শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫০

বাংলাদেশে ধর্ম অবমাননা সহ্য নয়, সেনা হস্তক্ষেপও নয়

বাংলাদেশে ধর্ম অবমাননা সহ্য নয়, সেনা হস্তক্ষেপও নয়

 

 

 

 

 

 

 

 

স্বদেশ জুড়ে: বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করবে না বলেই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্লাসফেমি (ধর্ম অবমাননা) আইনের আদলে নতুন কোনো আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের সূত্র ধরে সোমবার বিবিসি বাংলা ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন তিনি।

সম্প্রতি বগুড়ায় এক জনসভায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, “আমাদের সেনাবাহিনী বিদেশে শান্তি রক্ষায় কাজ করে। দেশে কোনো বিশৃঙ্খলা হলে তারা বসে থাকবে না। তারা সময়মতো দায়িত্ব পালন করবে। বিবিসি প্রতিবেদক কাদির কল্লোলকে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  উনি (খালেদা জিয়া) যদি আশা করে থাকেন যে কিছু মানুষ খুন করলেই একেবারে আর্মি ঝাঁপিয়ে পড়বে। আর উনাকে ক্ষমতায় নেবে। বর্তমান আর্মি তা করবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে আইনের অভাব নেই। তথ্য-প্রযুক্তি আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং ফৌজদারি বিধিতেও বিষয়টাতে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। কাজেই নতুন আইনের প্রয়োজন হবে না বলে তিনি মনে করেন। বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ প্রচলিত আইনেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। হেফাজতে ইসলাম এ ধরনের আইন প্রণয়নসহ ১৩ দফা দাবিতে লংমার্চের পর গত ৬ এপ্রিল ঢাকায় মহাসমাবেশ করেছে। একই দাবিতে আজ দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল করছে সংগঠনটি। নতুন আইন না করলেও হেফাজতে ইসলামের দাবিগুলো নিয়ে তাঁর সরকার আলোচনা করবে। তিনি বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের দাবিগুলোর মধ্যে কিছু গ্রহণযোগ্য হলে, তা গ্রহণ করব। আর যেগুলো গ্রহণযোগ্য হবে না, সেগুলো গ্রহণ করব না।’বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেনা হস্তক্ষেপের বিষয়টিও তিনি নাকচ করেছেন।

তিনি বলেন, ব্লগারদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে হেফাজতের দাবি অনুযায়ী ৬ এপ্রিলের লংমার্চের আগে চারজন ব্লগারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁদের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এর সঙ্গে লংমার্চের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, ব্লগ ও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্কে কে কী লিখছে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার বিষয়ে কিছু আছে কি না, সেসব খতিয়ে দেখতে সরকার আগেই একটি তদন্ত কমিটি করেছিল। সেই প্রক্রিয়াতেই ওই গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে। ব্লগারদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রচলিত আইনে গ্রেপ্তার করেছি, সেই আইনেই বিচার করা যাবে। তবে এখন সবাই সবার মৃত্যুদণ্ড চায়। মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়ার মালিক তো আর আমি না। দেশে কোর্টকাচারি রয়েছে। তারাই ঠিক করবে, কার মৃত্যুদণ্ড হবে বা কার হবে না। সেটা আমরা করব কীভাবে। এটা সরকার করবে না, সরকারের দায়িত্ব নয়। আমি একজন মুসলমান। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার মতো কোনো কথা যদি লেখায় থাকে, অবশ্যই আমাদের তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা খুব স্বাভাবিক। এখন নবী করিম (সা.) সম্পর্কে কেউ যদি আজেবাজে কথা লেখে, আমরা তো চুপ করে বসে থাকতে পারি না। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কেউ হয়তো ধর্ম না মানতে পারে, তার মানে এই নয় যে, তারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কথা বলবে। নোংরা কথা লিখবে।’ ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয় বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ব্লগারদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় সমালোচনা উঠেছে। এমনকি ক্ষমতাসীন জোটের শরিকেরাও অনেকেই প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, সরকার একদিকে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলছে। অন্যদিকে হেফাজতের দাবির প্রতি সরকার নমনীয় অবস্থান দেখাচ্ছে। ইসলাম ধর্ম এবং ধর্মনিরপেক্ষতা—এই দুইভাগে দেশের মানুষ বিভক্ত নয় বলেও তিনি মনে করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষ-বিপক্ষ, এ দুটি ভাগ বা ধারা কাজ করছে। হেফাজতকে ধন্যবাদ হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ কর্মসূচি নিয়ে সরকারের দিক থেকে এর আগে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে নানা আশঙ্কার কথা তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু জামায়াতের ফাঁদে পা না দেওয়ায় হেফাজতে ইসলামকে ধন্যবাদ জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই দেখেছেন, ১৮ দলের পক্ষ থেকে মঞ্চে গিয়ে সমর্থন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আশঙ্কা অমূলক ছিল না। তবে আমি ধন্যবাদ জানাব যে, হেফাজতে ইসলাম কিছু কর্মসূচি নিলেও তারা যথারীতি তাদের সমাবেশ শেষে ফিরে গেছে। জামায়াতের ফাঁদে পা দেয়নি।’ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নাকচ বিরোধী দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিও নাকচ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খালেদা জিয়ার উদ্দেশে পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেত্রী দেশকে সেই ২০০৭ সালের পরিবেশে কেন নিতে চাইছেন?’ বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে দাবিতে আন্দোলন করছে, বিরোধী দল সংসদে এসে দাবি তুলে ধরতে পারে। অবশ্য সে ব্যাপারে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নে পুরোনো অবস্থানই তুলে ধরেছেন শেখ হাসিনা।

পুরো সাক্ষাৎকার দেখতে এখানে ক্লিক করুন:

http://www.youtube.com/watch?v=HDovdX6582Y&feature=player_embedded

সূত্র: বিবিসি বাংলা

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024