সর্বাত্মক আগ্রাসনের মোকাবিলায় স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিরোধ ক্ষমতা দিন দিন নিঃশেষ হয়ে আসছে। তাদের অন্ধ অনুকরণে আমাদের অনেক মিডিয়াও সে পথে হাঁটতে অতি উত্সাহ প্রদর্শন করছে। ধর্মকে বিকল করে দিচ্ছে ইসলামের নামে, ইসলামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিধান ও ইসলামের নবীর শানে অশিষ্টাচারকারীদের বন্দনা নির্লজ্জ করতে দেখা যায়। মহানবী (সা.) সংবাদ সংগ্রহের ব্যাপারে সর্বোচ্চ নীতি ও সতর্কতা প্রদর্শন করতেন। তিনি তাঁর সাহাবায়ে কেরামের মধ্য থেকে দক্ষ, বিশ্বস্ত, নির্ভীক ও জ্ঞানী একটি দলকে প্রয়োজনে এ ব্যাপারে নিয়োজিত রেখেছিলেন। তিনি মনে করতেন, মিথ্যা প্রচার করা তো যাবেই না, মিথ্যার আশ্রয় নেয়াও যাবে না। এমনিতেই একটা শোনা কথা বিশ্বাস করা যেতে পারে, তবে গণমানুষের কল্যাণের স্বার্থে তা প্রচার করা মিথ্যারই নামান্তর। ইরশাদ হয়েছে, ‘কারও মিথ্যুক হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট, যে ব্যক্তি কোনো সংবাদ শুনে কোনোরকম যাচাই-বাছাই ছাড়াই প্রচার করতে থাকে।’ (মুসলিম)

এ থেকে বোঝা যায়, সংবাদ সংগ্রহে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া তো দূরের কথা, চাক্ষুস প্রমাণ ও সংবাদ সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে শোনা সংবাদ প্রচার করে ফেলাটাও অপরাধ। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, সমাজে সত্য প্রতিষ্ঠার বাহন আর মিথ্যার মূলে কুঠারাঘাত করার সর্বোত্তম পন্থা হিসেবে মিডিয়ার ভূমিকা বাঞ্ছনীয়। অসত্য, কল্পনাপ্রসূত এবং ধারণানির্ভর সংবাদ সমাজে শুধু ফিতনা-ফ্যাসাদ ও বিপর্যয়ই সৃষ্টি করে না বরং হত্যা, নির্যাতন ও অনাকাঙ্ক্ষিত নানা বিপত্তির সূত্রপাত ঘটায়। এজন্য মিডিয়াকে সত্য-মিথ্যা, সঠিক-ভুল ও হিতাহিত বিষয়াদির প্রতি অত্যন্ত যত্নবান হতে হবে। মিডিয়াকর্মীদেরও আমানতদার, বিশ্বস্ত, ধৈর্যশীল ও আদর্শ পথের রাহবার হওয়া উচিত। সেটি করতে পারলে তারাই হবেন মহান আল্লাহর স্বীকৃত মুত্তাকি বা পুণ্যবান ব্যক্তি। কেননা পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘প্রকৃত পুণ্যবান তারাই, যারা ওয়াদা করলে তা পূরণ করে। দারিদ্র্য, সংকীর্ণতা ও বিপদের সময় এবং হক-বাতিলের দ্বন্দ্ব-সংগ্রামে পরম ধৈর্য অবলম্বন করে। বস্তুত, তারা প্রকৃত সততাসম্পন্ন, সত্যাশ্রয়ী এবং তারাই সত্যিকার মুত্তাকি।’ (সূরা বাকারা : ১১৭)

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024