শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৩০

আতঙ্কিত জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ ছাড়ছেন

আতঙ্কিত জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ ছাড়ছেন

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

স্বদেশ জুড়ে ডেস্ক: বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও রাজপথের সহিংসতায় আতঙ্কিত জাপানি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা। তাদের অনেকে ব্যবসা-বিনিয়োগ গুটিয়ে ফিরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন  দেশটির ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত শিরো সাদোশিমা। গতকাল কূটনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ডিকাব আয়োজিত মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত তার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা জানান। ‘ডিকাব টক’ শিরোনামে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ইমরান আলম। শুরুতে স্বাগত বক্তৃতা করেন সাধারণ সম্পাদক বশির আহমেদ। অনুষ্ঠানে সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দ, কূটনৈতিক রিপোর্টার ও সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সমপ্রসারণের মিশন নিয়ে দেড় বছর আগে ঢাকায় কাজে যোগ দেয়া কূটনীতিক শিরো সাদোশিমার কাছে তার বর্তমান অনুভূতি জানতে চাইলে দেশের সামপ্রতিক পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগতভাবে তিনি খুবই হতাশ বলে জানান। হতাশার কারণও ব্যাখ্যা করেন তিনি। বলেন, কেবল রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণেই জাপানের সিনেট প্রতিনিধি দলসহ বেশ কিছু প্রতিনিধি দল তাদের ঢাকা সফর বাতিল করেছে। হরতালে  বৈরী পরিস্থিতির মুখে পড়ে অনেকে কাজ শুরুর আগেই বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন। এ দেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা খুঁজতে আসা জেট্রো মিশন খারাপ অভিজ্ঞতা নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ফিরে গেছে। শিরো সাদোশিমা বলেন, জাপানের অনেক প্রতিষ্ঠান এখানে কাজ করছে। অনেক জাপানি কর্মরত আছেন। সহিংসতায় তারা উদ্বিগ্ন-আতঙ্কিত।

অনেকে তাদের খারাপ অভিজ্ঞতা তার সঙ্গে শেয়ার করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি আমাকে আতঙ্কগ্রস্ত ও হতাশ করে ফেলেছে। তবে এ দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে তিনি মোটেও ‘নৈরাশ্যবাদী’ নন দাবি করে বলেন, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় এদেশের মানুষ অতীতে অনেক ‘ক্রান্তিকাল’ অতিক্রম করেছে। এবারও তারা ঠিকই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। চলমান অস্থিরতা নিরসনে রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘দয়া করে সংলাপে বসুন, আলোচনা করুন।’ রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে আরব বিশ্বের ১০ রাষ্ট্রদূত বিরোধী নেত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তারা প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ অন্য নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। তাদের এ উদ্যোগকে জাপান কিভাবে দেখছে- জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তারা আলোচনার কথা বলছেন, আমরাও তাই বলছি।’

দেশের বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পে জাপানি বিনিয়োগের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা হবে কিনা জানতে চাইলে নেতিবাচক জবাব দেন রাষ্ট্রদূত। বলেন, দুর্নীতির অভিযোগে মূল উদ্যোক্তা বিশ্বব্যাংক যেহেতু অর্থ দিচ্ছে না, তাই জাপানও এখানে কোন অর্থ দেবে না। দুর্নীতির অভিযোগ সত্ত্বেও কেন মেট্রো রেল প্রকল্পে জাপান অর্থ দিচ্ছে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, সরকারের তরফে ওই প্রকল্পে দুর্নীতি না হওয়ার জোরালো প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। সরকারের প্রতিশ্রুতিতে তার দেশের আস্থা রয়েছে বিধায় তারা সেখানে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি। জামায়াতের সহিংসতা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক সাংবাদিক দলটিকে জাপান সন্ত্রাসী সংগঠন বলে মনে করে কিনা জানতে চান।

জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি বাইরের লোক এ নিয়ে কোন মন্তব্য করা আমার জন্য শোভন নয়। তবে তিনি তার উদ্বোধনী বক্তৃতায় যে কোন রাজনৈতিক দলের সহিংস প্রতিবাদের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারের বিষয়টি সমুন্নত রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। চলমান মানবতা বিরোধী অভিযোগের বিচার প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূতের অভিমত জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে এটুকুই বলবো, যে কোন বিচার স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হওয়া প্রয়োজন। হেফাজতে ইসলামের দাবি সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তাদের দাবি-দাওয়ার বিষষগুলো খুব ভাল করে বুঝি না। তবে তাদের লংমার্চ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে এটা আমি দেখেছি।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024