বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান আর নেই (ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন)। বাংলাদেশ সময় বুধবার বিকেল চারটা ৪৭ মিনিটে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। জিল্লুর রহমান শ্বাসকষ্টজনিত কারণে গত ৯ মার্চ রাতে ঢাকা সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক (সিএমএইচ) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎকদের পরামর্শ অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ১০ মার্চ রাতেই এয়ার এম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানকে চিকিৎসার জন্য ১১ মার্চ সকালে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জিল্লুর রহমান ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেয়ার চার বছরের মাথায় জীবনাবসান ঘটল দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের। দায়িত্ব পালনের মধ্যে অসুস্থতার জন্য কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। গত ডিসেম্বর মাসেও যুক্তরাজ্যে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। অসুস্থ জিল্লুর রহমানকে সিঙ্গাপুরে নেয়ার পর সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন স্পিকার আবদুল হামিদ।
রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইতিহাসে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি আইন বিষয়য়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে এযাবত্ দেশের সবকয়টি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন জিল্লুর রহমান। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর-ভৈরব আসন থেকে জিল্লুর রহমান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ এর আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে তিনি এলজিআরডি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছাড়াও জিল্লুর রহমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যসহ বিভিন্ন সময় দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারির পর গ্রেপ্তারের সময় শেখ হাসিনা দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব জিল্লুর রহমানকে দেন।
২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় জিল্লুর রহমান তার স্ত্রী, মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভানেত্রী আইভী রহমানকে হারান। ব্যাক্তি জীবনে তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
Leave a Reply