বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৪

জাতীয় শোক দিবসে চিফ হুইপ পুত্রের রাজকীয় ওয়ালিমা অনুষ্টিত

জাতীয় শোক দিবসে চিফ হুইপ পুত্রের রাজকীয় ওয়ালিমা অনুষ্টিত

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো: জিল্লুর রহমান এর অকাল মৃত্যু বরণে বাংলাদেশ সরকার তিন দিনের রাষ্টীয় শোক যোষণা করে ২১,২২,২৩ই মার্চ। কিন্তু জাতীয় শোক দিবসের মাঝেও কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার সিদ্ধেশ্বরপুর গ্রামের বাড়িতে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ মো: আব্দুস শহীদ তার ছেলে মার্গুব মোর্শেদ রোমিও’র রাজকীয় বিবাহ-উত্তর ওয়ালিমা অনুষ্ঠান হয়েছে। এতে ভিআইপি ছাড়াও প্রায় পচিশ হাজার আমত্রিত অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলেছে। আমত্রিত অতিথিদের অনেকেই বলেছেন, তারা প্রস্তুতি নিয়েছিলেন অনুষ্টান হয়তো তারিখ পরিবর্তিত হয়ে পরের দিন অনুষ্টিত হবে। কারণ বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বশীল একজন চিফ হুইপ তো আর জাতীয় শোক দিবস অমান্য করতে পারবেন না।

রাজকীয় এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন মন্ত্রী, বিচারপতি, সচিব, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ও সামাজিক পর্যায়ের ২৫ হাজার মানুষ। ওয়ালিমা অনুষ্ঠানে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের জন্য মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ঢাকার ফাইভ স্টার হোটেল রেডিসনে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ এম এ শহীদের একমাত্র ছেলে মার্গুব মোর্শেদ রোমিওর বিয়ে হয় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মোহাম্মদ এম এ আজাদ ও রেজিনা ফেরদৌস আজাদের প্রথমা কন্যা আহসানা ফেরদৌসি আজাদ লীনার সঙ্গে। চিফ বিবাহ-উত্তর ওয়ালিমার আয়োজন করা হয় গতকাল গ্রামের বাড়ি মুন্সীবাজারের সিদ্ধেশ্বরপুর নোয়া বাড়িতে।

বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের আকৃষ্ট করতে খাবার পানির বোতলে ছিল বর-কনের ছবি। শুক্রবার সন্ধ্যায় চিফ হুইপ পুত্র ও তার স্ত্রীকে গ্রামের বাড়িতে বরণ করে নেয়া হয় বিশেষ পুলিশি গার্ড দিয়ে। ছেলের ওয়ালিমা অনুষ্ঠানে পিতা চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ শহীদ ছিলেন রাষ্ট্রীয় অতিথি। আবার জাতীয় শোক দিবসের শেষ দিনে শোক পালনের বদলে চিফ হুইপের বাড়িতে রাজকীয় ওয়ালিমা অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে টক অদ্য টাউন। সর্বমহলে আলোচনা চলছিল, সরকার ঘোষিত জাতীয় শোক পালনের সিদ্ধান্তে প্রধান বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার উত্তরাঞ্চলের দু’দিনের সফরসূচি পরিবর্তন করেছেন। এমনকি ২১শে মার্চ বিএনপি ঢাকার হরতাল বাতিলও করে। অথচ সরকার দলীয় চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ শহীদ ওয়ালিমার অনুষ্ঠান একদিন না পিছিয়ে শোক দিবসের মাঝে রাজকীয় কায়দায় পালন করেন।

খাবারের আইটেমে ছিল পোলাও, গরু খাসি মুরগির মাংশ, মাছ, সবজি, বেগুন ভাজি, ডাল, দই। ছিল আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য কফি কর্নার। এর মধ্যে ১৭টি গরু ও ৪০টি খাসি ছিল। ১২টি গরু ও ২০টি খাসি এক লন্ডন প্রবাসী সরবরাহ করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ২৫ হাজার মানুষের জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়। ১০টি বিশাল আকারের প্যান্ডেল করে ৫টি প্যান্ডেল যথাক্রমে কুশিয়ারা, ধলাই, সুরমা, যমুনা ও মনু নদীর নামে রাখা হয়। আর ভিভিআইপি, সচিব উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য আরও বিশাল আকারের ৫টি প্যান্ডেল করা হয়। খাবারের সঙ্গে জীবন কোম্পানির বর কনের ছবি সংবলিত ৩০ হাজার পানির বোতল সরবরাহ করা হয়। দলীয় নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা গবাদি পশু থেকে শুরু করে ব্যবহারী বিভিন্ন সামগ্রী উপঢৌকন প্রদান করেন বলে জানা যায়।

রাজকীয় এই আয়োজনে ছিল কয়েক শত গাড়ির বহর। ফলে ট্রাফিক ব্যবস্থা পরিচালনায় ছিল পুলিশি বিশেষ পদক্ষেপ। অনুষ্ঠানে যোগ দেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপিলেট ডিভিশনের বিচারপতি এস কে সিনহা, সংসদ সদস্য সৈয়দ মহসিন আলী, সংসদ সদস্য শাহাবুদ্দীন, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসের রহমানসহ উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। এদিকে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকালে চিফ হুইপের এপিএস অমলেন্দু সিনহার নামে পাঠানো পত্রে নতুন করে যুক্ত হয় ওয়ালিমা অনুষ্ঠানে বেলা সাড়ে ১২টায় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠান।

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024