শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:২৪

আফতাব চৌধুরীর হাসতে নেই মানা

আফতাব চৌধুরীর হাসতে নেই মানা

নাজমুল ইসলাম মকবুল: প্রায় প্রতিদিনই জাতীয় ও স্থানীয় কোন না কোন পত্র পত্রিকায় আবার প্রায়দিনই কয়েকটি জনপ্রিয় পত্রিকায় যার ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামের রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য দিক নির্দেশনামুলক লেখা প্রকাশিত হয়ে অগণিত পাঠকের মনের খোরাক যুগায় তিনি হচ্ছেন বৃক্ষ রোপন ও পরিবেশ আন্দোলনের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় প্রথম পুরস্কার প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে স্বর্নপদকপ্রাপ্ত খ্যাতিমান সাংবাদিক ও কলামিস্ট আফতাব চৌধুরী। সমসাময়িক বিষয়আশয়ের উপর কলামতো বটেই প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে আফতাব চৌধুরীর যতগুলো লেখা আমরা প্রতিনিয়ত পত্র পত্রিকায় দেখতে পাই তাতে অবাক না হয়ে পারা যায় না। লেখালেখিতে শ্রম ঘাম মেধা মনন ও সময় দিয়ে সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য বিশাল মণি মানিক্যের ভান্ডার উপহার দিয়ে যাচ্ছেন বৃক্ষপ্রেমিক, অতিথিপরায়ন, সুবক্তা সর্বোপরী একজন নীরব কলমযোদ্ধা আমাদের সিলেটবাসীর অহংকার আফতাব চৌধুরী।
লেখকের ইদানিং, সত্যের মুখোমুখী, আলোর সন্ধানে, ইতিকথা, জীবন ও জগৎ, কৌতুক, নির্বাচিত কলাম, নজরুল প্রতিভার নানা দিগন্ত, প্রত্যাশার দিগন্তে কালো মেঘ, হাসতে নেই মানা শিরোনামের দশ দশটি প্রকাশিত বই হচ্ছে এর জ্বাজল্যমান প্রমাণ। আলোচিত বইটি লেখকের প্রকাশিত বইসমুহের মধ্যে দশম বই। যে কোন সাহিত্য আড্ডা, সাহিত্য সভা, সেমিনারে আফতাব চৌধুরীকে দাওয়াত দিলে সময়মতো হাজির হওয়া তাঁর একটি জাত অভ্যাস। এছাড়া অনেক বক্তাকে বক্তব্য সংক্ষেপ করার জন্য বার বার স্লিপ দিতে হয়। কিন্তু আফতাব চৌধুরী বক্তব্য প্রদানের সময় আগাগোড়া বিচার বিশ্লেষন করেই সংক্ষিপ্ত অথচ সারগর্ভ বক্তব্য প্রদান করায় এক্ষেত্রে স্লিপ দেবার চিন্তাও করতে হয়না। বক্তব্যের শেষ পর্য্যায়ে চমৎকার ভঙ্গিমায় রঙ্গ রসে ঠাসা একটি লোভনীয় কৌতুক পরিবেশন করে সকলকে আনন্দে ভাসিয়ে দিতে জুড়ি নেই যার সেই বহুমাত্রিক লেখক আফতাব চৌধুরী ২০১২ সালের মে মাসে উপহার দিলেন ১৭৬ পৃষ্টার বিশাল একটি হাস্য কৌতুকের চকচকে অথচ ব্যতিক্রমী বই ‘হাসতে নেই মানা’। সত্যিই এ যেন এক জীবন্ত রসের হাড়ি কিংবা প্রাণখোলা হাসির ঝিলিক।
বইটির প্রকাশক হামনা খানম চৌধুরী, অলংকরণ সুব্রত পাল, মুদ্রক গ্রাফিক ইউনিভার্সেল, সিলেট। চমৎকার প্রচ্ছদ এঁকেছেন মাল্টিমিডিয়াতে বিএসএস ডিপ্লোমাধারী সিলেটের খ্যাতিমান গ্রাফিক্স ডিজাইনার মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান। মূল্য একশত টাকা, তিন মার্কিন ডলার, দুই পাউন্ড।
বইটির ভুমিকা লিখেছেন দেশের খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক-কলামিস্ট ইউসুফ শরীফ। তিনি লিখেছেন “আফতাব চৌধুরীর অনেক পরিচয়ের মধ্যে আরেক পরিচয় তিনি সদা হাসিখুশি মানুষ। অসম্ভব হাস্যরসপ্রিয়ও বটে। তাঁর বন্ধু ও পরিচিত জনেরা এ পরিচয়টি ভালই জানেন। অনেক জটিল ও সমালোচনাযোগ্য বিষয়ও তিনি হাস্যরস সহযোগে প্রকাশ করতে পারঙ্গম। তিনি জানেন, হাসি মানুষের আত্মার খোরাক। হাস্যরস অনেক জটিল বিষয়ের বা তীক্ষè সমালোচনার প্রকাশকেই শুধু সহজ ও সাবলীল করে তোলে না, বরং নির্মলও করে তুলতে পারে। এর ফলে মানুষকে ভেতর থেকে সংশোধনের সুযোগ তৈরি হতে পারে। আফতাব চৌধুরীর ‘হাসতে নেই মানা’ গ্রন্থে এর অসংখ্য নজির রয়েছে, যা যে কোন বয়সের মানুষের জন্যই উপভোগ্য।’’
রসে রসে ঠাসা প্রায় ছয়শ কৌতুকের শেষ পর্য্যায়ে লেখক পরিচিতি ও গুণীজনের মন্তব্য লিখেছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী। শুরুতেই তিনি লিখেছেন ‘দেশের কোন না কোন পত্রিকায় প্রায় প্রতিদিন যার অন্তত একটা লেখা প্রকাশিত হয়, যার লেখার ব্যাপ্তি টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, ধর্ম থেকে ব্রহ্ম, রাজপ্রাসাদ থেকে কুড়ে ঘর, আলো থেকে অন্ধকার, সুখ-দুঃখ, সত্য-মিথ্যা, হাসি-আনন্দে ভরা, শুধু কি তাই, দেশের সীমা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক সীমানায় নোঙ্গর করেন-রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, কৃষি, বৃক্ষ, বাণিজ্য, ঐতিহ্য, মনন, মেধা আবিস্কার, পরিবেশ বাস্তবতা এসবের প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ দেন, তিনি ধীমান এবং সব্যসাচি লেখক-সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী।’
এরপর গ্লসি পেপারে চাররঙ্গা প্রিন্টে যে ফটো এ্যালবাম সংযোজন করা হয়েছে তাতে বৃক্ষরোপনে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারের সনদপত্রের কপি, সত্যের মুখোমুখী গ্রন্থের জন্য ইংল্যান্ড এর একটি সংস্থা কর্তৃক দেয়া পুরস্কার ও সনদপত্রের কপি, লেখককে তৎকালীণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ফারুক লেঘারীর দেয়া চিঠির কপিসহ অনেকগুলি দুর্লভ ছবি স্থান পেয়েছে।
মন ভালো করার দাওয়াই হিসেবে বইটি আমার শিয়রের পাশেই থাকে। যে কোন পাঠক পাঠিকারই বিষন্ন মনকে আনন্দ ফুর্তিতে ভরে তুলতে বইটি হাতের কাছে রাখা প্রয়োজন বলে মনে করি। বিষন্নতা থেকে সহজেই মুক্তি, সু-স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী প্রাণখোলা হাসি হাসতে হলে যে ডাক্তারের প্রয়োজন সেই কাঙ্খিত ডাক্তার হচ্ছেন মুখে সদা লেগে থাকা হাসির ঝিলিক লেখক আফতাব চৌধুরী আর প্রেসক্রিপশন হচ্ছে তাঁর সদ্য প্রকাশিত রঙ্গ রসের বই ‘হাসতে নেই মানা’।
আলোচক: সভাপতি, সিলেট লেখক ফোরাম।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024