বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৪

আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশ

আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশ

স্বদেশ জুড়ে ডেস্ক: হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন এবার আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে সংবাদ মাধ্যমে স্থান পেয়েছে। ইসলাম অবমাননাকারী নাস্তিক ব্লগারদের ফাঁসির দাবিতে লাখ লাখ লোক ঢাকায় মহাসমাবেশে মিলিত হয়েছে’- এই মন্তব্য দিয়ে শুরু হয়েছে দ্য অস্ট্রেলিয়ান পত্রিকায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের লংমার্চের খবর। আল জাজিরা, বিবিসিসহ বিশ্বের প্রধান প্রধান সংবাদমাধ্যমে শনিবার অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এই মহাসমাবেশের খবর প্রকাশ করে। আল জাজিরা টেলিভিশনে মহাসমাবেশের খবর সরাসরি প্রচার করে।

আর্ন্তজাতিক পর্যায়ের বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যমে মতিঝিল এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়। আল জাজিরার অনলাইন সংস্করণে বলা হয়, লাখ লাখ লোক ইসলাম অবমাননাকারী ব্লগারদের মৃত্যুদণ্ডসহ ব্লাসফেমিবিরোধী আইন প্রবর্তনের দাবি করে। এতে বলা হয়, একদল ব্লগার অত্যন্ত জনপ্রিয় ইসলামী দলগুলোর সমালোচনায় মুখর হওয়ার ফলে সৃষ্ট ক্ষোভ থেকে শনিবারের মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, হেফাজতে ইসলাম নামের গ্রুপটি ‘নাস্তিক ব্লগারদের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সরকারের সমালোচনা করছে। ইসলাম অবমাননাকারী ব্লগারদের দমনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকায় ইসলামপন্থী গ্রুপগুলো মহাবেশ করছে। এতে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার লোকের লংমার্চে অংশগ্রহণের কথা বলা হয়। ধর্মঘট আহ্বান করিয়ে বাস ও নৌ চলাচল বন্ধ রাখার কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, অংশগ্রহণকারীরা ইসলাম এবং মহানবী সা.-এর অবমাননাকারীদের মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নতুন ব্লাসফেমি আইন প্রণয়নের আহবান জানায়।

এদিকে, লংমার্চ বাধাগ্রস্ত করার জন্য সেক্যুলারপন্থীরা দেশব্যাপী ২২ ঘণ্টার ধর্মঘট ডাক দেয়ার পর শুক্রবার বিকেল থেকেই ঢাকা কার্যত দেশের অবশিষ্ট অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ-সম্পর্কিত মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বিচার করা নিয়ে সেক্যুলার এবং ইসলামপন্থী বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসে।

বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, শনিবার সকালেই সারা বাংলাদেশ থেকে আসা লাখ লাখ তারা ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দেয় এবং নাস্তিক ব্লাগারদের ফাঁসির দাবি জানায়। তারা ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দেয় এবং নাস্তিক ব্লাগারদের ফাঁসির দাবি জানায়। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ থেকে শাহবাগ আন্দোলনের নাস্তিক ও ইসলাম অপমানকারী ব্লগারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হতে থাকে।  লোকের উপস্থিতিতে ঢাকার বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। প্রতিবন্ধকতা এবং হরতাল প্রত্যাখ্যান করে হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে ইসলামপন্থীরা মিছিলের পর মিছিল নিয়ে মতিঝিলে মহাসমাবেশের স্থানে আসতে থাকে।

অস্ট্রেলিয়ার একটি জাতীয় দৈনিকে বলা হয়, ইসলাম অবমাননাকারী নাস্তিক ব্লগারদের ফাঁসির দাবিতে লাখ লাখ লোক ঢাকায় মহাসমাবেশে মিলিত হয়েছে। তারা ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দেয় এবং নাস্তিক ব্লাগারদের ফাঁসির দাবি জানায়। বিপুল লোকের উপস্থিতিতে ঢাকার মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা সাদা পোশাকের সমুদ্রে পরিণত হয়। যদিও পুলিশ বলেছে মহাসমাবেশে প্রায় এক লাখ লোক অংশ নিয়েছে। তবে মহাসমাবেশের আয়োজনকারীরা সংখ্যাটি পাঁচ লক্ষাধিক বলে জানিয়েছেন।

ঢাকা ট্রিবিউন পত্রিকার সম্পাদক জাফর সোবহান ঢাকা থেকে স্কাইপের মাধ্যমে আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, সরকার ‘নিরপেক্ষ অবস্থান’ বজায় রেখে ‘বিস্ফোরণমুখ’ পরিস্থিতি মোকাবিলার ‘প্রাণান্তকর চেষ্টা’ চালাচ্ছে। সরকার ব্লাসফেমি আইন প্রবর্তন করবে বলে তিনি মনে করেন না। তিনি বলেন, লংমার্চ আসলে ব্লাসফেমি আইনের ব্যাপারে কঠোর নয়। তারা বরং যুদ্ধাপরাধ আইনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের নেতাদের মৃত্যুদণ্ডের যে আহ্বান জানানো হয়েছে, সেটার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যে এখন মারাত্মক চাপের মুখে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে সামান্যই। ইসলাম ও নবী সা. নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে কটূ মন্তব্য করার অভিযোগে মঙ্গলবার তিন ব্লগারকে গ্রেফতারের ঘটনায় সেটা পরিষ্কারভাবে দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে সরকার যেখানে ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট আন্দোলনের প্রতি প্রকাশ্যে উৎফুল্ল সমর্থন জানিয়েছিল, তারাই এখন ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করেছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলামীসহ বিভিন্ন সংগঠনের অব্যাহত বিক্ষোভের মুখে সরকার তিন ব্লগারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সুস্পষ্টভাবে পশ্চাদপসরণ করেছে।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024