শীর্ষবিন্দু নিউজ: ২০১৩ সালের মাঝামাঝি রাষ্ট্রায়াত্ত সোনালী ব্যাংকের সার্ভার হ্যাক করে আড়াই লাখ ডলার (১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা) লুটের ঘটনা ঘটেছে। হলমার্ক কেলেঙ্কারির রেশ কাটতে না কাটতেই অভিনব এই জালিয়াতির ঘটনা ঘটে ব্যাংকটিতে। গতকাল শনিবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম এ তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়া সার্ভার হ্যাক করে অর্থ লুটের ঘটনায় বর্তমানে ব্যাংকটির অনলাইন নিরাপত্তাও হুমকিতে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের বার্ষিক সম্মেলন ২০১৪’তে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব তথ্য প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সচিব বলেন, গত বছরের মাঝামাঝি সময় হ্যাকাররা অবৈধ ভাবে হ্যাক করে আড়াই লাখ ডলার নিয়ে গেছে। এটা ব্যাংকের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, ২০১২ সালে হলমার্কের জালিয়াতি সোনালী ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার কারণে ঘটেছে। তিনি বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় যেসব জাল জালিয়াতির ঘটনা ঘটে তার মূলে থাকে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার দুর্বলতা। হলমার্কের কেলেঙ্কারির ঘটনাও ঘটেছিলো অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের দুর্বলতার জন্য। এইসব জালিয়াতি রোধে সব ব্যাংকগুলোকে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদারের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের যে অলস সম্পদ রয়েছে তা ব্যবহার করে ব্যবসা বাড়াতে হবে। ব্যাংকগুলোকে জনসেবা মূলক প্রতিষ্ঠান হতে হবে। ব্যাংকের পরিবেশ যেন সুন্দর ও সুস্থ হয়। সকলের আস্থা সকলের বিশ্বাস নিয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, এখন ব্যাংকিংয়ের জন্য ব্যাংকে যেতে হয়না। অনলাইনেই সব কাজ হয়ে যায়। তবে এ কাজ করতে গিয়ে গ্রাহককে যেন প্রযুক্তিগত হয়রানির শিকার না হতে হয় সে বিষয়েও খেয়াল রাখার আহ্বান জানান তিনি।
দেশের ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রসঙ্গে ড. এম আসলাম আলম আরও বলেন, সম্প্রতি সোনালী ব্যাংকের কিশোরগঞ্জের শাখার ১৬ কোটি টাকার বেশি লুটের ঘটনার পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে শাখাগুলো ব্যাংকিং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা গাইড লাইন পরিপালন করছে না। ওই শাখাটি অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও আগে থেকেই কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাই এসব ঝুঁকিপূর্ণ শাখাগুলোকে চিহ্নিত করতে পারলে আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হতো।
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় সিসি ক্যামেরা ঠিকমতো কাজ করে না। এটা ব্যাংকের জন্য বড় ঝুঁকি। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পরিপালনে জোর দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. এ এইচ এম হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার দত্ত, পরিচালনা পর্ষদের অন্যান্য সদস্য সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।