স্বদেশ জুড়ে: রাজশাহীতে জামায়াত-শিবিরের আক্রমনে হামলার মধ্যে পিটিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় এক পুলিশ উপপরিদর্শককে বাঁচাতে এগিয়ে যাওয়া সাহসী এক মহিলা ঝর্ণা বেগমকে সংবর্ধনা দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশের পক্ষ থেকে কুতজ্ঞতা স্বরুপ ঝর্ণার হাতে একটি ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন।
ঝর্ণাকে সম্মাননা জানানোর এই অনুষ্ঠানে সেদিনের ভিডিওচিত্র দেখানো হয়। পরে ঝর্ণা বক্তব্য রাখেন। অবশ্য এর আগে রাজশাহী মহানগর পুলিশ এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেও ঝর্ণাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপর আঘাত হলে তা রাষ্ট্রের ভিত্তিতে আঘাত হানার মতো অবস্থা হয়। ঝর্ণা বেগমের কাছে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। একজন প্রশিক্ষিত পুলিশ সদস্য যা করতে পারেনি ঝর্ণা বেগম তা করে দেখিয়েছে। এ ঘটনায় আমরা (পুলিশ) দারুণভাবে ধাক্কা খেয়েছি। কর্তব্যরত পুলিশকে প্রহারের ঘটনা যেমন সবাইকে নাড়িয়ে দিয়েছে, তেমনি ঝর্ণা বেগম আহত পুলিশকে উদ্ধারে সাহসের সঙ্গে যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, তা জাতিকে আরো বেশি নাড়া দিয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত: গত ১ এপ্রিল রাজশাহীর শালবাগান এলাকায় বোয়ালিয়া থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলমকে ধরে রাস্তায় ফেলে ইট ও হেলমেট দিয়ে পেটায় শিবিরকর্মীরা। সে সময় যারা রাস্তায় পড়ে থাকা এসআই জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে নিজের কোলে করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন ঝর্ণা বেগম। দুই শিশু সন্তানের জননী ঝর্ণা বেগম বলেন, মানবতা নিয়ে অন্যের বিপদে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সবার বিবেককে জাগ্রত করতে হবে। নারী-পুরুষ সবাইকেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা ছাড়া বিকল্প নাই।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, প্রথম ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে দেখে মারা গেছে বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু নড়ে ওঠার পর এগিয়ে আসি এবং সন্তানের মতো জড়িয়ে ধরে ওড়না দিয়ে রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করি। গাড়িতে করে তাকে হাসপাতালে নেয়ার সময় দোয়া ইউনুস পড়ছিলাম। এবং জাহাঙ্গীর সাহেবকেও পড়তে বলছিলাম। এই ঘটনা ঝর্ণার মনের মধ্যে এতটাই দাগ কেটেছিল যে তিনদিন তিনি খেতে পারেননি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হতেও সবার প্রতি আহ্বান জানান ঝরণা বেগম।
Leave a Reply