নিউজ ডেস্ক: সুন্দরের স্বচ্ছতা যেকোনো মানুষকে আকর্ষণ করে। আনন্দিতও করে। কাচের চেয়েও স্বচ্ছ ক্রিস্টাল। কিন্তু কাচ নয়। কাচের চেয়ে ক্রিস্টালের দাম অনেকগুণ বেশি। ক্রিস্টালের এই সৌন্দর্য আমাদের ভালো লাগে।
মূল্যবান সেই ক্রিস্টাল আর সাথে স্বচ্ছ কাচ ও স্টিলের দণ্ড দিয়ে বানানো হয়েছে একটি মসজিদ। স্বচ্ছতার কারণেই মসজিদটির নাম দেয়া হয়েছে ক্রিস্টাল মসজিদ। মালয়েশিয়ার তেরেনগানু এলাকার ‘পোলা ও ওয়ান ম্যান’ দ্বীপে দাঁড়িয়ে আছে মুসলিম স্থাপত্যের অপূর্ব এই নিদর্শন।
প্রাকৃতিক শোভা ও মননশীল নির্মাণশৈলীর অভূতপূর্ব সমন্বয়ে তৈরি এই মসজিদটি শুধু মালয়েশিয়ায় নয়, পুরো বিশ্বের কাছে অতি আশ্চর্য ও মনোমুগ্ধকর একটি স্থাপনা। উদ্বোধনের মাত্র ছয় দিনের মধ্যে সাত লাখ মানুষ পরিদর্শন করে মসজিদটি।
কেন করবেন না?
সূর্যের আলোয় মসজিদটির একরূপ আর রাতের আঁধারে আরেকরূপ পর্যটকদের বিমোহত করে। মসিজদটির কিছু অংশ সমুদ্রে আর কিছু অংশ স্থলে হওয়ায় আশপাশে এক নৈসর্গিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এর স্বচ্ছ কাচের দিকে তাকিয়ে দেখা যায় আশপাশের দৃশ্য। রাতে আলোর ঝলকানি চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। মসজিদের ভেতরে রয়েছে তারবিহীন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্রডব্যান্ড সংযোগ। ফলে মুহূর্তে ইমাম সাহেবের ওয়াজ ও খুতবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। মসজিদটি নির্মাণে সমন্বয় করা হয়েছে ইসলামী স্থাপত্য এবং মালয় ও চীনের শিল্প রীতির। এর দরজা ও জানালার কাঠের নকশা যোগ করেছে নতুনমাত্রার।
দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত ও শ্বেত বালির জন্য প্রসিদ্ধ ‘তেরেনগানু’ ফেডারেল মালয়েশিয়ার একটি সাংবিধানিক অঙ্গরাজ্য। সুলতান তেরেনগানু মীযান যায়নুল আবেদিনের নির্দেশে তৈরি করা হয় মসজিদটি। ২০০৬ সালে মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। শেষ হয় দুই বছরের মাথায় অর্থাৎ ২০০৮ সালে। মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ আহমদ বাদাবী ২০০৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মসজিদটি উদ্বোধন করেন। মসজিদটিতে ১,৫০০ মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারেন। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের জন্য ক্রিস্টাল মসজিদ একটি বাড়তি আকর্ষণ। আর মুসলমানদের জন্য এটি গর্বের বিষয়।
মসজিদটির পাশেই ‘ইসলামিক সিভিলাইজেশন পার্ক’। মুসলিম সভ্যতার বিভিন্ন নিদর্শন এখানে সংরক্ষিত আছে এই পার্কে।