বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ০২:৩২

পাসপোর্ট-ভিসা ইস্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মাইনাস

পাসপোর্ট-ভিসা ইস্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মাইনাস

দীন ইসলাম: অভিজ্ঞ জনবলের অভাবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (এমআরপি) ও ভিসার (এমআরভি) ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সেবা দিতে পারছে না বিদেশের বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো। এ অজুহাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এ কাজ দেয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ওই অনুযায়ী পদও সৃষ্টি করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ও তাদের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি অনুমোদন করলে নানা শর্তের কারণে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এই দায়িত্ব পাওয়া থেকে বাদই থাকছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলে এ দায়িত্ব পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৪৭টি দেশে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোর মধ্যে ৩১টিতে এমআরপি ও এমআরভি কার্যক্রম আছে। তবে দূতাবাসগুলো এব্যাপারে কাঙিক্ষত সেবা দিতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রীর চাহিদার প্রেক্ষিতে গত বছরের জুনে এব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে একটি সারসংক্ষেপ পাঠায়। ওই সারসংক্ষেপে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৮০ লাখ বাংলাদেশী আছে। এখন পর্যন্ত ২৪টি মিশনে এমআরপি ও এমআরভি কার্যক্রম আছে। কূটনৈতিক দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পাসপোর্ট ও ভিসা দেয়ার কাজ করছেন। কিন্তু অভিজ্ঞ লোকজন না থাকায় যন্ত্রগুলো পুরোপুরি ব্যবহৃত হচ্ছে না। অনেক জায়গায় যন্ত্রগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। এ কারণে এসব মিশনে দক্ষ লোক দরকার। যেহেতু বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পাসপোর্ট ও ভিসা-সংক্রান্ত কাজে দক্ষ ও অভিজ্ঞ এবং কাজটিও তাদের, কাজেই তাদের পক্ষেই এ ব্যাপারে উন্নত সেবা দেয়া সম্ভব। এ প্রেক্ষিতে ৬৬টি মিশনে প্রথম শ্রেণীর ৬৬ জন কর্মকর্তাসহ বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ৩৬৬টি পদ সৃষ্টি করা যেতে যারে। গত বছরের ২৪শে জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাবটিতে অনুমোদন দেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মাধ্যমে এসব পদ সৃষ্টির প্রস্তাব পাঠানো হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গুরুত্ব বিবেচনায় এই মুহূর্তে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, ওমান, কাতার, কুয়েতসহ ১৯টি দূতাবাসে ১৯ জন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তাসহ ৭৩টি পদের অনুমোদন দেয়। এরপর সেটি যায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। চলতি বছরের ১১ই মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় ১১টি মিশনে ১১ জন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তাসহ ৪৪টি পদ সৃষ্টির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় শর্ত জুড়ে দেয়, প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তাদের পদগুলোতে সিনিয়র সহকারী সচিব অথবা সমমর্যাদার কর্মকর্তারা যাবেন। এ বিষয়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এই শর্তের কারণে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে এমআরপি ও এমআরভি’র কাজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হলো। কারণ, পাসপোর্ট অধিদপ্তরে সিনিয়র সহকারী সচিব পদ নেই। আর সমমর্যাদার বিষয়টি পরে আসায় মূলত অন্যদের সুযোগই বেশি তৈরি হলো। এতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্যাডার কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করলে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেন আগ বাড়িয়ে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ডাকা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে ২৮, ৩০ ও ৩১তম বিসিএসে ২৭ জন এবং পিএসসি’র মাধ্যমে ২৬ জন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক হিসেবে গত এক বছরে অধিদপ্তরে নিয়োগ পেয়েছেন। এদের মধ্যে অনেককেই গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগানো যায়নি। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কারণ, বিষয়টি প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির অনুমোদনের জন্য এটি আসবে। সেখানে সবার সঙ্গে আলোচনা করে এমন পদক্ষেপ নেয়া হবে যাতে তা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024