স্বদেশ জুড়ে ডেস্ক: টিভি ক্যামেরার সামনে মেয়েটি শিরোনামে হাসানাত আব্দুল হাইয়ের লেখায় প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে একটি ছোটগল্প প্রকাশিত হয়। প্রথম আলো এটি তাদের ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের বিশেষ ক্রোড়পত্রের অনলাইন সংস্করণ ও ই-পেপার প্রকাশ করে। যা নিয়ে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক।
অনলাইন মাধ্যমগুলোতেও লেখাটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করেন, শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের স্লোগান কন্যাদের সাথে গল্পের চরিত্রের মিল আছে। গল্পের একটি অংশে বলা হয়, হাতে মাইক্রোফোন পাওয়ার একটাই উপায়। ছাত্রনেতাদের কথা শুনতে হবে। সোজা কথায়, তাদের খাদ্য হতে হবে। হ্যাঁ স্যার, আমার মতো মেয়েরা সবাই খাদ্য। তারা মেনে নিয়েছে, ইচ্ছায় এবং অনিচ্ছায়। কী করবে? বাবার এত টাকা নেই যে তার খরচে ঢাকায় থাকবে। চাচা নেই, মামা নেই যে সাহায্য করতে পারেন। একমাত্র জমির চাচারা আছেন। তারা আগ বাড়িয়ে সাহায্য করতে আসেন। বড় মিষ্টি তাদের ব্যবহার।
এই ইভেন্টে গল্পের প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়, হাজারো সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও শাহবাগের আন্দোলনের যে কয়টি ইতিবাচক দিক নজরে পড়ে তার মধ্যে অন্যতম হলো নারী-পুরুষের সহাবস্থান। হাজার-হাজার তরুণ-তরুণী সেখানে একত্রে দিনরাত্রি অতিবাহিত করলেও সে রকম বিচ্ছিন্ন দুয়েকটি ঘটনা ঘটেও থাকতে পারে- কিন্তু সেটি বিবেচ্য নয়। হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফায়ও তাদের মানসিকতার এই দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে, যেখানে তারা নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা বন্ধের জন্য রাষ্ট্রের কাছে দাবি জানিয়েছে তারা।
এই মোল্লা শ্রেণীর লোকের কাছে নারী খাদ্য, ভোগ্যপণ্য অথবা যৌনবস্তুর চেয়ে উন্নত কিছু নয়। তাদের কাছে নারী-পুরুষের সহাবস্থান মানেই যৌন অপরাধ, এর বাইরে চিন্তা করার মতো উন্নত মস্তিষ্ক তাদের নেই, এটা সংস্কৃতিগত চর্চার ব্যাপার। একজন মানুষ হিসেবে মেয়েরাও যে যেকোনো প্রকার দায়িত্ব পালনে সক্ষম- সেটা শারীরিক অংশগ্রহণ কিংবা মননের ব্যবহার হতে পারে। যে মাধ্যমেই হোক না কেন, সেটি তারা মানতে প্রস্তুত নয়।
অবশেষে আব্দুল হাইয়ের লেখা ছোটগল্প প্রত্যাহার ও ক্ষমাপ্রার্থনা করলো প্রথম আলো। কর্তপক্ষ জানায়, অসাবধানতাবশত লেখাটি মুদ্রণের জন্য প্রথম আলো আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং পাঠকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
Leave a Reply