বিদেশ জুড়ে: মার্কিন গোপন কূটনৈতিক বার্তা প্রকাশ করে সারা বিশ্বে হই চই ফেলে দেওয়া উইকিলিকস ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ঘোষণা দেন যে তিনি সিনেট প্রার্থী হচ্ছেন। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আসন্ন এই সাধারণ নির্বাচনে অন্তত তিনটি অঙ্গরাজ্যের তিন আসনে প্রার্থী দেবে উইকিলিকস পার্টি। পার্টির পক্ষ থেকে শনিবার এ পরিকল্পনার কথা ঘোষণা দেওয়া হয়।
অ্যাসাঞ্জের নবনিযুক্ত নির্বাচনী পরিচালক গ্রেগ বার্নস বলেন, এই নির্বাচনে উইকিলিকস পার্টি অন্তত তিনটি আসনে প্রার্থী দেবে। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে প্রার্থী হবেন অ্যাসাঞ্জ। ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। এ ছাড়া তাঁর একজন রানিং মেটও মনোনীত করা হবে। অন্যান্য আসনের জন্য যোগ্য প্রার্থী খুজছে উইকিলিকস।
উল্লেখ্য, সুইডেনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির দুটি মামলা রয়েছে।সুইডেনে প্রত্যর্পণ এড়াতে গত জুন মাসে লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেন তিনি। এখনো সেখানেই আছেন অস্ট্রেলিয়ার বংশোদ্ভূত অ্যাসাঞ্জ। এসব মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে সুইডেনে প্রত্যর্পণ করতে চায় যুক্তরাজ্য। কিন্তু অ্যাসাঞ্জের আশঙ্কা হলো সুইডেনে পাঠানো হলে পরে সেখান থেকে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হবে। আর যদি তা-ই হয়, তাহলে কূটনৈতিক নথি ফাঁস করার জের ধরে তাঁকে প্রাণদণ্ড দেবে ওয়াশিংটন। তাঁকে যেন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো না হয়—এই প্রতিশ্রুতি আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছে ইকুয়েডর।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রত্যাবর্তনের কৌশলে হিসাবে এই নির্বাচন করছেন আসাঞ্চ। এ কথা মানতে নারাজ নির্বাচনী পরিচালক গ্রেগ বার্নস। এ জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে বার্নস বলেন, ব্যাপারটি মোটেও এমন নয়। সরকার কোন বাধা সৃষ্টি না করলে সিনেটসহ সব কটি আসনে উইকিলিকস পার্টির প্রার্থীরা জয়লাভ করবেন।’ অ্যাসাঞ্জ যাতে নিরাপদে স্বদেশে ফিরতে পারেন, সরকারের উচিত এ ব্যবস্থা করা। উইকিলিকস পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাসাঞ্জের বাবা জন শিপটন বলেন, তাঁর ছেলে রাজনীতির ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। উইকিলিকস পার্টিতে এ সময়ের মধ্যে ৫০০ সদস্য যোগ দিয়েছেন। অ্যাসাঞ্জ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যদি সিনেট আসনে জয়লাভ করেন, তাহলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে লড়াকু ভূমিকা অব্যাহত রাখবেন তিনি। অভিজ্ঞ মহলের ধারনা, সিনেট আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাস থেকে বেরোনোর পথ খুঁজছেন অ্যাসাঞ্জ।
অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ায় খুবই জনপ্রিয় আসাঞ্চ। এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে জয়ী হতে চান আসাঞ্চ। দূতাবাসে বসেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিকল্পনা প্রকাশ করেন তিনি। এ ব্যাপারে তাঁর পার্টিও আশাবাদী।
Leave a Reply