শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: থাইল্যান্ডের চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সহিংসতায় শক্তি প্রয়োগ করবে না বলে স্পষ্ট বলে দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে তারা একটি গুলিও খরচ করবে না। সরকারবিরোধী আন্দোলনের মুখে পড়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে সরকার পরিচালনা করছেন প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা।
থাইল্যান্ডের সেনাপ্রধান জেনারেল প্রয়াইয়ুথ চানোচা বলেছেন, ভয়াবহ বিক্ষোভ-আন্দোলন থামানোর ক্ষেত্রে দেশের আইনই যথেষ্ট। তিন মাস ধরে অচলাবস্থাকে দীর্ঘায়িত করতে চায় না সেনাবাহিনী। জাতির উদ্দেশে দেওয়া টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, আমরা পূর্ণ সামরিক শক্তি প্রয়োগ করলে স্বাভাবিক যে ফিরে আসবে তার কোনো নিশ্চিয়তা নেই। বর্তমান পরিস্থিতিকে ২০১০ সালের চেয়ে খারাপ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, বর্তমানের রাজনৈতিক অচলাবস্থা অনেক জটিল ও এর সঙ্গে বিভিন্ন পক্ষ জড়িত।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী আমাদের থাইদের (জনগণের) বিরুদ্ধে অস্ত্র ও শক্তি ব্যবহার করতে চায় না। বর্তমান পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক আইনই যথেষ্ট। এভাবে জীবনহানি ঘটতে থাকলে দেশের পতন ঘটবে। বিভিন্ন অপরাধে রাজনীতিকদের ‘সাধারণ ক্ষমা’ করতে একটি আইন করার চেষ্টা চালানোর পর থেকে ইংলাক সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ২০০৬ সালে সেনাঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া প্রধানমন্ত্রী ভাই থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অপরাধ থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন ইংলাক।
বিরোধিতার মুখে পার্লামেন্টে আইনটি পাস না হলেও আন্দোলন থেকে সরে আসেনি সরকারবিরোধীরা। অবশেষে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন ইংলাক। কিন্তু বিরোধীদের বয়কটে এক তরফা নির্বাচন করে ক্ষমতাসীন দল পিউ থাই পার্টি। গত সপ্তাহে রাজধানী ব্যাংককের একটি শপিংমলের কাছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের কাছে বোমা বিস্ফোরণে সহিংসতায় চারজন নিহত হয়। মঙ্গলবারও ব্যাংককে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পতনের আশঙ্কা করছে সরকারবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ও সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী সুথেপ থাউগসুবান। তিনি অভিযোগ করেছেন, লাল শার্টের ইউনাইটেড ফ্রন্টের (ইউডিডি) তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র করেছেন। সুথেপ বলেছেন, ইউডিডি সমাবেশে তারা বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চালানোর সম্ভাব্যতা নিয়েও আলোচনা করেছেন, থাইল্যান্ডকে দ্বিখণ্ডিত করতে চাচ্ছেন। কিন্তু কখনই আমরা এ ধারণায় মদত দিচ্ছি না। আমরা থাইল্যান্ডকে একক হিসেবে ঐক্যবদ্ধ রাখার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। তারা লাল পতাকা নিয়ে তারা সমাবেশ করতে পারেন কিন্তু আমরা আমাদের তিন-রঙা পতাকাকে সালাম জানানো অব্যাহত রাখব।