শীর্ষবিন্দু নিউজ: সরকারের বেধে দেয়া নিয়মঅনুযায়ী দুটি এয়ারলাইন্সে করে হজে যাওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো.হাবিবুল গণির হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এ রায়ের ফলে নিজেদের পছন্দমতো যে কোনো এয়ারলাইন্সে করে যাত্রীরা হজে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন আবেদনকারীর আইনজীবীরা।
ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক বলেন, ২০১২ সালের ২১ জুন কম্পিটিশন অ্যাক্ট-২০১২ নামে একটি আইন পাস হয়। ওই আইন অনুসারে, যে কোনো প্রতিষ্ঠান এমন কোনো চুক্তি করতে পারবে না, যেখানে কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পণ্য বা সেবা নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কেবল দুটি এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে হজযাত্রী পরিবহনের। এটা কম্পিটিশন অ্যাক্টয়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই, আদালত সরকারের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক ও অ্যাডভোকেট কে এম হাফিজুল আলম রানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেছুর রহমান।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বিমান বাংলাদেশ ও সৌদি এয়ারলাইন্স ছাড়া অন্য কোনো পরিবহনে হাজিরা হজে যেতে পারবেন না বলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)- এর সহসভাপতি আব্দুল কবির খান, মহাসচিব শেখ আব্দুল্লাহ ও রেজাউল ইসলাম নামে এক হজযাত্রী।
এ রিটের পরিপ্রেক্ষিতে একই সালের ২৯ জুলাই সোমবার বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং পছন্দমতো বিমানে হজে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। রুলে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে হজযাত্রী পরিবহনে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নেওয়া সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছিলেন আদালত।
কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ স্থগিত করে দেন। পরে আবেদনকারীরা আপিল বিভাগে আবেদন করলে তিন মাসের মধ্যে হাইকোর্টে এ মামলার নিষ্পত্তি করতে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এ আদেশ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট এ রায় দেন।