সৌদিআরবে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকরা গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন। শনিবার আল হাম্মাদী নামক কোম্পানিতে অতর্কিত অভিযান চালিয়ে পুলিশ ১৫ জন শ্রমিককে গ্রেফতার করে। ভিসা ও কাজের অনুমতি থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে রাজধানী রিয়াদসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ অর্ধশতাধিক বাংলাদেশীকে গ্রেফতার করেছে।
জানা যায়, বৃটেনভিত্তিক প্রকাশিত জনপ্রিয় সংবাদপত্র ইকোনমিস্ট পত্রিকায় গত মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশ অ্যান্ড সৌদি অ্যারাবিয়া : রেভেঞ্জ অব দি মাইগ্রেন্টস এমপ্লয়ার’ নিবন্ধন প্রকাশের পর সৌদি আরবজুড়ে এই ধড়পাকড় শুরু হয়। রাজধানী ছাড়াও জেদ্দা, মক্কা, মদিনা ও রিয়াদের হারা, বাথা, মালাজ, অলাইয়া, মোরসালাত, দাম্মাম, আল ছানাইয়া, আল খোবার, রাহিমা জহিমা, কাতিপ,সিহাত, আল জুবাইল, নারিয়া, সাফানিয়া, খোরচানিয়া, খাবজি আল মুরাব্বা দুরমা তাওকিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশি অভিযান চলছে। গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন কোম্পানি ও বাসাবাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অন্যদেশের কয়েকজন নাগরিকও রয়েছেন।
আরো জানা যায়, ঘুমন্ত অবস্থায়ও গ্রেফতার করছে শ্রমিকদের। ফলে অনেকে গ্রেফতারের ভয়ে ঘর ছেড়ে দুর্গম মরুভূমিতে চলে যাচ্ছে। ছুটিতে দেশ থেকে আসা শ্রমিকদেরও এয়ারপোর্ট থেকে দেশে আবার ফেরত পাঠায়ে দিচ্ছে। আবার কাউকে কাউকে জেলে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি মসজিদ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হলেও তাদের ধরছে পুলিশ। গ্রেফতারের কারণ জানার সময়টুকু দিচ্ছে না পুলিশ। প্রতিদিনের ন্যায় যারা সকালে কাজে যাচ্ছেন মালিক পক্ষ তাদের কাজে ঢুকতে না দিয়ে আইডি কার্ড রেখে বিদায় দিয়ে দিচ্ছে।
রিয়াদে কর্মরত মোহাম্মাদ শওকত হোসেন নামের এক বাংলাদেশী অভিযোগ করে বলেন, আমরা গ্রেফতার আতঙ্কে ভুগছি। বাসায় পুলিশ আসার ভয়ে বাহির থেকে তালা দিয়ে ভিতরে অবস্থান করছি।অথচ বাংলাদেশ দূতাবাস নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন। এখানে মন্ত্রীরা বারবার সফর করলেও আসল কাজ কিছুই হয়নি। গত চার বছরে কফিল পরিবর্তনের ব্যবস্থা পর্যন্ত করতে পারেনি তারা।অভিযোগে আরো জানা যায়, যাদের ভিসা আছে তাদেরকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে। অনেক সময় ভিসার পেইজ কেটে ফেলে দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশি হয়রানির কারণে আতঙ্কে অনেক বাংলাদেশী মালিক তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা দোকান খুলতে সাহস পাচ্ছে না। কোনো অপরাধ না থাকলেও কর্মস্থল বা বাসস্থান থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
Leave a Reply