মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১২

শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথম জয়

শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথম জয়

 

 

 

 

 

 

 

বৃহস্পতিবার পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই প্রথম সিরিজ ড্র করলো বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ৩০২ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ১৩ ওভার ৪ বলে বাংলাদেশ ১ উইকেটে ৭৮ রান করার পর বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় তিন ঘন্টা পর খেলা শুরু হলে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৭ ওভারে ১৮৩ রান, অর্থাৎ ৮০ বলে আরো ১০৫ রান। ২৬ ওভারে ৭ উইকেটে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মোহাম্মদ আশরাফুলের সঙ্গে এনামুল হকের ৭৭ রানের জুটি বাংলাদেশকে দারুণ সূচনা এনে দেয়।

শ্রীলঙ্কায় আগের তিনটি তিন ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হেরেছিল অতিথিরা। আর দেশের মাটিতে একমাত্র তিন ম্যাচের সিরিজে হেরেছিল ২-১ ব্যবধানে। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে নেমে সচিত্র সেনানায়েকের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন আশরাফুল।

বৃষ্টির পর খেলা শুরু হওয়ার পর বেশি আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের বলে দীনেশ চান্দিমালের ক্যাচে পরিণত হন এনামুল। ১৮ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ২৬ রান করা জহুরুল ইসলামকেও ফেরানোর কৃতিত্বও তার। দলীয় ১১৯ রানে জহুরুলের বিদায়ের পর ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও সেনানায়েকের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বিদায়ে অস্বস্তিতে পড়ে অতিথিরা। দলীয় ১৬৬ রানে মমিনুল হক ও জিয়াউর রহমানকে বিদায় করে দলের বিপদ আরো বাড়ান লাসিথ মালিঙ্গা। বৃষ্টি নামার আগেই ৫ ওভার বল করায় ১ ওভারই বাকি ছিল তার।

এক সময়ে ভীষণ শঙ্কায় পড়ে গেলেও শ্রীলঙ্কার মাটিতে দলকে প্রথম জয় এনে দেয়ার কৃতিত্ব নাসিরের। শেষ ২ ওভারে ১৭ রান প্রয়োজন ছিল অতিথিদের। সোহাগ গাজীকে সঙ্গে নিয়ে থিসেরা পেরেরার ২৬তম ওভারে ১৭ রান নিয়ে ৬ বল অব্যবহৃত রেখেই দলকে জয় এনে দেন ২৭ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকা নাসির। এর আগে ব্যাট করতে নেমে কুশল পেরেরার সঙ্গে ম্যাচ ও সিরিজ সেরা তিলকারত্নে দিলশানের ১১৬ রানের উদ্বোধনী জুটি শ্রীলঙ্কাকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেয়। নিজের প্রথম অর্ধশতকে পৌঁছানো কুশলকে (৫৬) পয়েন্টে নাসিরের ক্যাচে পরিণত করে বিপজ্জনক জুটি ভাঙ্গেন মাহমুদুল্লাহ।
সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে এগারো হাজার রানের মাইলফলক পেরুনো কুমার সাঙ্গাকারার সঙ্গে দিলশানের ৮৭ রানের আরেকটি চমৎকার জুটি ১ উইকেটে ২০৩ রানের ভালো অবস্থানে পৌঁছে দেয় দলকে। আব্দুর রাজ্জাকের বলে মিডউইকেটে এনামুলে হাতে ধরা পড়ে সাঙ্গাকারা (৪৮) বিদায় নিলে ছোটখাটো ধস নামে স্বাগতিকদের ইনিংসে। ৩৫ রান যোগ করতে আরো ৪ উইকেট হারিয়ে তাদের স্কোর পরিণত হয় ২৩৮/৬-এ। এ সময় ‘প্রমোশন’ পেয়ে উপরে উঠা থিসেরা পেরেরা ও ম্যাথিউসকে ফিরিয়ে দেন রাজ্জাক। জীবন মেন্ডিসকে ফিরিয়ে দেয়া ওভারটি মেডেন নেন অফস্পিনার সোহাগ। চান্দিমালকে বোল্ড করে নিজের প্রথম ওয়ানডে উইকেট নেন জিয়াউর। ধসের পর স্বাগতিকদের ইনিংস কক্ষপথে ফেরান সিরিজে দ্বিতীয় শতকে পৌঁছানো দিলশান। দলের রান আড়াইশ পেরুনোর পর শাহাদাত হোসেনের বলে মিডউইকেটে নাসিরের দর্শনীয় ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ১২৫ রান করেন তিনি।
দিলশানের ১২৮ বলের ইনিংসে ১২টি চার। এটি তার ১৬তম শতক, বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয়। দলীয় ২৬৩ রানে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে দিলশানের বিদায়ের পর লাহিরু থিরিমান্নের ১৫ বলে অপরাজিত ২৫ ও নুয়ান কুলাসেকারার ১১ রান দলকে পৌঁছে দেয় তিনশ রানে। ৪৯তম ওভারে প্রথম দুই বলে কুলাসেকারা ও সেনানায়েকে ফিরিয়ে দিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান রাজ্জাক। সেই সঙ্গে দেশের প্রথম বোলার হিসেবে দুশ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখান তিনি। তার হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেন লাসিথ মালিঙ্গা, শ্রীলঙ্কার স্কোরও তিনশ পেরুয়। ৬২ রানে ৫ উইকেট নিয়ে রাজ্জাকই বাংলাদেশের সেরা বোলার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ৩০২/৯ (কুলশ পেরেরা ৫৬, দিলশান ১২৫, সাঙ্গাকারা ৪৮, থিসেরা পেরেরা ৪, ম্যাথিউস ৬, মেন্ডিস ৫, চান্দিমাল ০, থিরিমান্নে ২৫*, কুলাসেকারা ১১, সেনানায়েকে ০, মালিঙ্গা ৫*; রাজ্জাক ৫/৬২, মাহমুদুল্লাহ ১/৫০, সোহাগ ১/৫২, জিয়া ১/৬৫, শাহাদাত ১/৭১)

বাংলাদেশ: ২৬ ওভারে ১৮৩/৭ (এনামুল ৪০, আশরাফুল ২৯, জহুরুল ২৬, মুশফিক ৯, নাসির ৩৩*, মাহমুদুল্লাহ ৬, মমিনুল ১১, জিয়া ০, সোহাগ ৪*; সেনানায়েকে ২/২৬, ম্যাথিউস, মালিঙ্গা ২/২৯, ২/৩৯)
ম্যাচ ও সিরিজ সেরা: তিলকারত্নে দিলশান (শ্রীলঙ্কা)।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024