সৈয়দা রুমি আহমেদ: খেয়াল করে দেখবেন, শরীর খারাপের লক্ষণ গুলোর পেছনে কিন্তু কারণ সেই একই- গরম। তাপে শরীরের প্রয়োজনীয় পানি বের হয়ে যায় ঘাম হিসাবে, আর সেই পানির সাথে বের হয়ে যায় প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান সমূহ। ফলে নানান রকম শারীরিক অসুবিধা দেখা দিতে শুরু করে, ক্লান্তি ছেঁকে ধরে। এবং কেবল মাত্র পানি পান করে এই সমস্যাগুলো দূর করা সম্ভব নয়। গরমে সুস্থ থাকতে প্রয়োজন তাই বিশেষ পানীয়।
গরম লাগছে, গলা শুকিয়ে যাচ্ছে বারবার। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আমরা বেশিরভাগ মানুষ ঠাণ্ডা কোমল পানীয়ের দিকে ঝুঁকি। এটা একেবারেই করবেন না। ঠাণ্ডা সফট ড্রিঙ্ক হয়তো কয়েক মুহূর্তের জন্য আপনাকে আরাম দিচ্ছে, কিন্তু লক্ষ্য করে দেখবেন যে তাতে কিন্তু আপনার তেষ্টা মিটছে না। যত লিটার কোমল পানীয়ই পান করুন না কেন, গলা শুকানো ভাবটা থাকবেই। কারণ আপনার শরীরের প্রয়োজন পানি, কৃত্রিম পানীয় নয়।
বসন্ত এখনও ফুরায়নি, কিন্তু সকাল থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছে রোদের তেজ, আর দুপুর হতে হতে গরমে রিতীমতন হাঁসফাঁস লাগতে শুরু করে। বাইরে কোনও কাজে ব্যস্ত থাকলে, কিংবা বাসায় থাকা হলেও দেখবেন যে অনেকেরই কেমন মাথা ঘুরায়, ঝিম ঝিম লাগে, বমি ভাব হয়। দুপুরের পর থেকেই খুব ক্লান্ত, শ্রান্ত, অবসন্ন লাগে। কাজে মন তো বসেই না, উলটো ভীষণ শরীর খারাপ লাগে। দুর্বল লাগে।
সাধারণ পানি তো খাবেন অবশ্যই। তবে কেবল সাধারণ পানিতে পূরণ হবে না শরীরের ঘাটতি। চাই বাড়তি কিছু, এমন কিছু যাতে প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান মিলবে। যেমন- ডাবের পানি। ডাবের পানিতে পটাশিয়ামসহ আরও নানান প্রয়োজনীয় উপাদান আছে বিধায় তাতে আপনার দুর্বল বা ঝিম ঝিম লাগার ভাবটা একেবারেই কমে যাবে। পয়সা খরচ করে সফট ড্রিঙ্ক খাবার চাইতে ডাবের পানি খান।
লেবুর শরবত হতে পারে খুব ভালো একটি গ্রীষ্ম পানীয়। গুনে ভরা লেবুর সাথে চিনি আর পানি মিশিয়ে তৈরি করে ফেলুন চমৎকার সরবত। সোডিয়ামের অভাব মেটাতে দিতে পারেন এক চিমটি লবণও। গহ্বরে তৈরি লেমনেডও চমৎকার লাগবে। জুস খেতে পারেন, তবে কেনা নয়। তরমুজ খান। তরমুজে থাকে প্রচুর পানি, যা কিনা শরীরের আদ্রতার ঘাটতি পূরণ করবে। তরমুজের জুস এই গরমে খুব ভালো লাগবে, বানাতেও সহজ। জুস হিসাবে খান বা এমনি- তরমুজ খাওয়া এই গরমে অবশ্যই জরুরি। খেয়াল রাখবেন, খুব বেশি ঠাণ্ডা পানীয় খাবেন না। রাতের বেলা, কিংবা সন্ধ্যায় লেবুর সরবত, ডাব ইত্যাদি খাবেন না। এসিডিটি, পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
যাদের অল্প রক্তচাপের সমস্যা, কিংবা যাদের বেশি রক্তচাপের সমস্যা নেই তারা খেতে পারেন ওরস্যালাইন। এতে আছে খনিজ লবণের প্রয়োজন মেটাবার মতন সকল উপাদান। দিনে একটি স্যালাইন আপনাকে তরতাজা ও সুস্থ থাকতে সহায়তা করবে। বাড়তি ওজনের সমস্যা না থাকলে খেতে পারেন গ্লুকোজ। সুস্থ থাকুন এই গরমে। খাবার- পানীয় গ্রহণ করুন বুঝেশুনে। একটু বুদ্ধি করে চললেই দেখবেন কেমন তরতাজা থাকছেন আপনি গ্রীষ্মের দাবদাহেও।
Leave a Reply