প্রবাসীদের জন্য নির্মাণাধীন হাউজিং কমপ্লেক্সের ফ্ল্যাটের দাম বাড়াতে সংসদীয় কমিটির সুপারিশের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বিরোধী দলীয় সদস্য জাফরুল ইসলাম চৌধুরী।
কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হয়। গতকাল সংসদ সচিবালয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ ঘটনা ঘটে। কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে গুলশান ভাটারায় (নর্থ বারিধারা) প্রবাসীদের জন্য নির্মাণাধীন ফ্ল্যাটের প্রতিবর্গ ফুটের দাম বাড়ানোর পক্ষে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ মত দেন। এ সময় তিনি বলেন, প্রবাসীদের ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য যে জমি কেনা হয়েছিল তার দাম বর্তমানে অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে জমির দাম ও ফ্ল্যাটের মূল্যের সমন্বয় করা প্রয়োজন। এ বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে ফ্ল্যাট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু এখন দাম বাড়ানো হলে প্রবাসীদের অসুবিধা হবে। এছাড়া সংসদীয় সাব-কমিটি প্রতি বর্গফুটের দাম ৩ হাজার ৭৫০ টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করে। এখন এর চেয়ে বেশি দাম নির্ধারণ করা হলে সাব-কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করা হবে। তিনি আরও বলেন, ফ্ল্যাটের দাম বাড়ালে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান আর্থিক সুবিধা পাবে। এদিকে জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর বক্তব্যের পর কমিটির সভাপতি বলেন, সংসদীয় সাব-কমিটির সুপারিশ স্থায়ী কমিটির চাইলে পরিবর্তন করতে পারে। বিরোধিতার মধ্যেই বৈঠকে ফ্ল্যাটগুলোর নতুন মূল্য নির্ধারণের সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রবাসীদের ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে বোরাক রিয়েল এস্টেট লিমিটেড ও ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড কার্যাদেশ পায়। ২০০৪ সালে এ প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এর মধ্যে বোরাক রিয়েল এস্টেটকে তিন দফায় ৪ কোটি ৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ও ইস্টার্ন হাউজিংকে ৯৭ লাখ ২৭ হাজার টাকা রানিং বিল দেয়া হয়েছে। নির্মাণকাজ চলার সময়ে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে এ দুটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের দাম বাড়ানোর আবেদন করে। এর পর থেকেই প্রকল্পের নির্মাণকাজের গতি কমতে থাকে। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. মোজাম্মেল হক স্বাক্ষরিত কার্যপত্র থেকে আরও জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১৮ই ডিসেম্বর নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান দুটি ড. কামাল হোসাইন অ্যান্ড এসোসিয়েটস-এর মাধ্যমে সালিশের নোটিশ দেয়। পরে এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালে শুনানি শেষ হলেও এখনও রায় দেয়া হয়নি।
১২ লাখ জনশক্তি বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা: এদিকে সংসদ সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বৈঠকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের ১৫৫টি দেশে জনশক্তি রপ্তানি করা হচ্ছে। আগামী দুই বছরে বাংলাদেশ হতে ১২ লাখ জনশক্তি বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে যাদের মধ্যে কমপক্ষে ৬০ হাজার নারী কর্মী থাকবেন। এছাড়া জনশক্তি বিষয়ে কর্মযজ্ঞ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের প্রয়োজনে এ সম্পর্কিত একটি আলাদা ক্যাডার সার্ভিস অথবা বিভাগ সৃষ্টির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য ও মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, এবিএম আবুল কাসেম, মো. শাহাব উদ্দিন, এ এ মারুফ সাকলান, মোশতাক আহমেদ রুহী ও শাহিদা তারেখ দীপ্তি অংশ নেন।
Leave a Reply