স্বদেশ জুড়ে ডেস্ক: মঙ্গলবার সেগুনবাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে নাগরিক সংহতি আয়োজিত ‘অগ্নিকাণ্ড-ভূমিকম্প ও ভবনধস পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতা: বাংলাদেশের প্রস্তুতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় ভূমিকম্প ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, নির্দিষ্ট একটি কারণ নয়, সাভারের রানা প্লাজা ধসের পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার দৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো, ৮ থেকে ৯ তলা বিল্ডিংয়ের কলাম নিয়মানুযায়ী ১২ ইঞ্চি হবার কথা থাকলেও রানা প্লাজায় এই কলাম ৪ ইঞ্চি কমে ৮ ইঞ্চি করে তৈরি করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, প্রথমে ভবনের পেছনের অংশটি ধসে পড়ে, তারপর সামনের অংশ। পেছনের অংশে ভরাট করা মাটি নরম থাকা। ওই মাটিকে শক্ত ও পরিণত হবার সময় না দেওয়া। ৫ তলার অনুমোদনপ্রাপ্ত ভবনটি শুরুতে ২০০৪ সালে ৪ তলা পর্যন্ত থাকলেও পরবর্তীতে আরো ৫ তলা বাড়িয়ে ভবনটিকে ৯ তলায় উন্নীত করা। রানা প্লাজায় নিম্নমানের রড, ইট ও সিমেন্ট ব্যবহার করা এবং ভবন নির্মাণে বালু ও সিমেন্টের পরিমাণে অপর্যাপ্ততা। বিধ্বস্ত রানা প্লাজা পরিদর্শন শেষে ভবন ধসের কারণ হিসেবে এ বিষয়গুলোকে চিহ্নিত করেছেন বলে জানান তিনি।
এই বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবনগুলো ভেঙে ফেলতে হবে। এছাড়া ফায়ার বিগ্রেড ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগে প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগসহ আধুনিক প্রশিক্ষণ, যানবাহন, যন্ত্রপাতি/সরঞ্জাম ইত্যাদির জন্য পর্যাপ্ত অর্থের বরাদ্দ দিতে হবে। ঢাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে লক্ষাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়বে। এ জন্য আগেই ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবনগুলো চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক সংহতির সভাপতি ড. এ এস এম আতিকুর রহমান বলেন, “ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই তাৎক্ষণিক উত্তেজনায় আমরা বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানাই। বলি এটা করলে ভালো হতো, ওটা করলে ভালো হতো, কিন্তু দুর্ঘটনা না হওয়ার জন্য আগেই কী করলে ভালো হয় তার প্রস্তুতি নিতে হবে। স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যদি বিপর্যয় মোকাবেলার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় তবে অগ্নিকাণ্ড-ভূমিকম্প ও ভবনধসের ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ অনেকাংশে কম হবে। সাভার অভিযানে স্বেচ্ছাসেবকরা জীবন বাজি রেখে প্রায় দুই হাজার ৫০০ জনকে উদ্ধার করেছে, যা ইতিহাসে বিরল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
Leave a Reply