‘বাংলার ভাগ্যাকাশে আজ দূর্যোগের ঘনঘটা, তার শ্যামল প্রান্তরে রক্তের আল্পনা, শুধু সুপ্ত সন্তান শিয়রে রোরুদ্দমানা জননী নিশি অবসানের প্রহর গননায় রত। কে তাকে আশা দেবে কে তাকে ভরষা দেবে কে জীবন দিয়েও রোধ করবে মরণের এ অভিযান।’ অনেক দিন পর শচীন সেনের লেখা সিরাজউদ্দৌলা নাটকের এই ঐতিহাসিক সংলাপটি বারবার মনে পড়ছে। এ কোন মানুষ আমরা এ কোন জাতি, কোন সমাজে বসবাস করছি! মানুষের মৃত্যুতে ইন্নালিল্লাহ পড়িনা, উল্লাস করি। শোক প্রকাশ করি না আনন্দ প্রকাশ করি, সমবেদনা জানাইনা মিষ্টি বিতরন করি। হত্যার দাবীতে মিছিল করি, রক্তের নেশায় উন্মত্ত হয়ে উঠি। আমরা কি সভ্যতার পথে এগিয়ে চলেছি না এ আমাদের আদিম যুগে প্রত্যাবর্তনের সর্বনাশা মহাযাত্রা! গত কয়েকদিনে যা দেখছি স্তম্ভিত হয়ে পড়ছি। কোথায় সুকুমারবৃত্তি কোথায় মানবিকতা কোথায় নীতি নৈতিকতা! পাঁচ দিনে সরকারের লোকেরা গুলী করে এক শ’র ওপর মানুষ মেরে ফেললো কোন আহা উহু নাই কারও কোন প্রতিক্রিয়া নাই। বড় বড় সংবাদপত্র টিভি টক শো’র টকারদের কাছে যেন কোন ঘটনাই না এটা। আশ্চর্য ব্যপার! এরশাদের নয় বছরের পুরো শাষনকালেও পুলিশ গুলী করে এক শ’ মানুষকে হত্যা করে নাই। পাঁচ দিনে এরা এক শ’র ওপরে মানুষ মেরে ফেললো তারপরও এটা কোন ঘটনা নয়। এক নুর হোসেনকে হত্যার জের ধরে এরশাদের মসনদ টলমল করে উঠলো, এক শ’র ওপরে প্রতিবাদী মানুষ পুলিশের গুলীতে প্রাণ দিলো কোন সু-শীল কু-শীল সমাজহিতৈষী মানবদরদী মানবাধিকার কারবারি নিদেনপক্ষে এই হত্যাকান্ডের নিন্দাটুকু পর্যন্ত করলো না!
কেন করলো না! ওরা জামাত শিবির। যেন জামাত শিবির মানুষ নয়। পথ চলতে গাড়ী চাপায় একটা বিড়াল মারা গেলে আহা বলে উঠি, জামাত শিবির মারা গেলে উল্লসিত হই! কি অদ্ভূত মানসিকতা আমাদের! মানুষকে যারা মানুষ বলে গন্য করে না তারা নিজেরা কি মানুষ! এই অবস্থা আগে ছিলনা। গত চারটি বছর ধরে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এক শ্রেণীর মিডিয়া ক্রমাগত প্রচারণা চালিয়ে মানুষের মনে ঘৃণা বিদ্বেষ সৃষ্টি করেছে। হত্যা চাই ফাঁসি চাই রক্ত চাই জবাই করো রবে মাতম করতে করতে এক শ্রেণীর মানুষ বিকারগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। এদের শুভ অশুভ ন্যায় অন্যায় ভালমন্দ বোধগুলো অবলুপ্ত হয়ে গেছে। এরা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে মানুষ বলেই গন্য করে না। নিজেরা ছাড়া অন্য কারও বেঁচে থাকার অধিকারও স্বীকার করে না। আমরা যেন আজ পশ্চিমের ভ্যাম্পায়ার উপাখ্যানে প্রবেশ করেছি। একদল প্রেতাত্মা রক্তের নেশায় রাজপথ চষে বেড়াচ্ছে, সামনে যাকে পাচ্ছে ঘাড় কামড়ে রক্ত শুষে নিচ্ছে। কন্ঠে উচ্চকিত শ্লোগান রক্ত চাই আরও রক্ত চাই। এরাই রাষ্ট্রের সমাজের কর্ণধার, এরাই মিডিয়া এরাই সু-শীল সমাজ এরাই প্রজন্ম! আমি খুবই আতংকিত। এই ধরনের পরিস্থিতিকে বলা হয় গন হিষ্টিরিয়া। জাতির পরিচালকরা জাতির ভবিষ্যতরা যদি এই ধরনের রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে তাহলে কি আমাদের ভবিতব্য ভেবে শংকিত হবারই কথা। সেদিন এক বেসরকারি অফিসের বড় কর্তার সাথে কথা হচ্ছিল। শান্ত সৌম্য ভদ্রলোক, ইন্টেলেকচুয়াল বলে একটা ভাবমূর্ত্তি আছে। এক পর্যায়ে অকষ্মাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন। বললেন ওদের আবার কিসের বিচার, ওরা জামাত শিবির। ওদেরকে ফাঁসি দিতে বিচার লাগবে কেন? মনে মনে প্রমাদ গুনলাম, সর্বনাশ! এ কোথায় এসেছি! ঘাড়ে কামড় বসিয়ে দেয়ার আগেই কেটে পড়লাম। এই হচ্ছে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তির স্ট্যান্ডার্ড। এই শ্রেণীর লোকেরাই আমাদের সমাজ সভ্যতার কর্ণধার। এরাই নীতি নির্দ্ধারক, এরাই চালক। মিডিয়ায় এরা সং®কৃতি অঙ্গনে এরা আইন আদালতে এরা টিভি টক শো’তে এরা। এরা নিজেদের মতকে জনমত বলে চালাতে চায়।
খুবই একটা ডেলিকেট সিচুয়েশন। জাতির অস্তিত্ব ভবিষ্যতই হুমকির মুখে। বিশেষ করে গত এক মাসের যে ঘটনাপ্রবাহ তাতে যে কোন বিবেকবান মানুষই বিচলিত না হয়ে পারে না। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে এই কলামেই আমি সতর্কতা জানিয়ে লিখেছিলাম দেশকে গৃহযুদ্ধের পথে নিয়ে যাবেন না। গৃহযুদ্ধ বাঁধিয়ে মানুষে মানুষে হানাহানি রক্তারক্তি ঘটিয়ে হয়তো ক্ষমতা ধরে রাখা যাবে কিন্তু সর্বনাশ হয়ে যাবে দেশটার। এই চন্ডনীতি ত্যাগ করুন। কে শোনে কার কথা। শেষ পর্যন্ত আমরা গৃহযুদ্ধেরই দ্বারপ্রান্তে। যাদের স্বার্থে এই পরিস্থিতি সেই প্রতিবেশী দেশের মিডিয়াতেই এই পরিস্থিতিকে গৃহযুদ্ধ বলে সঙ্গায়িত করা হয়েছে। রাস্তায় এক শ্রেণীর লোকের রক্ত চাই ফাঁসি চাই রবে মাতম, সরকারের চাহিদামাফিক আদালতের রায়, গ্রামেগঞ্জে পাখির মত গুলী করে মানুষ মারা, রাস্তায় বেরিকেড, রেল লাইন তুলে ফেলা, ব্রিজে আগুন, পুলিশ হত্যা, থানায় হামলা, প্রতিপক্ষের বাসাবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, যে যাকে পাচ্ছে কুপিয়ে মেরে ফেলছে, প্রাণভয়ে মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে, রেল যোগাযোগ বন্ধ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রাজধানী কার্যত বিচ্ছিন্ন- এই অবস্থাকে আর কি বলা যেতে পারে!
আমার উদ্বেগ আরও। এই সুযোগে এক শ্রেণীর লোক হিন্দু ধর্মবিশ্বাষীদের বাসাবাড়িতে হামলা করছে মন্দির উপাসনালয় ভাংচুর করছে। এইটাই হচ্ছে সবচাইতে এলার্মিং দিক। শাহবাগের জমায়েত ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় বলে সে দেশেরই পত্রিকা সংবাদ প্রকাশ করেছে। এই সমাবেশের সাথে সংহতি জ্ঞাপনে ভারত থেকে দলে দলে রাজনৈতিক এবং সাং®কৃতিক এ্যক্টিভিস্টরা আসায়, ব্লগার রাজীব সম্পর্কিত প্রচার প্রচারনা, শাহবাগ জমায়েতের নেতাদের রাজনৈতিক পরিচয়- ইত্যাকার কারনে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এই জমায়েতকে সহজভাবে নিতে পারে নাই। আলেম ওলামাদের একটি বিরাট অংশ এই জমায়েতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ভেতরে ভেতরে প্রচারণা চালানো হয়েছে ওই জমায়েতে যারা সমবেত হয়েছে তাদের অধিকাংশই হিন্দুধর্মবিশ্বাষী। এমন প্রচারণাও কানে এসেছে হিন্দু ধর্মবিশ্বাষীদেরকে খুশী করতেই নাকি সরকার ইসলামি আলেম ওলামাদেরকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করতে চায়। আমি আগেও কয়েকটা লেখায় লিখেছি জনমত অন্ত:সলীলা নদীর মত। এটা চোখে দেখায় যায়না বুঝে নিতে হয় অনুভব করতে হয়। এই জনমত গোয়েন্দা সংস্থার রাডারে ধরা পড়ে না। শাহবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে কয়েকজন তরুন যুবক চীৎকার করলো আর সাঈদীর ফাঁসির রায় হয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রীও সংসদে দাঁড়িয়ে বললেন বিচারকদের উচিত জনমত দেখে রায় দেয়া। পাঁচ দিনে এক শ’র ওপর মানুষ একটা লোকের জন্য জীবন দিয়ে দিলো। জনমত কার পক্ষে! শাহবাগের কোন তরুন প্রজন্ম কি শেখ হাসিনার জন্য এভাবে নিজের জীবন দেবে। সেদিন শুধু কারা যেন রব তুলেছিল শিবির আসছে। হুটোপুৃটি করে পালাতে গিয়ে তিনজন গড়ম তেলের কড়াইতে পড়ে দগ্ধ হয়েছে। প্রভাবশালী প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াগুলো যতই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করুক যতই ছাপিয়ে রাখার চেষ্টা করুক এই অন্ত:সলীলা জনমত যে সরকার এবং তাদের জ্ঞাতিগুষ্ঠিদের পক্ষে নাই তা বোঝা গেল গত পাঁচ দিনের ঘটনাপ্রবাহে। কোন রাজনৈতিক কর্মসূচীতে নয় কোন একক নেতৃত্বে নয় স্বত:ষ্ফূর্তভাবে মানুষের রাস্তায় নেমে আসা গুলীর সামনে বুক পেতে দেয়া আমাদের দেশের ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। সরকারের পা চাটা মিডিয়াগুলো এখনও সত্য ধামাচাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা করে চলেছে। ব্লগার রাজীবের ইসলামবিরোধী লেখালেখির প্রতিবাদে যখন সমগ্র আলেম সমাজ ফুঁসে উঠলো রাস্তায় নেমে এলো তখনও এই মিডিয়াগুলো প্রচার করেছে এগুলো জামাত শিবিরের কাজ। জায়গায় জায়গায় মানুষ স্বত:ষ্ফূর্তভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে এরা বলছে জামাত শিবির। এখনও যদি সরকার এইসব মতলববাজ ধান্ধাবাজদের প্রচার প্রচারণাগুলো বিশ্বাষ করে চলে তাহলে বুঝতে হবে আহম্মকের স্বর্গ থেকে এরা আর কোন দিন বের হয়ে আসতে পারবে না। জনমতের কিছুটা ষ্ফুলিংগ দেখা গেল গত কয়েকদিনে। এটাই সত্য এটাই বাস্তব জনমত সরকারের পক্ষে নয় শাহবাগ জমায়েতের পক্ষেও নয়। আমার ভয় এই জনমত না শেষ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষে গড়ায়। গৃহযুদ্ধ না এক সময় ধর্মযুদ্ধে পর্যবসিত হয়। গত চার বছর ধরে ইসলাম নিয়ে সরকারের নানা বিতর্কিত উদ্যোগ ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সহজভাবে নেয় নাই। সংবিধান থেকে ‘আল্লাহর ওপর বিশ্বাষ ও আস্থা’ তুলে দেয়া নাস্তিক বা অন্য ধর্মবিশ্বাষীদের জন্য বিজয় হুতে পারে ইসলাম ধর্মবিশ্বাষীদের জন্য তা অবশ্যই ক্ষোভের কারন। একমাত্র আওয়ামী লীগ এবং কিছু ভূয়া বামই বাংলাদেশ নয় গোটা জনগোষ্ঠী নয়। কাজটা করেছে আওয়ামী লীগ মুষ্ঠিমেয় কিছু সংখ্যককে খুশী করার জন্য। এমনও প্রচারণা আছে ভারতের কথায় এবং তাদেরকে আস্বস্ত করতেই নাকি সংবিধান সংশোধন করে ধর্মনিরুপেক্ষতা লাগানো হয়েছে। সরল সহজ ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তাতে আহত হবে এটাই স্বাভাবিক। এসব কারনে সরকারের বিরুদ্ধে ভেতরে ভেতরে একটা জনমত আগেই তৈরী হয়ে গেছে। এখন তথাকথিত যুদ্ধাপরাধি বিচার প্রশ্নে মুসলমানরা যদি বিশ্বাষ করতে শুরু করে আওয়ামী লীগ বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষায় দেশ থেকে ইসলামি শক্তিকে নির্মূল করতে চায় তাহলে কি দিয়ে তা ঠেকানো যাবে! বন্দুক দিয়ে! গুলী চালিয়ে! নির্বিচার মানুষ হত্যা করে!
বিচারপতির ষ্কাইপ কেলেংকারির পরও মানুষ ধারনা করতো ট্রাইব্যুনাল ঠিকমতই কাজ করবে। আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ নিয়েও কথা ওঠে নাই। কারন এ বিচার হয়েছে এক তরফা। অভিযুক্তের পক্ষে কোন ডিফেন্সই ছিল না। কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন ঘোষনা হলে তাও অতটা প্রশ্নবিদ্ধ ছিলনা। কিন্তু এ রায় যুগপৎভাবে প্রত্যাখ্যান করলো কাদের মোল্লার দল জামাতে ইসলামি এবং কিছু তরুন ব্লগার। এরা শাহবাগ মোড়ে এসে হারমোনিয়াম ডুগী তবলা বাজিয়ে ফাঁসি ফাঁসি চাই বলে নৃত্যগীত করতে লাগলো আর কাদের মোল্লার দল মুক্তি চাই মুক্তি চাই বলে জ্বালাও পোড়াও ভাংচুরে নেমে গেল। তরুন তরুনী যুবক যুবতীদের আবেগ উচ্ছাস বেশী। কিন্তু গোলটা বাঁধালো সরকার এবং তাদের পা-চাটা কিছু মিডিয়া ও সু-শীল- এই আবেগ উচ্ছাসে বাতাস দিয়ে। এতে শামিল হলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। এই বিচারের যতটুকু ক্রেডেবিলিটি ছিল তাও গেল। সরকারি চাপের মুখে দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায় প্রমান করলো বিচারের নামে আসলে কি চলছে।
এখন চলছে নৈরাজ্য। নির্বিচার হত্যাকান্ড। ’৭১-এর নয় মাস পাক বাহিনীর নির্বিচার হত্যাকান্ডের পর মাত্র পাঁচ দিনে শতাধিক মানুষকে গুলী করে হত্যার ঘটনা এই প্রথম দেখলাম। বঙ্গবন্ধুর শাষনামলে বর্বর রক্ষীবাহিনী পুলিশ যুবলীগ নির্বিচার মানুষ হত্যা করতো কিন্তু এমন হত্যাকান্ড দেখেছি কেবল ’৭১-এ। তরুন প্রজন্ম নাকি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারি প্রটেকশনে বিরিয়ানি পানীয় সহকারে নৃত্যগীত গেয়ে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছে। তারা ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ দেখে নাই, পাক বাহিনীর গনহত্যা দেখে নাই। এরা দেখে নিতে পারে আজকে পুলিশ যেভাবে পাখির মত গুলী করে মানুষ হত্যা করছে, ৭১-এ পাক বাহিনী এভাবেই মানুষ মেরেছে। তখনও এইসব হত্যাকান্ডের সমর্থনে একদল লোক মিটিং মিছিল জমায়েত করেছে, মানুষের মৃত্যুতে আনন্দ উল্লাস করেছে।
বেগম জিয়া এই হত্যাকান্ডকে গনহত্যা বলায় এক শ্রেণীর লোক তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেছে। তাহলে কি বলা হবে একে? এই ঘটনা যদি বিএনপি ঘটাতো! আওয়ামী লীগ কি বলতো! আবারও বলছি এই সর্বনাশা খেলা বন্ধ করুন। আজ যেটা চলছে- ড্রেস রিয়ার্সাল। ফাইনাল রাউন্ড সামনে। একদিকে তত্বাবধায়ক দাবীতে সকল বিরোধী দলের আর একটা চত্বর, পাশাপাশি ইসলামপন্থীদের ‘ইসলাম রক্ষার’ আন্দোলন। এর সঙ্গে জামাতের সর্বব্যপী সমরসজ্জা পরিস্থিতিকে কোথায় নিয়ে যাবে কেউ কল্পনা করতে পারেন। মাত্র কয়েক দিনেই কিভাবে দেশ অচল করে দেয়া যায় জামাত তা দেখিয়ে দিলো। কিভাবে রাস্তায় বসে দাবী আদায় করতে হয় শাহবাগের তরুন তরুনী যুবক যুবতীরা তাও দেখিয়ে দিলো। অতএব সাধু সাবধান! এই মাঘই শেষ মাঘ নয়, সামনে আর একটা মাঘ আছে।
শেখ সেলিম ঠিকই বলেছেন, ‘আমরাও যদি একই পথ ধরি দেশে গৃহযুদ্ধ বেঁধে যাবে’। দেশের যে অবস্থা মানুষের মনের যে অবস্থা তাতে সময় আর কতটুকু আছে জানিনা তবে আমি মনে করি সবাই মিলে শেষ একটা উদ্যোগ নিয়ে দেখা যেতো সর্বনাশের পথে যাত্রা ঠেকানো যায় কিনা। এখন সময় মাথা ঠান্ডা রাখার, কথা বলার। দরকার হলে জামাতের সাথেও। ইগো আবেগ ইমোশন সেন্টিমেন্টের দিন শেষ। বাস্তবতায় আসতে হবে। দেশ বাঁচাতে হবে মানুষ বাঁচাতে হবে। কিছুসংখ্যক লোক উন্মাদ হয়ে গেছে বলে সবাইকে তাদের সাথে তাল দিলে এ দেশ জাতির অস্তিত্ব- কিছুই থাকবে না।
লেখক: সাঈদ তারেক, আমেরিকা প্রবাসী বিশিষ্ট প্রবন্ধ লেখক।
Leave a Reply