দুনিয়া জুড়ে: পাকিস্থানের জাতীয় সাধারণ নির্বাচনে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) জয়লাভ করেছে। সরকারীভাবে এ ফলাফল প্রকাশিত না হলেও বেসরকারিভাবে এ ফল প্রকাশের আগেই এ নির্বাচনে নওয়াজ শরীফ তার বিজয় ঘোষণা করেছেন। দেশ পরিচালনা করতে অন্যান্য দলকে তার সাথে একত্রে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।
তৃতীয়বারের মতো বিজয় পাওয়া নওয়াজে শরীফের সমর্থকদের নানা স্লোগানে আনন্দ উল্লাস করতে দেখা গেছে। বিরোধীদলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি সকলকে একই টেবিলে বসার জন্য অনুরোধ জানাই। যাতে করে দেশের সমস্যা সমাধান করা যায়। শনিবার রাতে লাহোরের দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিপুলসংখ্যক সমর্থকদের উদেদেশে দেওয়া বক্তৃতায় এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আমরা আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাই তিনি পিএমএল-এনকে আবারও পাকিস্তানকে ও আপনাদেরকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন।
দেশের ১৪তম সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মূল দলগুলো হলো পাকিস্তান পিপল’স পার্টি (পিপিপি), পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন), মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম), পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি), মুত্তাহিদ মজলিস-ই-আলাম (এমএমএ) ও জামায়াতে ইসলামী। শনিবার রাত ৮টার দিকে পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, ২৭২টি আসনের ৫০টিরও বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ ইমরান খান। এদিকে, আংশিক গণনায় দেখা গেছে, দুইবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সবার চেয়ে বেশি আসন পেয়েছে। তবে ইমরানের দলের কাছে পাঞ্চাব প্রদেশে ১৫টি আসন হারিয়েছে পিএমএল-এন। পুরোপুরি ভোট গণনা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
কোনো দল বা জোটকে এককভাবে ক্ষমতায় যেতে হলে ৩৪২ আসন বিশিষ্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি অব পাকিস্তানের কমপক্ষে ১৭২টি আসন পেতে হবে। আর ১৭২টি আসন পেতে ব্যর্থ হলে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট গঠিত হবে। শনিবার করাচির ৭টি আসন বাদে পাকিস্তানের ১৪তম সাধারণ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টায়। বিকেল ৫টার মধ্যে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ভোট গ্রহণ কেন্দ্রগুলোতে দীর্ঘ লাইন থাকায় দেশজুড়ে ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ায় নির্বাচন কমিশন। করাচির ৭টি আসনে স্থানীয় সময় রাত ৮ পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। নির্বাচন চলাকালে বিভিন্ন সহিংসতা বোমা হামলাসহ বিভিন্নস্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে জালিয়াতি আর কারচুপির অভিযোগ তুলেছে। বিভিন্ন স্থানে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো ভোট কারচুপি, জালিয়াতের অভিযোগ তুলেছে।
প্রসঙ্গত: প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নওয়াজ শরীফ এর আগে আরো বার দায়িত্ব পালন করলেও পূর্ণ মেয়াদ ক্ষমতায় থাকতে পারেন নি। প্রথমবারের (১৯৯০-৯৩ইং সময়কাল) মেয়াদকালে দুর্নীতির কারণে তিনি বরখাস্ত হন। ২য়বার ক্ষমতাবস্থায় (১৯৯৭-৯৯ইং মেয়াদকাল) তিনি জেনারেল পারভেজ মোশাররফের সামরিক অভ্যুথ্থানে মুখে ক্ষমতাচ্যূত হতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে পারভেজ মোশাররফ ক্ষমতাসীন হোন। বর্তমানে পারভেজ মোশাররফ আদালতের রায়ে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ হয়ে গৃহবন্ধী আছেন।
Leave a Reply