মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:২৬

পুরো সপ্তাহজুড়ে হরতাল অচল বাংলাদেশ

পুরো সপ্তাহজুড়ে হরতাল অচল বাংলাদেশ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সুমন আহমেদ: বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল সময় পার করছে এ সময়। দেশটির রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের তেমন কোন অর্থনৈতিক সমস্যা না থাকলেও দেশটির কয়েক কোটি দিন মজুর মানুয়ের উপর নেমে এসেছে এক খড়গ। এটা দারিদ্রতা, দুর্ভিক্ষ, মহামারি, সহ আরো যত বড় বড় আঘাত রয়েছে। সবগুলোকে হার মানিয়েছে। কষ্টের চরম পর্যায়ে পার করছেন দারিদ্র বহুল এই দেশ।

বিদেশী সংবাদ মাধ্যমগুলো খুব ফলাও করে প্রচার করছে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্তিতি। সরকার রয়েছে তার সিদ্ধান্তে অনঢ়। আর প্রধান বিরোধদল তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সরকারের বর্তমান সিদ্ধান্ত বদলাতে প্রতাজ্ঞাবদ্ধ। এজন্য বিরোধী দলগুলো দিয়ে যাচ্ছে একের পর এক কর্মসূচী। যার বিশেষভাবে উল্লেখ্যযোগ্য কর্মসূচী হলো হরতাল মানে সারা বাংলাদেশ অচল।

এরই মধ্যে বিদেশী বিভিন্ন কোম্পানীগুলো বাংলাদেশ থেকে তাদের ব্যবসায়িক লেনদেনগুলো ঘুটিয়ে নিয়েছে। আর যারা এখনো যারা রয়েছে তাদের সবাই চৃড়ান্ত সিধ্ধান্ত যানিয়ে দেয়ার পথে। এমনি থেকে বাংলাদেশ শ্রম আইন ব্যাতিরেখে কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। যো আমারা দেখতে অহরহ গামেন্টসে সংগঠিত অগ্নিকান্ডে নিহত এবং আহত হওয়া ব্যাক্তিদের বেলায়। ইতিমধ্যে সংগঠিত হয়ে গেল প্রায় কয়েকটি গামেন্টসে অগ্নিকান্ড। কি নির্মম ছিলো সেই ঘটনা গুলো। বাইরে থেকে তালা দিয়ে বেতরে গামেন্টস কর্মীদের কাজ করানো হতো। অভিযোগ রয়েছে এদের বিরুদ্ধে এরা যখন তখন বের হয়ে যায়। তাদের ছোট শিশুদের দুধ খাওয়ানোর অজুহাতে। কি সংগ্রাম লড়াই বেচে থাকার তাগিদে। নিজের সন্তানকেও দেখাশুনা করতে পারছেন না পেটে আহারের যোগান দিতে। অচথ এই মেহনতী মানুষগুলোর তৈরী বস্ত্র দ্রব্য ইউরোপ-আমেরিকায় বিক্রি হয় উচ্চ দামে। কিন্তু শ্রমিকের মজুড়ি সেই কড়ায় গন্ডায় হিসেব করে টাকায় দেয়া হয়। কে জানবে এদের করুন ইতিহাস।

বিদেশী কোন বায়ার বা এক্সপোর্টার যখন বাংলাদেশে যান তখন গামেন্টর্স কর্মীদের কয়েকজনকে খুব আধুনিকভাবে তাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়। তা আবার সামান্য সময়ের জন্য শুধু কাপড়ের নমুনা পরীক্ষা করা বা কাজের ধরন শনাক্ত করার জন্য। বাস্তবে যে কথটা করুন তা কেউ খবর রাখে না। যেটা দেখা গেল বিথ্যাত ইংল্যান্ডের কোম্পানী ওয়ালমার্টের বেলায়। শাজনীন ফ্যাশন গামেন্টসে যখন আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সহ লোক নিহত হলো তখন হতবাক হয়ে ওয়ালমার্ট বিবৃতি দিলো। তারা আর কোন আমদানী করবে না বাংলাদেশ থেকে। তারা বলেছে, যেখানে মালিক পক্ষ নিজেদের শ্রমিকদের ধুকা দিচ্ছে। সেখানে তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না এ রকম গার্মেন্টস মালিকদের। এ রকম আরো কয়েকটি কোম্পানীও আমদানী বন্ধ করে দিয়েছে। যা এখন ভারতে চলে গেছে এসব ব্যবসা। ইউরোপীয় অনেক কোম্পানী এভাবেই তাদের ব্যবসা শুরু করেছে ভারতের সাথে। অনেকে আবার পাইপ লাইনে আছেন যা কুব শিঘ্যই সম্পাদিত হতে যাচ্ছে।

হরতালের এক সপ্তাহ:

সোমবার: হেফাজতে ইসলাম সোমবার হরতালের ডাক দেয় কারণ হিসাবে তার বলেন, লং মার্চের সময় কর্মী সমবেত হতে বাধা প্রদান করা, যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা যাতে ঢাকায় লং মার্চে হেফাজত কর্মীরা অংশগ্রহর করতে না পারে।

মঙ্গল ও বুধবার: সারা দেশে টানা ৩৬ ঘণ্টা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে বুধবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল পালন করে ১৮ দলীয় জোট। দলীয় নেতা কর্মীদের আটক এবং রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের প্রতিবাধে তাদের এই হরতাল কর্মসূচি। গত রোববার বিকেলে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমদ হরতালের ঘোষণা দেন। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাসসহ গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালসহ বিভিন্ন দাবিতে হরতাল আহ্বান করা হয়। অবশ্য বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিনও কারাবন্দি হোন ঘোষণা দেয়ার রাতেই।

বৃহস্পতিবার: বৃহস্পতিবার হরতালের ডাক দেয় ইসলামী ছাত্রশিবির ও এর অঙ্গ সংগঠন। ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রিয় সভাপতিকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে নির্যাতনের প্রতিবাদে তাদের এই কর্মসূচী বলে জানা যায়।

কার্যত শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন থাকায়। পুরো সপ্তাহ জুড়ে ছিল ছটির আমেজ পুরো বাংলাদেশে। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনজীবন আজ বিপর্যস্ত। উচ্ছবিত্তদের চিন্তা না থাকলেও মধ্যবিত্ত পরিবার ছিলেন উৎকন্ঠায়। আর ন্ম্নিবিত্তদের কেই হিসাবে ধরেন না কারণ তারা দিনমজুর। টাকার বিনিময়ে সারাদিন জরুরী প্রয়োজনের কেবল তাদের খোজ করেন উচ্চবিত্তরা।

বিশেষভাবে ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিযেছে এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে। সারাদেশ এখন এইচএসসি পরীক্ষা চলছে। ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের চিন্তার শেষ নেই। প্রতিদিন যদি এভাবে হরতাল হয় তাহলে পরীক্ষা শেষ হবে কবে। মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ছেন অনেক ছাত্রছাত্রী। বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে যেভাবে দেশে বিডিআর বিদ্রোহ হয়েছিল তাতে কারো কোন ক্ষতি তেমন না হলেও দেশ হারিয়েছে অনেক সম্পদ। যাদের অনেক কষ্ট করে টাকা সময় খরচ করে বিদেশে প্রশিক্ষন দিয়ে গড়ে তোলা হযেছিল দেশ রক্ষা কাজে। বাংলাদেশ হারিয়েছে সেই সব সূর্য সন্তানদের। একই ভাবে হয়তো হারিয়ে যাবে আর অনেক বাংলাদেশের সম্পদ। তবে কে সেই ভয়াল ৭১ সালের চেয়েও ভয়ানক কিছু ঘটতে চলেছে। বর্তমান পরিস্থিতে কোন রাজনৈতিক দল দেশ রক্ষায় এগিয়ে না এলে কে হবে বাংলাদেশের কান্ডরী?

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024