স্বদেশ জুড়ে ডেস্ক: দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান অনশন ভেঙ্গেছেন। মাহমুদুর রহমানকে অনশন ভাঙার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফী। এরপর সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা দিকে তিনি অনশন ভাঙ্গেন বলে জানা গেছে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি ও পত্রিকাটির প্রেস খুলে দেয়ার দাবিতে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে এ চিঠি পাঠ করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ। চিঠিতে মাহমুদুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে আল্লামা শফী বলেন, সরকার আপনাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। আপনার পত্রিকা অফিস বন্ধ করে দিয়েছে। আপনি পত্রিকা চালু, গ্রেফতারকৃত ১৯ জনকে মুক্তি ও আপনার মায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে যে অনশন শুরু করেছেন এটা অন্যায় ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে।
বাহকের মাধ্যমে প্রেরিত চিঠিতে অনশন ভাঙার অনুরোধ জানিয়ে মহমুদুর রহমানের উদ্দেশ্যে প্রবীণ এই আলেম লিখেছেন, আপনি যে আন্দোলন শুরু করেছেন তা এদেশের কোটি কোটি তৌহিদী জনতার আন্দোলন। দেশ ও ঈমানের স্বার্থে আপনাকে এদেশের তৌহিদী মানুষের খুবই প্রয়োজন। একই সঙ্গে আল্লামা শফী মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সরকারের সঙ্গে দৈনিক আমার দেশের বিরোধ চলে এলেও আমরা মনে করি সম্প্রতি নাস্তিক ব্লগারদের মুখোশ উম্মোচন করায় মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আপনি নাস্তিক ব্লগারদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবন্ধ করেছেন। এখন আপনি জেলে থেকে এই সরকারের অন্যায়ের প্রতিবাদ করছেন। এর জন্যে আল্লাহ অবশ্যই আপনাকে পুরস্কৃত করবেন। আল্লামা শফী বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই আপনাকে গ্রেফতারে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। আবারো এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আপনি এই অনশনের মাধ্যমে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। আপনার এই প্রতিবাদ ইতিহাস হয়ে থাকবে।
প্রসঙ্গত, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে ১১ এপ্রিল তার পত্রিকা অফিস আমার দেশ কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর ১৫ এপ্রিল থেকে পুলিশ রিমান্ডে থাকা অবস্থায় তিন দফা দাবিতে তিনি আমরণ অনশন করে আসছেন। এর আগে মাহমুদুর রহমান তার মা মাহমুদা বেগম ও স্ত্রী ফিরোজা আক্তারের এবং প্রবীন আইনজীবি রফিকুল-উল-হক এর অনুরোধ সত্ত্বেও অনশন ভঙ্গ করেননি। শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হওয়ায় সরকার তার চিকিৎসার জন্য নয় সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে। তার শরীরে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়। অবস্থা এতটাই নাজুক হওয়া সত্ত্বেও তিনি অনড় ছিলেন দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন ভঙ্গ করবেন না।
Leave a Reply