মিয়ানমারের ন্যাশন্যাল লীগস ফর ডেমোক্রেসি বা এনএলডি নেত্রী অং সান সুচি সেদেশে অবস্থানকারী ক্ষুন্দ নৃ-গোষ্ঠীসহ সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। এই আহবানের পর মিয়ানমার ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী অধিকার বঞ্চিত রোহিঙ্গাদের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে, সৃষ্টি হয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। রোহিঙ্গারা এনএলডি নেত্রীর আহবানের পর বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক মহলকে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানরা জানান, সম্প্রতি মিয়ানমারের কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত এনএলডি’র কয়েক শ’ নেতা-কর্মীর সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে গত সোমবার গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচি সরকারের প্রতি এ আহবান জানান।
উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গা শরণার্থী মাওলানা হাফেজ জালাল, শামশু মাঝি, নুরুল হক মাঝি বলেন, নেত্রীর এ দাবি মিয়ানমার সরকার মেনে নিলে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত রোহিঙ্গারা স্বাচ্ছন্দ্যে মিয়ানমারে ফিরে যাবে। কক্সবাজার ভিত্তিক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘ আহবানকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিলে দীর্ঘকাল জিইয়ে থাকা সমস্যার নিষ্পত্তি হবে। পাশাপাশি মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠা কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার জারিকৃত নাগরিকত্ব আইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের রাষ্ট্রবিহীন নাগরিক ঘোষণা করা হয়। এ নাগরিকত্ব আইনে সরকার মূলত সেদেশে ৩ ক্যাটাগরির নাগরিকত্ব ঘোষণা করেন। তারমধ্যে প্রথম শ্রেণীর নাগরিক (তাইরেন্স) সাধারণ নাগরিক (নাইংচা) ও অতিথি নাগরিক (নাইংক্রাচা) উল্লেখযোগ্য।
এসব ঘোষিত নাগরিকদের জন্য প্রণয়ন করা হয় জাতীয় পরিচয়পত্র বা নাইংচাক্রা ফ্রা। সামরিক জান্তার ঘোষিত নাগরিকত্ব আইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। তবে মিয়ানমারে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের এক ধরনের পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়। তাদের নিকট যে পরিচয়পত্র কার্ড রয়েছে তাতে বাঙ্গালি লুমিউ বা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
Leave a Reply