রিয়াদুল করিম: নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি দেখাতে হরতালের পাশাপাশি রাজধানীতে বড় আকারের সমাবেশ করার চিন্তা করছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এই সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি দেখাতে চায় শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করা হলেও দল এখনো যথেষ্ট শক্তিশালী।
প্রাথমিকভাবে পয়লা বৈশাখ জাসাসের নামে একটি ‘শো ডাউন’ করা এবং এ মাসের শেষের দিকে একটি বড় আকারের সমাবেশ করার বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ১৭-১৮ এপ্রিল হরতাল দিতে পারে বিএনপি। এ ছাড়া ২১ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির দিন নেতাদের জামিন না হলে ঢাকা অবরোধের মতো কর্মসূচিও দেওয়া হতে পারে। ‘প্রয়োজনে’ অসহযোগ আন্দোলনে যাওয়ারও চিন্তা করছে বিরোধী ১৮-দলীয় জোট। তবে এ নিয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে।
১৮-দলীয় জোটের শীর্ষ পর্যায়ের দুটি সূত্রে জানা গেছে, তাঁরা মনে করছেন, এখন পর্যন্ত অসহযোগের মতো কর্মসূচিতে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। জোটও সে ধরনের কর্মসূচিতে যাওয়ার জন্য সাংগঠনিকভাবে পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। তা ছাড়া এ ধরনের কর্মসূচি দিলে তা কত দিন টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব, তা নিয়েও সংশয় আছে।
তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একটি সূত্র জানায়, চলতি এপ্রিল ও মে মাস হরতাল, অবরোধের মতো কর্মসূচি চালিয়ে যেতে চায় বিএনপি। এরপর অসহযোগের মতো কর্মসূচি আসবে। তবে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা যদি বাস্তবে রূপ নেয়, তাহলে দলটি অন্যরকম ভাববে। দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম মনে করে সে ক্ষেত্রে আগেভাগেই এ ধরনের কর্মসূচিতে যাবে প্রধান বিরোধী দল। সূত্র জানায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির দুজন সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেপ্তার এবং সর্বশেষ ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তারের পর বিএনপির নেতাদের মধ্যেও এক ধরনের গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। একই আতঙ্ক দলের নেতা-কর্মীদের ভেতরেও। গত ৩৬ ঘণ্টার হরতালে নেতা-কর্মীদের তেমন তত্পরতা চোখে পড়েনি। এ অবস্থায় বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে অনেকের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে হেফাজতে ইসলাম যেভাবে নিজেদের শক্তির জানান দিয়েছে, সেভাবে নিজেদের শক্তির জানান দিতে চায় বিএনপি। দলের নেতারা মনে করছেন, এটি করা গেলে কর্মীরা আবারও উজ্জীবিত হবেন।
বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, দলের নীতিনির্ধারণী মহলের আশঙ্কা, আরও নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। স্থায়ী কমিটির সর্বশেষ সভায় খালেদা জিয়া নেতাদের আগামীতে ‘যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা’ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।
Leave a Reply