স্বদেশ জুড়ে: বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর নতুন ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা সেনানিবাসের বিমান বাহিনীর ঘাটিতে মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধু বিমান ঘাঁটি উদ্ভেধন করেন প্রধানমন্ত্রী। একই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এফ৭বিজি১ যুদ্ধবিমান এবং এমআই১৭১ এসএইচ হেলিকপ্টারের অন্তর্ভুক্তিকরণও উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও যতটুকু সহায়তা দেওয়া সম্ভব বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে কোনো কার্পন্য করবে না। আপনাদের প্রতি এটাই আমাদের অঙ্গীকার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪১ সালে বার্মায় বিমান হামলা পরিচালনার জন্য ব্রিটিশ সরকার এই বিমান ঘাঁটি তৈরি করে। ১৯৬৬ সালে এই বিমান ঘাঁটির বর্তমান রানওয়ের কাজ শুরু করা হয়। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে এই ঘাঁটির রানওয়ের কাজ শেষ করা হয়। বিমান বাহিনীর এই মূল ঘাঁটি এতোদিন অস্থায়ী ব্যবস্থাপনায় কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। আলাদা ঘাঁটি হিসেবে উদ্বোধনের পর এটি এখন থেকে বিএএফ বেস বঙ্গবন্ধু নামে পরিচিত হবে।
নতুনভাবে এই ঘাঁটি প্রতিষ্ঠার ফলে অন্যান্য ঘাঁটির উপর চাপ কমবে বলে আশাপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নতুন যুদ্ধ বিমান ও হেলিকপ্টার অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিমান বাহিনীর পরিচালন ক্ষমতা ও পেশাগত দক্ষতা আরো বৃদ্ধি পাবে। বিমান বাহিনীর জন্য ট্রান্সপোর্ট ট্রেইনার, মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এবং জেট ট্রেইনার বিমান ক্রয়ের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন থাকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,রাশিয়ার সাথে চুক্তির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার এবং বিমান প্রতিরক্ষা রাডার ক্রয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও বিমান বাহিনীর জন্য মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমান, সুপরিসর সি-১৩০ পরিবহন বিমান এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার কেনার কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, বিমান বাহিনীতে নতুন যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার সংযোজনের ফলে এ বাহিনী আগামীতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আরো সক্ষম বাহিনী হিসাবে দেশের ভাবমূর্তি বহুগুনে বৃদ্ধি করবে- এটা আমার প্রত্যাশা। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে দ্বিতীয়বারের মতো একটি উড্ডয়ন বিমান ঘাঁটি স্থাপন এবং অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার অন্তর্ভুক্তি বর্তমান সরকারের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন নীতিরই প্রতিফলন। বিমান বাহিনীকে আধুনিকায়নে স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহান এবং পরবর্তীতে গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী বিমান ঘাঁটিতে পৌছালে তাকে স্বাগত জানান বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল মোহাম্মদ ইনামুল বারি। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে সশস্ত্র সালাম জানানো হয়। গার্ড পরিদর্শন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর প্রধানমন্ত্রী বিএএফ ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুর ফলক উন্মোচন ও পতাকা উত্তোলন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন এবং নতুন সংযোজিত যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্য, সেনা ও নৌ বাহিনী প্রধান এবং কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আকাশে চীনে নতুন নির্মিত এফ-৭বিজি১ এর অ্যারোবেটিক আকর্ষনীয় প্রদর্শনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানকে আরো আকর্ষনীয় করে তুলে। এর আগে অনুষ্ঠানে কুচকাওয়াজ এবং চীনের তৈরি নতুন যুদ্ধবিমান ও রাশিয়ার তৈরি হেলিকপ্টারের ফ্লাইপাস্ট অনুষ্ঠিত হয়।
Leave a Reply