স্বদেশ জুড়ে ডেস্ক: বিরোধীদের মোকাবেলায় রাজনৈতিক কৌশলের প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ও পরিবর্ধন সাধন করে আগামী নির্বাচন ও চলমান সংকটময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভেবেচিন্তে খুবই সর্তকভাবে পদক্ষেপ নিয়ে পথ চলছে ক্ষমতাসীন ১৪ দল মহাজোট।
বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠনকে দিয়ে সভা-সমাবেশ ও কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ময়দানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ভোটের মাঠেও আধিপত্য বিস্তার করতে চায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। এজন্য ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সেক্টরস কমান্ডার্স ফোরাম ও বিভিন্ন ওলামা-মাশায়েখ সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করছে তারা। এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে বলে জানা গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজত, জামায়াত-বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে মনে করছে ক্ষমতাসীন ১৪ দল। আগামীতে যেন তারা আবার সংগঠিত হয়ে আন্দোলনের মাঠে ঘুরে দাঁড়াতে না পারে সে জন্য প্রতিটি বিরোধী শক্তি উপর তীক্ষ্ম নজর রাখছে তারা। একই সঙ্গে ভোটের মাঠে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্যও নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন কার্যক্রম।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি রাজপথে আন্দোলন করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পারবে না বলে মনে করে ১৪ দল নেতারা। তারা মনে করেন বিশেষ সুবিধা নিতে জামায়াত-শিবির বিভিন্ন সময় রাজপথে থেকে ১৮ দলীয় জোটের কর্মসূচিকে সফল করার চেষ্টা করছে। বিএনপির নিজস্ব সাংগঠনিক শক্তি অত্যন্ত দুর্বল। তবে ভোটের মাঠে এন্টি আওয়ামী লীগের ভোট ও ভাসমান ভোট রয়েছে বিএনপির। একই সঙ্গে আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে বিএনপির প্রভাব রয়েছে। এসব বিষয়কে বিবেচনা করে রাজপথে মোকাবেলার চেয়ে জনগণ ও বাইরের শক্তিগুলোর কাছে বিএনপির বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ড তুলে ধরবে সরকার। এর মাধ্যমে জনসমর্থনের মাঠে কোণঠাসা করার পাশাপাশি আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে বিএনপির প্রভাব ও সমর্থন নিজেদের কোর্টে নিতে চায় আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল নেতারা মনে করেন, বিএনপিকে বার বার সংকট নিরসনে সংলাপের আহ্বান জানাচ্ছেন তারা কারণ বিএনপি সংলাপে আসলে চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হয়। আর না আসলেও বিএনপি যতই সংলাপ থেকে দূরে সরে যাবে ততই আওয়ামী লীগের জন্য লাভ। এজন্য ১৪ দল জনগণ ও বিদেশি শক্তিগুলোর কাছে প্রমাণ করতে পারবে সরকার সংলাপ চায়। কিন্তু বিএনপি শান্তির বদলে জামায়াত-শিবিরকে দিয়ে নৈরাজ্য ও সহিংসতা করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চায়।
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত নেতাদের মুক্ত করতে মরিয়া জামায়াত-শিবিরের দিকেই সবচেয়ে বেশি মনোযোগ ক্ষমতাসীন ১৪ দলের। নেতাদের মুক্ত করতে বেপোরোয়া জামায়াত-শিবির যে কোন মুহূর্তে ফুঁসে উঠতে পারে বলে মনে করছেন ১৪ দলের নেতারা। ১৪ দল মনে করছে, টানা আন্দোলন করার মাধ্যমে জামায়াত-শিবির ক্লান্ত। এসব আন্দোলন করতে গিয়ে তাদের প্রচুর শক্তি ক্ষয় হয়েছে। জামায়াত-শিবির মোকাবেলা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে হার্ডলাইনে রাখার পাশাপাশি তাদের কর্মকাণ্ড ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে জনমত তৈরির কার্যক্রমকেও আরো জোরদার করছে ১৪ দল। ১৪ দলীয় সূত্রে জানা গেছে , জামায়াত-শিবিরকে কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে। বিশেষ করে জামায়াত যাতে হেফাজতে ইসলামকে আবারো সরকার বিরোধী আন্দোলনে চাঙ্গা করতে না পারে এজন্য তাদের তৎপরতার দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখছে সরকার। আগামীতে সহিংসতা সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিলেই আবারো সাঁড়াশি অভিযানে নামবে প্রশাসন। এভাবে বিরোধীদের দমিয়ে রাখবে ১৪ দল মহাজোট।
Leave a Reply