শীর্ষবিন্দু নিউজ: ছাত্রলীগকে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে তুলনা করায় স্বতন্ত্র সাংসদ হাজি মোহাম্মদ সেলিমকে ‘অশিক্ষিত টোকাই’, ‘মূর্খলোক’ ও ‘খুনি এরশাদ শিকদারের বন্ধু’ বলে আখ্যায়িত করেছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক খোন্দকার তারেক রায়হান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে এ মন্তব্য করেন সংগঠনটির সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে হাজি সেলিম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা প্রসঙ্গে বলেন, শিবির রগ কাটে, ছাত্রলীগ কবজি কাটে, মাথা কাটে। টিভি-পত্রিকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক আছে বললে চলবে না। কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নইলে মানুষ আমাদের সঙ্গে থাকবে না।
হাজি সেলিমের এ বক্তব্যের প্রতিবাদে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, হাজি মোহাম্মদ সেলিম জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে ছাত্রলীগের তুলনা করে প্রমাণ করেছেন, উনি একজন অশিক্ষিত ও মূর্খলোক। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের পক্ষে কাজ করায় ছাত্রলীগ নিয়ে ওনার এই আক্রোশ ও বিষোদগার।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, হাজি সেলিম ব্যক্তিগত জীবনে একজন অশিক্ষিত টোকাই, নাসিরউদ্দিন পিন্টুর এক সময়ের সহযোগী এবং পরবর্তী সময় খুলনার কুখ্যাত এরশাদ শিকদারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। হাজি সেলিম বিভিন্ন এলাকায় অনেক জায়গা দখল করে নিজের সম্পদ বাড়িয়েছেন বলে অভিযোগ করে ছাত্রলীগ।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময় গণমাধ্যমের সামনে ছাত্রলীগের সমালোচনা করা হালফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। অথচ ছাত্রলীগ ঐতিহ্যবাহী ও মহান মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম ভূমিকা পালনকারী ছাত্রসংগঠন। এই সংগঠনের ভালো-মন্দ নিয়ে কথা বলা, সমালোচনা করা ও দিকনির্দেশনা দেওয়ার অধিকার তাঁরাই রাখেন, যাঁরা শিক্ষানুরাগী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী। হাজি সেলিমের বক্তব্য অবিলম্বে জাতীয় সংসদের কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তাঁকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানায় ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের এমন মন্তব্যের বিষয়ে হাজি সেলিম গণমাধ্যমকে বলেন, সত্য কথা বললে যদি ছাত্রলীগ এমন মন্তব্য করে, তাহলে আমরা যাঁরা স্বতন্ত্র সাংসদ আছি তাঁরা আর সংসদে কথা বলব না। সংসদকে প্রাণবন্ত করব না। সত্য কথা বললে ছাত্রলীগ কীভাবে এমন মন্তব্য করে? ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজি সেলিমকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। পরে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি সংসদের স্বতন্ত্র সাংসদ জোটের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।